সংক্ষিপ্ত
একমাত্র ছেলেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। মৃত্যু পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। খড়গপুর আইআইটির ছাত্রের মৃত্যুর তদন্তের দাবি জানিয়ে আদালতে বাবা - মা।
গত ১৪ অক্টোবর খড়গপুর আইআইটির ক্যাম্পাস থেকে এক ছাত্রের অর্ধপচা দেহ উদ্ধার হয়েছিল। ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছিল রহস্য। কারণ টানা দুই দিন ছাত্রটি ঘরের দরজা খোলেনি। তারপর এক বন্ধুর উদ্যোগে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে উদ্ধার করেছিল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়জান আহমেদের নিথর দেহ। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। নিহত ছাত্রের বাবা ও মায়ের দাবি তাঁদের ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা। তারা গোটা ঘটনার সিআইডি বা বিশেষ তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন।
ফয়জান আহমেদের বাবা সেলিম আহমেদ রাহানা আহমের কলকাতা হাইকোর্টের আবেদন করেন। সেখানেই তাঁরা বলেন ফয়জানকে তাঁদের একমাত্র সন্তান বলে উল্লেখ করেন। তারপরই দম্পতি সিবিআই, সিআইডি বা যে কোনও বিশষ তদন্তকারী দলের তদন্তের আবেদন জানান। তাঁদের দাবি ছেলেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মত পরিস্থিতি কেউ বা কারা তৈরি করেছিল। তাতেই তাঁর ছেলে মৃত্যুর পথ বেছে নেয়। তাঁরা আরও বলেছেন, তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল যে ফাইজান আহমেদ মানসিকভাবে বিপর্যস্থ ছিলেন। আর সেই কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। বাবা মায়ের দাবি তাঁদের ছেলে ব়্যাগিং প্রোগ্রামের অংশ হতে অস্বীকার করেছিল। কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব়্যাগিং নিষিদ্ধ হলেও খড়গপুর আইআইটিতে ব়্যাগিং হত বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। পাশাপাশি তাঁরা আরও বলেন, ছেলে এই অনুষ্ঠানে অংশ না নেওয়ায় তাঁকে উপেক্ষা করা হয়েছিল। আলাদা করে দেওয়া হয়েছিল।
তবে এই অভিযোগ সম্পর্কে এখনও মুখ খোলেনি খড়গপুর আইআইটি কর্তৃপক্ষ। এই মামলার আগামী শুনানি হবে বৃহস্পতিবার। বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে হবে শুনানি।
খড়গপুর আইআইটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংএর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন ২২ বছরের ফাইজান আহমেদ। আদতে তিনি অসমের বাসিন্দা। গত দুই দিন তাঁকে ঘর থেকে বার হতে দেখেনি। এদিন সকালে তাঁর বন্ধু ও হোস্টেলের কয়েক জন ছাত্র ডাকাডাকি করতে শুরু করে। কিন্তু কোনও সাড়া পায়নি ছাত্রের। শেষপর্যন্ত খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ ঢোকে ক্যাম্পাসে। দরজা ভেঙে উদ্ধার করে ছাত্রের দেহ। পুলিশ সূত্রের খবর হোস্টেলের ঘরের মেঝেতে পড়েছিল ছাত্রের দেহ। মুখের ওপর বসেছিল প্রচুর মাছি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান দরজা ভাঙার দীর্ঘক্ষণ আগেই মৃত্যু হয়েছে ছাত্রের। ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ জানতে হিজলি থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
নিহত ছাত্রের এক সহপাঠী জানিয়েছেন, গত দুই দিন ধরে ফাইজান নিজেকে ঘর বন্দি করে রেখেছিল। তাঁর দেখা না পেয়ে বারবার ফাইজানকে তিনি ফোন করেছিলেন। কিন্তু ফোনেও কোনও উত্তর পাননি। এদিন সকাল থেকেই ফাইজানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। তিনি বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এসে দরজায় ধাক্কামারেন। কিন্তু তখনও কোনও সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হয়। তারপরই আইআইটি কর্তৃপক্ষকে সবকিছু জানান। কর্তৃপক্ষই হিজলি থানার পুলিশকে খবর দেয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। দরজা ভেঙে উদ্ধার করে ছাত্রের দেহ।