সংক্ষিপ্ত
কয়েকদিন আগেই সরকারিভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে জন্মতারিখ তা পালন করা হয়েছে। কিন্তু নিজের বয়স নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মতারিখ নিয়ে ধোঁয়াশা ছিলই, এবার জন্মসাল নিয়েও নতুন বিভ্রান্তি তৈরি হল। সরকারি নথি অনুযায়ী, ১৯৫৫ সালের ৫ জানুয়ারি মমতার জন্ম হয়। কিন্তু তিনি নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর মা বলেছিলেন, দুর্গাপুজোর সময় অষ্টমীর দিন জন্ম হয়। ফলে সেপ্টেম্বরের শেষদিক বা অক্টোবরে জন্ম হয়েছিল। কিন্তু সেই সংক্রান্ত কোনও নথি না থাকায় সরকারিভাবে ৫ জানুয়ারিই মমতার জন্মদিন পালন করা হয়। সেই অনুযায়ী এখন তাঁর বয়স ৭০ বছর। কিন্তু মমতা জানিয়েছেন, তাঁর বয়স পাঁচ বছর বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। এই কারণে এখন তাঁর আসল বয়স ৬৫ বছর। দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে নিয়ে বয়স সংক্রান্ত এই তথ্য জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
১০ বছর বয়সে উচ্চমাধ্যমিক পাশ!
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী, তাঁর যদি ১৯৫৫ সালের বদলে ১৯৬০ সালে জন্ম হয়, তাহলে ১৯৭০ সালে ১০ বছর বয়সে তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন। সেক্ষেত্রে ১৯৭৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে কংগ্রেসে যোগ দেন মমতা। ১৯৮৪ সালে তিনি প্রথমবার সাংসদ হন। ১৯৬০ সালে জন্ম হলে ২৪ বছর বয়সে যাদবপুর কেন্দ্রে সিপিআইএম প্রার্থী প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে প্রথমবার সাংসদ হন মমতা। সরকারি নথি এবং মমতার নিজের দাবির মধ্যে বিস্তর ফারাক। ফলে তাঁর বয়স নিয়ে রীতিমতো ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
বয়স নিয়ে কী দাবি মমতার?
নিজের বয়স ও জন্মসাল নিয়ে মমতা বলেছেন, 'আসল বয়সটা লুকিয়ে থাকে। নকল বয়সটা, সার্টিফিকেটের বয়সটা মানুষ জেনে যায়। আমরা যারা বাড়িতে জন্মেছি, হোম ডেলিভারি, তাদের এটা সমস্যা। আজ দাদা সামনে আছে। তাই ওকে সাক্ষী রেখে কথাগুলো বললাম। আমার বয়স পাঁচ বছর বাড়ানো আছে। ‘একান্তে’ বইয়ে আমি লিখে দিয়েছি অনেকদিন আগে। জন্মদিনের দিনটা আমার মোটেই পছন্দকর নয়। ওটা সার্টিফিকেটের বয়স। ওটা বাবা-মা করে দিয়ে গেছে। আমি জানতামও না। যখন কলেজে পড়ি, তখন দাদা আমাকে একদিন বলল, তুই কি জানিস বাবা তোর বয়স কী করে দিয়েছে? সার্টিফিকেটে তোর আর আমার বয়সে ছ’মাসের ডিফারেন্স। আমি শুনে বললাম, দারুণ!'
নিজের নাম পছন্দ নয় মমতার
রাজনৈতিক মহলে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত মমতা। বেশ কয়েকবার সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর ২০১১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত তিনি মুখ্যমন্ত্রী। দেশজুড়ে 'দিদি' নামে পরিচিত মমতা। কিন্তু তিনি নিজের নাম নিয়ে খুশি নন। তিনি জানিয়েছেন, 'এই নামটাও আমার পছন্দ নয়।' জন্ম, ধর্ম, নাম, পদবি, কোনও কিছুতেই তাঁর হাত ছিল না বলে জানিয়েছেন মমতা। যদিও তিনি নাম, পদবি বদল করবেন, এমন কথা বলেননি। জন্মতারিখ নিয়ে বিভ্রান্তির কথা আগেও প্রকাশ্যে বলেছিলেন মমতা। তবে এবারই প্রথম তিনি বয়স বাড়ানোর কথা জানালেন।
শাসক দলে বয়স নিয়ে আলোচনা
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, রাজনীতিবিদদের বয়স ৬৫ বছর হলে তারপর অবসর নেওয়া উচিত। তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক সাংসদ, বিধায়কের বয়স ৬৫ বছরের বেশি। ফলে অভিষেকের এই বক্তব্য নিয়ে শাসক দলে আলোচনা চলছে। অনেক নেতাই দাবি করছেন, রাজনীতিতে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা থাকা উচিত নয়। মমতা নিজেও এই মতের সমর্থক। তিনি বয়স নিয়ে বিশেষ ভাবেন না। কিন্তু সেই তিনিই এবার নিজের বয়স নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন। ফলে শাসক দলের অন্দরে বয়স নিয়ে আলোচনা নতুন মোড় নিল। তবে বয়স ৬৫ হোক বা ৭০, মমতা আপাতত রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন না। তিনিই মুখ্যমন্ত্রী এবং দলের সুপ্রিমো থাকছেন।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন-
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এই ১০টি অজানা তথ্য জানতেন? জানলে অবাক হবেন
'আপনার টাকা আপনার অধিকার', সন্দেশখালিতে মমতা ব্যানার্জি কেন বললেন এই কথা