সংক্ষিপ্ত

  • মালদহ টাউন স্টেশনের ঘটনা
  • ট্রেনের ছাদে উঠে তড়িদাহত যুবক
  • সন্তানদের খাবার কিনে দেওয়ার অর্থ ছিল না
  • হতাশায় আত্মহত্যার চেষ্টা বলে অনুমান
     

স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য। তার জেরেই ট্রেনের ছাদে উঠে হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎবাহী তার ছুঁয়ে মুহূর্তে ঝলসে গেলেন যুবক। রবিবার সন্ধ্যায় এমনই ভয়াবহ দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন মালদহ টাউন স্টেশনের যাত্রীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।

রবিবার সন্ধ্যায় মালদহ টাউন স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিল দিল্লিগামী ফরাক্কা এক্সপ্রেস। আচমকাই ট্রেনটির মাঝের দিকের একটি কামরার ছাদে এক যুবককে উঠে পড়তে দেখেন স্টেশনের যাত্রীরা। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে তাঁকে নেমে আসতে বলেন সবাই। কিন্তু কোনও কথায় কান না দিয়ে মাথার উপরে থাকা বিদ্যুৎবাহী ওভারহেড তার ছুঁয়ে ফেলেন ওই যুবক। মুহূর্তের মধ্যে তড়িদাহত হন তিনি। গোটা শরীরে আগুন ধরে যায় তাঁর। ওই অবস্থাতেই ট্রেনের ছাদে পুড়তে থাকেন বিনোদ। 

জল দিয়ে আগুন নিভিয়ে আহত যুবককে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায় রেল পুলিশ। জানা যায়, তাঁর নাম বিনোদ ভুঁইঞা। তিনি ঝাড়খণ্ডের রাঁচির বাসিন্দা। শরীরের নব্বই শতাংশই পুড়ে যায় বিনোদের। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আটচল্লিশ ঘণ্টা না গেলে তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে কিছুই বলা সম্ভব নয়। হাসপাতালের বার্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে বিনোদের। 

আরও পড়ুন- ট্রেনের ছাদে উঠে ঝলসে গেলেন যুবক, ভয়াবহ দৃশ্যের সাক্ষী মালদহ স্টেশন, দেখুন ভিডিও

খোঁজ নিয়ে রেল পুলিশ জানতে পারে, স্টেশনেই বিনোদের স্ত্রী এবং তিন সন্তানও ছিল। বিনোদের স্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা ত্রিপুরার একটি ইট ভাঁটায় কাজ করতেন। কিন্তু সেখানকার ম্যানেজার তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় দম্পতি। কিন্তু কাজ ছাড়তে চাইলে উল্টে ওই ম্যানেজার টাকা চান বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত কোনওক্রমে রাতের অন্ধকারে ইট ভাঁটা ছেড়ে পালিয়ে আসেন তাঁরা। কিন্তু কাজ ছেড়ে দেওয়ায় হাতে বিশেষ টাকা ছিল না। সামান্য যেটুকু অর্থ ছিল, ত্রিপুরা থেকে মালদহ পৌঁছতেই তা খরচ হয়ে যায়। শনিবার দুপুর থেকে মালদহ স্টেশনেই অপেক্ষা করছিল ওই পরিবারটি। রবিবার রাতে ট্রেনে মালদা থেকে রাঁচিতে যাওয়ার কথা ছিল পরিবারটির। 

বিনোদের স্ত্রী জানান, স্টেশনে আসার পরে খিদের জ্বালায় ছটফট করছিল তাঁদের তিন সন্তান। কিন্তু ওই দম্পতির কাছে খাবার কেনার পয়সা ছিল না। এ নিয়ে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে বচসা বাধে। তার পরই ট্রেনের ছাদে উঠে যান বিনোদ। তাঁর স্ত্রীর অবশ্য দাবি, মানসিক অসুস্থতাও ছিল বিনোদের।