সংক্ষিপ্ত

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যু নিয়ে কড়া সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় শাস্তির মুখে পড়তে চলেছেন মোট ৩৮ জন পড়ুয়া। 

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিং-এর ঘটনা এবং ছাত্র মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য। প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু যেন বারবার চোখে আঙুল দেখিয়ে দিল যে, শিক্ষাঙ্গনে র‍্যাগিং কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। আর এবার সেই র‍্যাগিং কাণ্ডে শাস্তির সিদ্ধান্তে পড়ল শিলমোহর। এই ঘটনায় শাস্তির মুখে পড়তে চলেছেন মোট ৩৮ জন পড়ুয়া।

দেখতে দেখতে প্রায় ৯ মাস অতিক্রান্ত। বেশ কয়েকমাস আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তাতে শিলমোহর পড়েনি তখনও। বাবা-মায়ের কোল খালি করে চলে যাওয়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র মৃত্যু ঘিরে শুরু হয় তদন্ত। দোষীদের শাস্তির দাবিতে পথে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলি। মৃত্যু নিয়ে রাজনীতির মাঝে বারবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, দোষীদের শাস্তি হবে কি? একবুক আশা নিয়ে কলকাতায় পড়তে আসা ছাত্রটির পরিবার কি আদৌ বিচার পাবে?

শেষপর্যন্ত, দোষীরা শাস্তি পেতে চলেছে। গত বছর ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। সেখানেই অভিযুক্তদের শাস্তির বিষয়ে আলোচনা হয় এবং সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। কিন্তু, তার কয়েকদিন বাদেই অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বে থাকা বুদ্ধদেব সাউকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যার জেরে সেই শাস্তির সিদ্ধান্ত কর্মসমিতির বৈঠকে পাশ করানো যায়নি।

অন্যদিকে, গত মাসের ২২ এপ্রিল অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বে এসেছেন ভাস্কর গুপ্ত। তাঁর উদ্যোগেই গত শুক্রবার কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হয়। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এবং তার ওপর ভিত্তি করে অ্যান্টি র‌্যাগিং টিমের কথা মেনেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ৪ জন পড়ুয়াকে পুরোপুরি বরখাস্ত করা হবে। তাদের মধ্যে রয়েছেন দীপশেখর দত্ত, মনোতোষ ঘোষ, সত্যব্রত রায় এবং মহম্মদ আরিফ।

প্রসঙ্গত, ঘটনার পর এই ৪ জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। এছাড়াও আরও ৫ জন ছাত্র রয়েছেন, যাদের দুই বছরের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের আজীবন হোস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হবে। আর ১ জন পড়ুয়াকে একমাসের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, ২৫ জন পড়ুয়াকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে তাদেরও আজীবন হোস্টেল বহিষ্কার করা হবে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদ ফেটসুর প্রাক্তন চেয়ারম্যান অরিত্র মজুমদারও পড়তে চলেছেন শাস্তির মুখে। অরিত্র মজুমদার বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন। তাঁকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। এও শোনা যাচ্ছে যে, তাঁর ফেলোশিপ বাতিলও হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও ফেটসুর দুই প্রাক্তন নেতা এবং প্রাক্তন পড়ুয়া সৈকত শিট ও গৌরব দাসকে আজীবন ক্যাম্পাস থেকে ব্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।