সংক্ষিপ্ত
শাসক শিবিরের এক শীর্ষনেতার মতে, ওই সিদ্ধান্ত (সন্দীপকে অন্য কলেজে বদলি করা) এক সপ্তাহ বা ১০ দিন পরেও নেওয়া যেত। তত দিনে পরিস্থিতি খানিকটা থিতিয়ে যেতে পারত।
সিবিআই তদন্তে রাজি ছিলেন তিনি। আর জি করের ঘটনায় প্রথম থেকেই নমনীয় মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে আশ্বস্ত হয়েছিল রাজ্য। কিন্তু ভোল পালটে গেল একটা মাত্র সিদ্ধান্তে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেওয়া সিদ্ধান্তে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজ্য জুড়ে। প্রশ্ন উঠছে সোমবার বিকালের পরেই আরজি করের পদত্যাগী অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত করা হল কেন।
আর জি কর হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতে কর্তব্যরত চেস্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের পিজিটি মহিলা ডাক্তারের নিথর দেহ সকালে হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন, পরনের কাপড় ছেঁড়াফাটা। রাতে ডিউটি সেরে ডিনার করে সেমিনার রুম দু'ঘন্টার রেস্ট নিতে গিয়েছিল সেই তরুণী, পরিণতিতে মিলল নৃশংস মৃত্যু!
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, তরুণী ডাক্তার যে সেমিনার হলে ঘুমোচ্ছিলেন, সেখানে রাত ৩টের কিছুক্ষণ পরে ঢোকে অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার। সেই সময় সে মদ্যপ অবস্থায় ছিল বলে জানা গিয়েছে। প্রায় ৪৫ মিনিট মতো হলের ভেতর ছিল সে। এরপর তাঁকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপরেই উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য। শাসক শিবিরের এক শীর্ষনেতার মতে, ওই সিদ্ধান্ত (সন্দীপকে অন্য কলেজে বদলি করা) এক সপ্তাহ বা ১০ দিন পরেও নেওয়া যেত। তত দিনে পরিস্থিতি খানিকটা থিতিয়ে যেতে পারত। তা না করে তড়িঘড়়ি বেলা গড়ানোর আগেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরিস্থিতি খানিকটা ‘প্রতিকূল’ হয়ে পড়েছে।
মমতার এই পদক্ষেপ যে খুব একটা অনুকূলে যায়নি, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে সোমবার রাতেই। রাতেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন সেখানকার আন্দোলনকারীরা। ঘরের দরজায় পোস্টার পড়েছে। ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে কাকতাড়ুয়া। চিকিৎসকেরা নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে আলোচনা সাপেক্ষে মঙ্গলবার সকাল থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যালে ‘ব্যারিকেড’ গড়ে তোলার ডাক দিয়েছিলেন। যা শুরুও হয়ে গিয়েছে। অথচ সন্দীপের ‘পুনর্বাসন’-এর নির্দেশের আগে পর্যন্ত প্রশাসক এবং রাজনীতিক মমতা ঘটনার রাশ পুরোপুরিই নিজের হাতে রেখেছিলেন। শুরু থেকেই তিনি ‘নমনীয়’ ছিলেন। তবে শেষেই ঘটল বিভ্রাট।
অনেকে অভিযোগ করেছেন, ধর্ষিতা বা নিগৃহীতার প্রতি যে ‘সংবেদনশীলতা’ দেখানো উচিত, অপরাধীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর মনোভাব দেখানো উচিত, তা রাজ্য প্রশাসনের তরফে দেখানো হয়নি।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।