সংক্ষিপ্ত

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয় বঙ্গ বিজেপি। তবে সেই প্রতিবাদের আঁচ দিল্লির দরবারে পৌঁছাতে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি। রাতের দিকেই তা রাজধানীতে পৌঁছে যায়। এরপর ঘটনার নিন্দা করে টুইট করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।

রবিবার পুরভোটকে (KMC Election) কেন্দ্র করে কলকাতায় উত্তেজনা ছিল দিনভর। ভোটগ্রহণ (Voting) শুরু হওয়ার পর থেকেই সামনে আসছিল বিরোধীদের একের পর এক অভিযোগ। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ধরা পড়েছিল অশান্তির ছবি। কোথাও বিরোধীদের বুথে ঢুকতে বাধা, কোথাও হেনস্থা আবার কোথাও ছাপ্পা ভোটের (Fake Voting) অভিযোগ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামনে আসে নতুন অভিযোগ। পুলিশ (Police) দিয়ে নাকি ঘিরে রাখা হয় বিজেপি বিধায়কদের (BJP MLA)। আর এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে সন্ধেতে আরও জড়িল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয় বঙ্গ বিজেপি (Bengal BJP)। তবে সেই প্রতিবাদের আঁচ দিল্লির দরবারে পৌঁছাতে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি। রাতের দিকেই তা রাজধানীতে পৌঁছে যায়। এরপর ঘটনার নিন্দা করে টুইট করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)।

রবিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের (State Election Commission office) সামনে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন শুভেন্দু। বিজেপির অভিযোগ, শুভেন্দুসহ দলীয় নেতাদের কমিশনের দফতরে ঢুকতে বাধা দেয় কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। পাল্টা বিজেপি নেতারাও জোর করে কমিশনের দফতরে ঢুকতে চান। তখনই শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। দেখা যায় যে শুভেন্দুকে ঘিরে রয়েছে পুলিশ। আর এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরই সরব হন বিজেপি নেতারা। টুইট করে জেপি নাড্ডা লেখেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে পুলিশের অপব্যবহার করে একজন বিজেপি নেতাকে হেনস্থা করার কাজে লাগিয়েছেন, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। নির্বাচনে অনিয়মের পাশাপাশি যে ভাবে প্রশাসনের অপব্যবহার করা হয়েছে, তা গণতন্ত্রের পক্ষে ভালো হয়।"

আরও পড়ুন- শুভেন্দুর সঙ্গে কলকাতা পুলিশের ঝামেলা, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে ঢুকতে বাধা বিজেপিকে

 

 

এই ঘটনা নিয়ে টুইটারে সরব হয়েছেন আরও এক কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালব্য। শুভেন্দুর সেই ভিডিও শেয়ার করে তিনি লেখেন, কলকাতার পুর নির্বাচনে গণতন্ত্রকে হত্যা করার পাশাপাশি বিরোধী দলনেতার রাজ্য নির্বাচন কমিশনে যাওয়া আটকাতে পুলিশকে ব্যবহার করেছেন মুখ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

 

 

কেন্দ্রীয় বাহিনীর পরিবর্তে পুরোভোট হয়েছে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ দিয়ে। এদিকে প্রথম থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি করেছিল বিজেপি। রবিবার সকাল থেকে পুরভোটকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সরব হয় বিজেপি। এমনকী, এর প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তা অবরোধ করে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। তারপর রবিবার সন্ধ্যা ৬ টার সময় এনিয়ে রাজ্যপালের কাছে নালিশ জানাতে যাওয়ার কথা ছিল বঙ্গ বিজেপির প্রতিনিধি দলের। কিন্তু, বিকেল থেকেই তাঁর বাড়ি ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। এমনকী, তাঁকেও বাড়ি থেকে বের হতে বাধা দেওয়া হয়। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। তারপর অবশ্য তিনি বেরোতে পেরেছিলেন। সেখান থেকে সোজা যান রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করতে। দেখা করে পুরভোট নিয়ে নালিশ জানান তিনি।  

এদিকে রাজভবন থেকেই বেরিয়ে শুভেন্দু সহ বঙ্গ বিজেপির প্রতিনিধিরা সোজা চলে যান রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে। সেখানে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের কাছে অভিযোগ জানাতে যান। ঠিক সেই সময় কমিশনের অফিসের সামনে বাড়িয়ে দেওয়া হয় নিরাপত্তা। তারপর শুভেন্দুদের সেই অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে বচসা ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। সেই ছবি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যান্ডেল থেকেও শেয়ার করেন শুভেন্দু। সেই সময়েই এক পুলিশকর্মী তাঁর গায়ে হাত দেয় বলে অভিযোগ। বিজেপি বিধায়ক পুলিশের কাছে জানতে চান কেন তাঁদের আটকানো হচ্ছে। পাল্টা পুলিশের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনি তিন জনকে সঙ্গে নিয়ে কমিশনের দফতরে ঢুকতে পারবেন। তবে দীর্ঘক্ষণ ধরে বচসা চলার পর কমিশনের অফিসে ঢুকতে পারেন শুভেন্দুরা। 

 

 

টুইটারে সেই ঘটনার ভিডিও শেয়ার করে শুভেন্দু লেখেন, “কলকাতা পুলিশের এই আধিকারিক নির্বাচন কমিশনের অফিসের সামনে আমার গায়ে হাত দেন এবং আমার দলের নেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। কলকাতার পুলিশ কমিশনার নিশ্চয়ই তাঁর রাজনৈতিক বসের নির্দেশ অনুযায়ী বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার জন্য নিজের অধস্তনদের নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদের প্রতিবাদ আরও জোরালো হবে।”