সংক্ষিপ্ত
- নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে নিজেই সিলমোহর দিলেন দিলীপ ঘোষ
- জনসভায় বললেন, "বিভাজনের রাজনীতি করি বেশ করি"
- বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের এক জনসভায় তিনি এই বক্তব্য় রাখেন
- বিজেপির রাজ্য সভাপতির এই বক্তব্যকে ঘিরে প্রবল বিতর্ক নেটদুনিয়ায়
এবার আর কোনও রাখঢাক নয়। একেবারে সরাসরিই তাঁর বিরুদ্ধে মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে বিজেপির রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষ বললেন, "হিন্দু-মুসলমান ভাগ করেছি বেশ করেছি. তোর বাপের কী রে?"
বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের এক জনসভায় দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। যেথানে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক কার্যত মেরুকরণের রাজনীতিকেই উস্কে দিয়েছেন এনআরসি-সিএএ ইস্যুতে। বিজেপির বিরুদ্ধে এতদিন অভিযোগ ছিল, তারা হিন্দু-মুসলমান ভাগ করে মেরুকরণের রাজনীতিকে উস্কে দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সেই অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়ে এক জনসভায় বলেন, "হিন্দু-মুসলমান ভাগ করছি বেশ করছি, তোর বাপের কী রে? ক্ষমতা থাকলে আটকা।"
বৃহস্পতিবার, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে ঝাড়গ্রামের পাঁচমাথা মোড়ে এক জনসভায় দিলীপ ঘোষ প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, "এই আইন পাশ করার পর সীমান্ত দিয়ে অনেকেই বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে পালাতে চাইছে। ওরা বুঝে গিয়েছে, এখানে থাকলে ওদের জেলে পোরা হবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে ওদের আটকাতে চাইছেন। তবে আমরা এখানে কোনও বিদেশীকে লুঠ করে খেতে দেব না।" সেইসঙ্গে দিলীপবাবুর অমায়িক সংযোজন, "যাঁরা অত্যচারিত হয়ে বাধ্য হয়ে এদেশে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেব।"
এদিকে দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। প্রশ্ন উঠেছে, একজন জনপ্রতিনিধি কীভাবে এই ভাষায় কথা বলেন। এর পাল্টা কেউ কেউ মনে করিয়ে দিয়েছেন, জনসভায় প্রতিপক্ষকে তুই-তোকারি করে আক্রমণে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কিছু কম যান না। ওই জনসভায় দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন তুলেছেন, "ধর্মের ভিত্তিতেই দেশভাগ হয়েছে, কোটি-কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে, তখন কোথায় ছিল ওরা?" এর প্রেক্ষিতে অনেকেই বলছেন, দেশভাগের ঐতিহাসিকের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে আজকের পরিস্থিতিকে গুলিয়ে ফেলছেন দিলীপ ঘোষ।
ওই সভায় বক্তব্য রাখেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু। সেখানে হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, "যারা বিভাজনের চেষ্টা করবে তাদের হাত কেটে দেব। হিন্দু বাঙালিদের আমরা নাগরিকত্ব দেব।" সায়ন্তনবাবুর এই এই কথাকে ঘিরে কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলছেন, বিভাজন তো দিলীপ ঘোষরাই করেন, তাহলে কাদের হাত কেটে দেবেন সায়ন্তনবাবু?