সংক্ষিপ্ত
তারাপীঠে মা তারাকে পুজো করা হল কালী রূপে। মা তারাকে সামনে রেখেই সমস্ত দেবী মূর্তির পুজো করা হয় সিদ্ধপীঠ তারাপীঠে, অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দশক থেকে এই প্রথা চলে আসছে।
তারাপীঠে (Tarapith) মা তারাকে পুজো করা হল কালী রূপে (Kali Puja 2021)। উল্লেখ্য, সব দেবীর উর্দ্ধে মা তারা। তাই তারাপীঠে কোন দেবী মূর্তি পুজোর চল নেই। মা তারাকে সামনে রেখেই সমস্ত দেবী মূর্তির পুজো করা হয় সিদ্ধপীঠ তারাপীঠে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দশক থেকে এই প্রথা চলে আসছে। বৃহস্পতিবার তাই মা তারাকেও শ্যামা রূপে পুজো করা হল (Shama Puja 2021)। এদিন মায়ের নিত্য পূজার্চনার পাশাপাশি শ্যামা রূপে মায়ের বিশেষ আরাধনা করা হয় (Shama Idol)।
আরও দেখুন, Kali Puja 2021- মন ভরাবে মধ্য কলকাতার জানবাজারের দশ মহাবিদ্যা, দেখুন শহরের অন্যতম কালী পুজো
বৃহস্পতিবার কুয়াশা মাখা ভোরে আর পাঁচটা দিনের মতো মা তারাকে স্নান করানো হয়েছে। এরপরেই মা তারাকে অষ্টধাতুর মুখাভরন, মুণ্ডমালা, মুকুট, সোনার অলঙ্কার, শোলা ও ফুল মালা দিয়ে শ্যামা রূপে সাজানো হয়। এরপর শুরু হয় মঙ্গলারতি। মায়ের প্রথম পুজোর সঙ্গে দেওয়া হয় শীতলা ভোগ। আর পাঁচটা দিনের মতো এদিনও মায়ের নিত্যভোগ হয়। সন্ধ্যারতির আগে মা’কে পুনরায় ফুল মালা দিয়ে সাজানো হয়। মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “শ্যামা পুজোর শুভক্ষণে নাটোরের পুরোহিত এবং মন্দিরের পালাদার সেবাইত পুজোয় বসেন। একদিকে চলে চণ্ডীপাঠ অন্যদিকে চলে পুজো। পুজো শেষে মায়ের আরতির পাশাপাশি দ্বিতীয়বার ভোগ নিবেদন করা হয়। ভোগে পোলাও, খিচুড়ি, মাছ, মাংস, ভাজা মিষ্টি, পায়েস দেওয়া হয়”।
আরও পড়ুন, Chhath Puja 2021- দূষণের জেরে এবারও রবীন্দ্র সরোবরে বন্ধ ছট পুজো, বিকল্পে শহরে আরও ১৭০ ঘাট
মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এদিন কালী পুজো উপলক্ষে সেবাইতদের বাড়ির মেয়েরা মন্দিরের চারিদিক মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে আলোকিত করে তোলে। সারারাত মোমবাতি আর মাটির প্রদীপে আলোকময় হয়ে থাকে শ্মশান চত্বর। রাতভোর চলে যজ্ঞ। শ্মশানের বিভিন্ন জায়গায় সাধু সন্তরা ভক্তদের মঙ্গল কামনায় যজ্ঞ করে থাকেন। কেউ কেউ শ্মশানের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দ্বারকা নদীতে প্রদীপ ভাসিয়ে সংসারে সুখ সমৃদ্ধি কামনা করে”। কালী পুজো উপলক্ষে ছাগ বলি দেওয়া হয়। বহু ভক্ত মানত করে বলি দিয়ে থাকেন। মা তারাকে শ্যামা রূপে পুজো দিতে দূরদূরান্তের বহু ভক্ত সকাল থেকে ভিড় জমিয়েছিলেন। সারাদিনই মা কে শ্যামা রূপে পুজো দেওয়া হয়। সারা রাত খুলে রাখা হয়েছিল মন্দিরের দরজা। কলকাতা থেকে পুজো দিতে আসা পরিতোষ সাহানি, বিশ্বজিৎ দত্তরা বলেন, “অন্যান্যদিন মা তারা রূপে পুজো দিয়ে থাকি। কিন্তু অন্য রূপে মা তারাকে পুজো দিতেই তারাপীঠে আসা। খুব ভাল পুজো দিলাম। প্রত্যেক বছর আসার ইচ্ছে রইল”।