সংক্ষিপ্ত
কংসাবতী, শিলাবতী সহ ঝুমি নদীর জল বেড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার সকালে কংসাবতীর এনিকেট পরিদর্শন করেন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর, মানস ভুঁইয়া ও সৌমেন মহাপাত্র। এছাড়া ঘাটালের বিভিন্ন এলাকাতেও যান তাঁরা।
বৃষ্টি (Rain) তেমন না হলেও পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Medinipur) বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির (Flood like situation) সৃষ্টি হয়েছে। জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে প্লাবিত (Flood) একাধিক এলাকা। ফলে কংসাবতী, শিলাবতী, সহ ঝুমি নদীর (River Water) জল বেড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার সকালে কংসাবতীর এনিকেট পরিদর্শন করেন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর, মানস ভুঁইয়া (Manas Bhunia) ও সৌমেন মহাপাত্র। এছাড়া ঘাটালের (Ghatal) বিভিন্ন এলাকাতেও যান তাঁরা।
পশ্চিম মেদিনীপুরে এই নিয়ে চতুর্থবার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে টানা বৃষ্টির জেরে নতুন করে জেলার বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। এক্ষেত্রে দুর্গতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ। শনিবার পর্যন্ত জেলায় ত্রাণ শিবির খোলা রয়েছে ১৫৭টি। যেখানে প্রায় ৮ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। মানুষকে উদ্ধার সহ খাদ্য সরবরাহের জন্য ৬২ টি নৌকা নামানো হয়েছে। যার মধ্যে ঘাটালেই রয়েছে ২৩টি।
শুক্রবার সন্ধে থেকেই জেলার সদর ব্লকের উপর দিয়ে যাওয়া কংসাবতী নদীর জল বেড়ে যায়। বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। এর ফলে নদীর পাড়ে থাকা মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন নজরগঞ্জ, পালবাড়ি, গান্ধীঘাট এলাকার বাসিন্দারা অনেকেই শুক্রবার সন্ধের পরই বাড়ি ছাড়তে শুরু করেন। নদীতে জল বেড়ে যাওয়ার ফলে ওই সব এলাকায় সন্ধের পর থেকেই জল প্রবেশ করতে শুরু করেছিল। অনেক জায়গাতেই পাড়ে ধ্বস দেখা গিয়েছে।
শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ মোহনপুরে কংসাবতী নদীর ওপরে থাকা এনিকেট বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হাজির হন মানস ভুঁইয়া ও হুমায়ুন কবীর। কংসাবতীর জল বেড়ে যাওয়ার হিসেব নিয়ে সেখানে উপস্থিত সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলেন। কংসাবতী নদীর বাঁধের পরিস্থিতির উপর নজর দেওয়ার জন্য তাঁদের হাতজোড় করে অনুরোধ করেন মানস ভুঁইয়া।
আরও পড়ুন- গা ঢাকা দিতে পালিয়ে মেঘালয়ে, গ্রেফতার বিএসএফ কনস্টেবল সহ ৩
এরপর সেখান থেকে রওনা দেন ঘাটালের দিকে। বিকেলে ঘাটাল ব্লকের অজবনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্লাবিত ঘিসড়া গ্রাম পরিদর্শন করেন মানস ভুঁইয়া। মহকুমা শাসক, ব্লকের বিডিও, মহকুমা পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে নৌকায় চড়ে অজবনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের জলবন্দি এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। সেখানেও বৈঠক করেন আধিকারিকদের সঙ্গে। অন্যদিকে, চন্দ্রকোনা এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন সৌমেন মহাপাত্র। প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। অন্যদিকে কেশপুরে ১২ নম্বর অঞ্চলে থাকা বিভিন্ন কংসাবতী নদীর পাড়গুলি ঘুরে দেখেন প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা। ত্রাণ শিবিরে থাকা বাসিন্দাদের কাছে খাদ্য সামগ্রী সঠিকভাবে পৌঁছে যাচ্ছে কি না তাও খতিয়ে দেখেন তিনি।
আরও পড়ুন- "ক্ষোভ বাড়ছে, ডিভিসি ক্ষতিপূরণ দিক", আরামবাগে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বললেন মমতা
আরও পড়ুন- বন্যার ইস্যু তুলে মমতাকে তোপ সুকান্ত-রাজুদের,গান্ধীজয়ন্তীতে স্বচ্ছতা অভিযান BJP-র
বন্যা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মানস ভুঁইয়া বলেন, "প্রকৃতির এমন নিষ্ঠুর রূপ আগে দেখিনি, সেই সঙ্গে ডিভিসি-র বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত মানুষের চরম ক্ষতি করেছে। পরিকল্পিতভাবে জল ছেড়ে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি করা হয়েছে। আমরা এই মুহূর্তে মানুষকে উদ্ধারের জন্য সব রকমভাবে চেষ্টা করছি। চতুর্থবারের জন্য জেলার মানুষের এমন পরিস্থিতি হয়েছে। যতটা সম্ভব স্থানীয়দের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা সবাই চেষ্টা করব।"