সংক্ষিপ্ত
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় তিন শতাংশ হারে ডিএ পান। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা সপ্তম বেতন কমিশনের আওতায় ৩৮ শতাংশ ডিএ পেয়ে থাকেন।
বকেয়া ডিএ-র দাবিতে পথে নামেন সরকারি কর্মচারীরা। বিভিন্ন পেশার সরকারি ও আধা সরকারি দপ্তরের কর্মচারীরা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত মিছিল করেন এদিন। তাদের দাবি মানা না হলে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ করবেন বলে জানান তারা। বিভিন্ন পেশার ২৮টি সংগঠন এদিনের মিছিলে যোগদান করেন। পাশাপাশি এই মিছিল থেকে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিও তোলে সরকারি কর্মচারীরা।
আপাতত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় তিন শতাংশ হারে ডিএ পান। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা সপ্তম বেতন কমিশনের আওতায় ৩৮ শতাংশ ডিএ পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএয়ের ফারাক ৩৫ শতাংশ। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দাবি, কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দিতে হবে।
মিছিলে পা মেলানো রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা জানান, মূলত দুটি দাবিতে মিছিল করা হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্য সরকারকে ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে ও পশ্চিমবঙ্গর সরকারি কর্মচারীদেরও কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে হবে। সেইসঙ্গে স্বচ্ছভাবে সমস্ত সরকারি শূন্যপদ পূরণের দাবিতে মিছিল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, আপাতত সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা চলছে। কলকাতা হাইকোর্ট যে ডিএ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছে রাজ্য সরকার। আগামী ১৫ মার্চ সেই মামলার শুনানি হবে। এমনিতে গত বছর ২০ মে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য। তা খারিজ হয়ে যায়। তারপর রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছিল তিনটি রাজ্য সরকারি সংগঠন।
রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়েছে, কলকাতা হাই কোর্টের রায় মেনে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ দিতে হলে খরচ হবে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, কলকাতা হাই কোর্টের ডিএ-রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। ২০ মে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, পরের তিন মাসের মধ্যে সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে রাজ্য সরকারকে। যার জেরে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দিতে হবে। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ডিএ না-দেওয়ায় হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও রাজ্য ধাক্কা খাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। সেখানে এ বার মামলা শুনবে দুই বাঙালি বিচারপতির বেঞ্চ।