সংক্ষিপ্ত
দশম শ্রেনীর ছাত্রী অঙ্কিতাকে কুপিয়ে খুন প্রতিবেশী যুবক স্বপন বিশ্বাসের। খুনের পর স্নান সেরে দা পরিস্কার করে সে।
হারিয়ে গেল ছেলেবেলা। ইতি পড়ল স্কুলজীবনে(Schoollife)। ভাগ্যের পরিহাসে কখন যে স্কুলজীবনের হাসি ঠাট্টাগুলো পবিত্র শ্মশানের চুল্লিতে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পুঁড়ে ছাই হয়ে যায় তা সত্যিই বোঝা দায়। সেই রকমই একটি ঘটনার সাক্ষী রইল ফালাকাটার খালসামারি (Falakata)এলাকা। বুধবার সকালে দশম শ্রেনীর ছাত্রী(Class 10 Student) অঙ্কিতা শীল(Ankita shel) ঠিক এভাবেই অকালে হারিয়ে গেল। স্বপন নামে এক যুবক দা দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে অঙ্কিতাকে(Murdered By Chopper)। ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় সকাল ১০ টা। স্কুলে যাওয়ার জন্য স্নান-খাওয়া সেরে তৈরি অঙ্কিতা। সেই সঙ্গে তৈরি হচ্ছিল তার ছোট বোনটিও। আচমকাই অঙ্কিতার উপর সেই আততায়ী স্বপনের হানা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় একের পর এক কোপ হত্যাকারীর। বুধবার(Wednesday) সকালে ফালাকাটার খলিসামারি এলাকায় দশম শ্রেণির ছাত্রী এমন ভাবে খুন হতে দেখে ফেলে তার ছোট বোন নিতু। সেই বীভৎস দৃশ্যের ঘোর এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি সেই বাচ্চা মেয়েটি। অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ও অঙ্কিতার বোন নীতু জানিয়েছে, বুধবার সকালে টিউশন থেকে বাড়ি ফিরেছিল দিদি। বাড়ি এসে স্কুলে যাওয়ার কথাবার্তাও হয় দুই বোনের মধ্যে। এর পর অঙ্কিতা(Ankita) স্নান সেরে তৈরি হয়ে যায় স্কুল যাওয়ার জন্য। আচমকাই দিদির চিৎকার শুনতে পায় নীতু। সে দৌড়ে গিয়ে দেখে মাটিতে একেবারে লুটিয়ে পড়েছে অঙ্কিতা। তার মুখটা গামছা গিয়ে বাঁধা। আর সামনে সেই স্বপন বিশ্বাস(Swapan Biswas) । হাতে তাঁর ধারালো দা(Chopper)। বোনের সামনেই দিদির ঘাড়ে পাঁচ-ছ টা কোপ দিতে একফোঁটাও হাত কাঁপেনি স্বপনের(Swapan)। শুধু তাই নয়, বোন নীতুকেও খুনের হুমকি দেয় স্বপন। নীতুর(Nitu) দিকেও নিশানা করে দা ছুড়েছিল স্বপন। কিন্তু সে যাত্রায় বেঁচে যায় অষ্টম শ্রেনীর পড়ুয়া নীতু শীল। ভয় পেয়ে সে ওখান থেকে পালিয়ে যায়। কিন্তু পিছন থেকে সে দেখতে পায় যে স্বপন সাবান মেখে স্নান করে(Took His Bath) দা-টা ধুয়ে পরিস্কার করে ফেলল(clean Chopper)।
বুধবারের এই মর্মান্তিক ঘটনাটা কখনও ভুলতে পারবে না ফালাকাটার খলিসামারি। অঙ্কিতার বাবা-মা দুই জনই দিনমজুর। দুই বোন এবং এক ভাই নিয়ে মোট পাঁচ জনের সংসার। কোনওক্রমে দিন চলে পরিবারের। নিহত ছাত্রীর বাবা গোপাল শীলের মতে,স্বপন তাঁর মেয়েকে সব সময় উত্ত্যক্ত করত। ওকে অশ্লীল ইঙ্গিতও করেছে কয়েক বার। ও এ সব এড়িয়ে যেত। মেয়ে বেশ কয়েকবার সেই কথা বাড়িতে জানিয়েছিল। তারপর স্বপনের বাবা-মাকে বিষয়টি জানানোও হয়। তাতে মাসখানেক ও কিছুটা শান্ত ছিল স্বপন। কিন্তু বুধবার শেষ রক্ষা হল না। স্বপনের কুরুচির বলি হতে হল অঙ্কিতাকে। প্রতিবেশিদের থেকে খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় উঠোনে পড়ে রয়েছে তাঁর বড় মেয়ে অঙ্কিতা।
আরও পড়ুন-Malda Murder Case: ভাইয়ের হাতে ভাই খুন মালদহে, কারণ জানতে তদন্তে পুলিশ
আরও পড়ুন-Murder Case: হঠাৎ আত্মসমর্পণ সোমনাথের, ঘুরে গেল ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডল খুনের তদন্তের মোড়
পড়াশোনায় মেধাবী হিসাবে সুনাম ছিল অঙ্কিতার। তার এমন পরিণতি হবে ভেবে এমনটা কখনও ভাবেনি শীল পরিবার। অঙ্কিতার অকাল মৃত্যুতে শোকাহত স্থানীয় বাসিন্দারাও। অঙ্কিতা বরাবরই পড়াশোনায় ভাল ছিল বলে জানিয়েছে প্রতিবেশীরা। অঙ্কিতা যে স্কুলের ছাত্রী সেই পারেঙ্গার পাড় শিশুশিক্ষা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রবীর রায়চৌধুরী বলছেন, স্কুল স্বাভাবিক থাকাকালীন অঙ্কিতা নিয়মিত স্কুলে যেত। এমনকি করোনাকালেও নিয়মিত অনলাইন ক্লাস করত সে। অঙ্কিতার হত্যাকাণ্ডে রীতিমতো ফুঁসছে খলিসামারি। অভিযুক্ত স্বপনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে গোটা গ্রাম।