সংক্ষিপ্ত

  • লোনের জন্য এবার কাটমানি দিতে হচ্ছে
  • অভিযোগ উঠছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের এক ম্যানেজারের বিরুদ্ধে
  • বাসিন্দাদের অভিযোগ ওই ব্যাংকের পরিষেবা আগে ভালো ছিল
  • নতুন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আসার পর কাজে গতি হারিয়েছে

লোন পেতে গেলে দিতে হবে কাটমানি। এবার কাটমানি লোনের জন্যেও। কাটমানি শব্দটি সাধারণত রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে লোনের জন্য এবার কাটমানি দিতে হচ্ছে, এমনটাই অভিযোগ উঠছে মালদহের তুলসিহাটার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের এক ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ ওই ব্যাংকের পরিষেবা আগে ভালো ছিল। কিন্তু নতুন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার যোগদান করার পরই ব্যাংকের সমস্ত কাজই ঢিলেমি হচ্ছে। এমনকি গ্রাহকদের লোন পেতে চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। 

আরও পড়ুন- তৃণমূল বিরোধিতা কোন পথে, আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলোচনায় শুভেন্দু অধিকারী

গ্রাহকদের অভিযোগ ওই ম্যানেজারের দাবি করছেন লোন নিতে গেলে লাগবে কমিশন। ন্যূনতম ১০ শতাংশ কমিশন দিলেই তবে লোন পাস হবে। তার উপরে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে খুশি করতে বহুমূল্য ইন্সুরেন্স কিনতে হবে তারই মাধ্যমে। এলাকার অনেক গ্রাহকদের অভিযোগ কাগজপত্র ঠিক থাকলেও ব্রাঞ্চ ম্যানেজার নানা অজুহাতে লোন দিচ্ছেন না। গাড়ি কেনা থেকে শুরু করে বাড়ি তৈরি সব কিছুতেই লোন নিতে গেলে তিনি চেয়েছেন কমিশন। 

বাধ্য হয়েই গ্রাহকেরা অভিযোগ জানিয়েছে ব্যাংকের উচ্চতম আধিকারিকদের কাছে। যদিও কোনরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে খবর। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্যাংক ম্যানেজার। কাগজপত্র না থাকায় দেওয়া হয়নি লোন বলে দাবি করেছেন তিনি। ব্যাংক ম্যানেজার সঞ্জয় কুমার সিং  জানাচ্ছেন এই সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। যাদের কাগজপত্র সঠিক নেই তারা লোন পাচ্ছে না। লোন নিতে গেলে কাগজপত্র সঠিক লাগে, তারা কাগজপত্র সঠিক দিতে পারেনি যদিও লোন অনুমোদন করার আমি কেউ না, সব কিছুর একটা সঠিক নিয়ম থাকে। সেই নিয়ম অনুযায়ী লোন স্যাংশন হয়। আমি কারোর কাছে লোনের জন্য কোন টাকা চাইনি।

তবে গ্রাহকদের দাবি  ১০ লক্ষ টাকা লোন নিলে দিতে হবে ১০ শতাংশ ঘুষ। ঘুষ চাইছেন স্বয়ং ব্যাংক ম্যানেজার। এই নিয়ে তুলসিহাটা এলাকার গ্রাহকেরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলছে। দেখা যায় লোন অনুমোদন করার জন্য এরকম অনেকের কাছে টাকা চেয়েছেন ব্যাংক ম্যানেজার। এছাড়াও ব্যাংকের পরিষেবা নিয়ে প্রত্যেক বছর কাস্টমার মিট হয়। এই ম্যানেজার আসার পর সেই মিট হচ্ছে না, এই অভিযোগও তুলেছেন গ্রাহকেরা। 

আরও পড়ুন - মাথা ঠুকে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে মারণ লড়াই, সঙ্গিনী দখল করতে মরিয়া দুই দাঁতাল

বিপ্লব গুপ্তা নামে এক গ্রাহক যিনি টাকা দিয়ে লোন পেয়েছিলেন এক বছর আগে। তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে অভিযোগ করেন," এক বছর আগে আমার লোনের দরকার পড়ে। কাগজপত্র সব ঠিক ছিল। কিন্তু টাকা না দিলে লোন পাওয়া যাবে না। ম্যানেজার নিজে আমার কাছে লোনের ১০ শতাংশ ঘুষ চায়। আমার লোনের দরকার তাই বাধ্য হয়ে দিতে হয়েছিল। অভিযোগ জানানোর জায়গা পাচ্ছিলাম না। কাস্টমার মিট ও হয়নি। আর যখন শুনলাম অনেকের সঙ্গে এরকম হচ্ছে। তাই মুখ খুললাম।"

অভিজিৎ গুপ্তা অভিযোগ করে বলেন," তিন বছর আগে আগের ম্যানেজার আমার ১০ লাখ টাকার লোন অনুমোদন করে দিয়েছিল। কিন্তু তারপর এই ম্যানেজার আসার পর আমি ১০০ বার ব্যাংকে গিয়েও লোনের কাজ হয়নি। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়েছে। আমি তো প্রত্যেক বছর রিটার্ন ফাইল করি। আমার কাগজপত্র ক্লিয়ার রয়েছে। এখন যেহেতু আমরা অভিযোগ করেছি তাই উনি এসব সাফাই দিচ্ছেন। উনি ১০ লক্ষ টাকা লোনের জন্য আমার কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন। আমি দিইনি তাই লোন হয়নি।"