সংক্ষিপ্ত
- ঝাড়গ্রামের বাঁকড়া গ্রামের ঘটনা
- দাঁতালের সামনে পড়ে যায় একটি গাড়ি
- শেষ মুহূর্তে গাড়ি থেকে নেমে রক্ষা
গাড়িতে স্ত্রী এবং ছোট ছেলেমেয়ে। এ দিকে সামনে দাঁতাল। গাড়ি পিছোতে গিয়ে নরম মোরামের রাস্তায় চাকা ফেঁসে গিয়েছে। এই অবস্থায় শেষ মুহূর্তে গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে প্রাণ বাঁচালেন চার আরোহী। আর প্রবল আক্রোশে গাড়ির উপরে তাণ্ডব চালিয়েই রণে ভঙ্গ দিল ক্ষুব্ধ দাঁতাল।
শুক্রবার দুপুরে এমনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন ঝাড়গ্রামের বাঁকড়া গ্রামের ভবেশ মাহাতো। ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পরেও আতঙ্কে থর থর করে কাঁপছিলেন তিনি। তবে তাঁর বুদ্ধিতেই প্রাণে বাঁচে গোটা পরিবার।
আরও পড়ুন- বড্ড খিদে পেয়েছে, সোজা রেশন ডিলারের বাড়িতে দাঁতাল
এ দিন সকালে ঘটনাটি ঘটে ঝাড়্গ্রাম জেলার জমবানি ব্লকের চিচিড়া বিটের বাঁকড়া গ্রামে। কয়েক দিন আগেই বন দফতর প্রায় ছাব্বিশটি হাতির দলকে ঝাড়খন্ড সীমানায় পাঠিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু দলের হাতিগুলি বিক্ষিপ্তভাবে ঝাড়খন্ড সীমান্ত লাগোয়া বাঁকড়া, হাতিকেন্দুয়া, চাউনিশোল, মালবাঁধি, আস্তি প্রভৃতি গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ। বাঁকড়া এলাকার স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, এলাকায় বেশ বড় আকারের একটি দাঁতালকে মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছিল।
এদিন বাঁকড়া গ্রামের ভবেশ মাহাতো সকালে এলাকায় একবার ঘুরে এলেও হাতির দেখা পাননি। কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়েই ভবেশ বাবু তার স্ত্রী, এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে একটি মারুতি ভ্যানে গ্রামের রাস্তা ধরে জগন্নাথপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। গাড়ি চালিয়ে এবং সামান্য চাষবাস করেই তাঁর দিন চলে। এ দিন ভবেশ বাবু স্ত্রীকে বারিপাদা নিয়ে যাচ্ছিলেন ডাক্তার দেখাতে। কথা ছিল জগন্নাথপুরের কাছে বড় রস্তায় গিয়ে তাঁরা বাস ধরবেন। কিন্তু গ্রাম থেকে বেরিয়ে কিছুটা যাওয়ার পরই ভবেশবাবুদের গাড়িটি একটি হাতির সামনে পড়ে যায়।
গ্রামের সরু রাস্তায় গাড়ি ঘোরানোর সুযোগ পাননি ভবেশবাবু। হাতিটিও গাড়িটির দিকে দ্রুত গতিতে আসতে শুরু করে। দ্রুত গাড়ি পিছোতে যান তিনি। কিন্তু বর্ষা হওয়ায় মাটির নরম রাস্তার কাদায় গাড়ির চাকা আটকে যায়। ততক্ষণে ক্ষিপ্ত দাঁতালও গাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছে।
ভবেশবাবু বলেন, 'আমি গাড়িটিকে পিছন দিকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু গাড়ি ফেঁসে গেল। দেখি দাঁতালটা ছুটে একেবারে কাছে চলে এসেছে। গাড়ি থামিয়ে ডান দিকের দরজা খুলে স্ত্রী, ছেলেমেয়েদের নামিয়ে জঙ্গলে ছুটে গিয়ে লুকোই। হাতিটি এসে আমার গাড়ির দরজা ধাক্কা দিয়ে দিয়ে ভেঙে দেয়। আমি প্রাণ ভয়ে চিৎকার করলে গ্রামের লোকেরা জুটে যায়। সবাই মিলে হাতিটিকে তাড়ায়।'
এলাকার মানুষের অভিযোগ, দাঁতাল এই হাতিটি খুবই আক্রমণাত্মক। মানুষ, গাড়ি দেখলেই তাড়া করছে। এ দিন স্থানীয় বাসিন্দারা তাড়াতে এলে তাঁদেরকেও হাতিটি তাড়া করে বলে অভিযোগ।