সংক্ষিপ্ত
তাপস সাহার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার যাবতীয় নথি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেবেন রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী অফিসার, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের।
আরও বিপাকে তৃণমূল কংগ্রেস। আরও বিপাকে তৃণমূলের বিধায়ক তাপস সাহা। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করবে সিবিআই। অবিলম্বে সিবিআইকে নথি হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাপস সাহা সহ বাকিদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করবে সিবিআই বলে নির্দেশ আদালতের। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। চাকরি দেওয়ার নামে প্রায় ৫ কোটি টাকার প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে বিধায়কের বিরুদ্ধে।
আইনজীবী জানান দুর্নীতি দমন শাখার তদন্তে গাফিলতি রয়েছে। তারা যে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে পাঠিয়েছিল, সেখানে পরিষ্কার লেখা ছিল তাপস সাহা কতটা যুক্ত এই ঘটনায়। তিনি কত টাকা পেয়েছেন বা তার লেটার হেড কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, কোন কোন দফতরে দুর্নীতি রয়েছে। কারণ বিষয়টা স্রেফ প্রাথমিক বা উচ্চ প্রাথমিক নয়-মুখ্যমন্ত্রীর নিজের দফতরের গ্রুপ ডি পোস্টে দুর্নীতি রয়েছে, সব কাগজ ও নথিই তাদের কাছে ছিল। সেই সব নিয়ে তদন্ত করলে তাপস সাহা জেলের ভিতরে থাকত। বাইরে ঘুরে বেড়াত না। কিন্তু কোথাও সব কাগজ গিয়ে আটকে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, দুর্নীতি দমন শাখার কাজকর্মে বেশ বিস্মিত কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট জানায়, এত কাগজ থাকা সত্ত্বেও কেন সঠিক ভাবে তদন্ত হল না। এরপরেই তাপস সাহার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার যাবতীয় নথি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেবেন রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী অফিসার বলে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতির অন্যান্য মামলাগুলি বর্তমানে সিবিআই তদন্ত চালাচ্ছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই বেশ কিছু চার্জশিট জমা করেছে। এক্ষেত্রে তাপস সাহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের মামলার তদন্ত যদি রাজ্য সরকারের অ্যান্টি কোরাপশন ব্র্যাঞ্চ চালায়, তাহলে নতুন করে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
এদিন রাজ্য সরকারের পক্ষের আইনজীবী এদিন এই রায়ে স্থগিতাদেশ চান, তবে তার আবেদন খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এদিকে, এই অভিযোগের পিছনে বিজেপির এবং দলের একাংশের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। তবে এই ধরনের অভিযোগের এক শতাংশও সত্যতা নেই বলেই দাবি বিধায়ক তাপস সাহার। সিবিআই তদন্তের নির্দেশের পর তাপস সাহা বলছেন, আইনজীবীদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করবেন এবং আমি উচ্চতর আদালতে যাবেন। বললেন, ‘আমি ডিভিশন বেঞ্চে যাব।’
এতদিন রাজ্য সরকারের যে তদন্তকারী অফিসার এই মামলার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁর ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি। আদালত জানিয়েছে, যেভাবে আইও এই মামলার তদন্ত করছেন, তাতে কোথাও গিয়ে অনেকটা বেশি দেরি হয়ে গিয়েছে। সেই দেরি চোখে পড়ার মতো দেরি বলেই মনে করছে হাইকোর্ট।