সংক্ষিপ্ত
- নকল বাবা সাজিয়ে টাকা চুরি
- সরকারি প্রকল্প থেকে টাকা হাতানো চলছিল
- টাকা হাতাচ্ছিল সরকারি কর্মী
- ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চোখ কপালে প্রশাসনের
'নকল' 'বাবা' সাজিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে সরকারি 'কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্প' এর বিপুল টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কীর্তি ফাঁস খোদ সরকারি কর্মীর। সরকারি কর্মচারির এ হেন কাণ্ডে চোখ কপালে স্থানীয়দের। দুই চার মাস নয়, রীতিমতো টানা ২০১৭ সাল থেকে চলছিল চুপিসারে টাকা চুরি। অজানা ব্যক্তিকে নিজের 'নকল বাবা' সাজিয়ে বহাল তবিয়তে সরকারি '১০০ দিনের কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পের' টাকা ঘরে তুলছিলেন এক ব্যক্তি।
সবকিছু ঠিকঠাক চললেও আবাস যোজনা প্রকল্পে এককালীন বৃহৎ অংকের টাকা হাতাতে গিয়েই ধরা পড়ে গেল সবকিছু। ঘটনা প্রকাশ পেতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় মুর্শিদাবাদের অর্জুনপুর এলাকায়। স্থানীয় অশোক রায় নামের ব্যক্তিকে বাবা পরিচয় দিয়ে মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জ এলাকার সরকারি কর্মী সুব্রত রায় এই কাজ চালিয়ে আসছিলেন। অভিযোগ, সে ক্ষেত্রে এই জালিয়াতি করতে তাকে পুরোদমে সহায়তা করে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী ও সম্পর্কে তার আত্মীয় শুভঙ্কর সরকার। যদিও ধরা পড়ার পরে যাবতীয় ঘটনা অস্বীকার করে অভিযুক্ত শুভঙ্কর। যে ব্যক্তিকে বাবা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করছিলেন তিনি ইতিমধ্যেই এবিষয়ে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গিয়েছে, অর্জুনপুরের বাসিন্দা অশোক রায়। তাঁর স্ত্রী উমা রায়। ওই দম্পতির ছেলে অমিত ও সুমিত। নানান ভাবে তথ্য হাতিয়ে নিয়ে আজিমগঞ্জের বাসিন্দা সুব্রত রায় নিজেকে অর্জুনপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা অশোক রায়ের ছেলে বলে পরিচয় দেন। সেই নথির ভিত্তিতেই কাজ না করেও পঞ্চায়েতের তরফে ২০১৭ সাল থেকে ১০০ দিনের টাকা পাচ্ছিলেন সুব্রত। আবাস যোজনার বাড়ি পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কাগজ পত্রের যা কাজ থাকে, তাও হয়ে গিয়েছিল। হঠাতই বিষয়টি জানতে পারেন অশোকবাবু।
তড়িঘড়ি অশোক বাবু সুব্রত রায় তাঁর পরিবারের সদস্য নন, এই মর্মে চিঠি দিয়ে এলাকার বিডিওকে জানান। অশোকবাবু চিঠিতে সুব্রত রায়কে তাঁর পরিবার থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। সেখানে অভিযুক্তের নাম, ভোটার কার্ডের নম্বর, জব কার্ডের নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে।
অশোকবাবু বলেন,"আমি ভাবতেই পারছি না দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই ভাবে আমাকে বাবা সাজিয়ে আমার নামে ১০০ দিনের কাজের টাকা তুলে নিচ্ছিল অন্য কেউ। ঘটনার তদন্ত হয়ে ওই সরকারি কর্মী ও তার প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত থাকা অপর ব্যক্তির কঠোর সাজা হওয়া প্রয়োজন"।