সংক্ষিপ্ত

সূত্রপাতটা হয়েছিল ৫ নভেম্বর। রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর দলীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি শোকবার্তা জানিয়েছিলেন বিরোধীদলের নেতারাও। গতকাল তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানান বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের বহু নেতা। 

বরাবরই চাঁচাছোলা ভাষায় মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা (BJP Leader) তথাগত রায় (Tathagata Roy)। প্রায় সব বিষয় নিয়েই মন্তব্য করতে দেখা যায় তাঁকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) কখনও দলীয় নেতা বা কখনও বিরোধী নেতা-মন্ত্রীদের আক্রমণ শানান তিনি। বাদ দেন না কাউকেই। আর এবার তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) বিরুদ্ধে টুইটারে (Twitter) আক্রমণ শানান তিনি। তবে তথাগতর টুইট দেখে চুপ থাকেননি কুণাল। পাল্টা জবাব দিয়ে আক্রমণ ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁদের টুইট যুদ্ধে সরগরম হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে তথাগতর টুইট দেখে চুপ থাকেননি কুণাল। পাল্টা জবাব দিয়ে আক্রমণ ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। 

ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল ৫ নভেম্বর। রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mujherjee) মৃত্যুর পর দলীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি শোকবার্তা জানিয়েছিলেন বিরোধীদলের নেতারাও। গতকাল তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানান বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের বহু নেতা। আর ঠিক তখনই একটি টুইট করেছিলেন কুণাল। বিজেপির দুই নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। এমনকী, নারদা কাণ্ডে সুব্রতকে গ্রেফতার করা প্রসঙ্গ টেনে তাঁদের 'ন্যাকামি' করতে বারণ করেছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, "বিজেপির যে দুজন নেতা সাতসকালে সিবিআই পাঠিয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের চক্রান্তে জড়িত ছিলেন। এখন প্রচারের জন্য ন্যাকামি করে শোকজ্ঞাপন করতে সামনে গেলে নিজদায়িত্বে যাবেন। খবরটা অন্যরকমও হয়ে যেতে পারে। যদিও তৃণমূলকর্মীরা যথেষ্ট সংযত থাকবেন।" 

 

 

আরও পড়ুন- "এত লজ্জা না পেয়ে দল ছেড়ে দিন", ‘ধৈর্যের বাঁধ’ ভেঙে তথাগতর বিরুদ্ধে মন্তব্য দিলীপের

এই টুইটের প্রেক্ষিতেই তাঁকে আক্রমণ করেন তথাগত রায়। তিনি লেখেন, "হিন্দু যেমনি মুসলমান হলে গরু খাবার যম হয় ঠিক তেমনি এই ভাঁড়টি মমতাকে গালাগালি দিয়ে, সারদা কেসে জেলে গিয়ে, জামিন পেয়ে অতীতের পাপ স্খালন করার জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মমতাপন্থী হয়ে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় খুনখারাপি করার হুমকি পর্যন্ত দিচ্ছে !" তথাগতর এই টুইটের পর আর চুপ থাকেননি কুণাল। পর পর তিনটি টুইট করে কড়া ভাষায় এর জবাব দেন তিনি। 

 

দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে কুণাল ঘোষ লেখেন, "রাজ্যপাল পদ শেষ হলে বাংলায় নেতা হতে এসেছিলেন তথাগত। দিলীপ ঘোষ ঢুকতে দেননি। দিলীপবাবু তো নিজে তবু বিধায়ক, সাংসদ হয়েছেন। এই ভাঁড়সম্রাট তথাগত দিলীপবাবুর জুতো নালিশের যোগ্য নন। রোজ অবসাদ থেকে বিষোদ্গার করছেন টুইটে। গেঞ্জি, জাঙ্গিয়া আর টুইট ছাড়া এটার আছেটা কী?"

আরও পড়ুন- আজ সকাল থেকেই মিষ্টির দোকানে ভিড় কলকাতায়, জানুন কতক্ষণ থাকছে ভ্রাতৃ দ্বিতীয়া

পরবর্তী টুইটে সারদা মামলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তিনি লেখেন, " ওওওওও অপদার্থ তথাগতবাবু, আমি তো চিরকাল দলেই ছিলাম। এভাবেই ছিলাম। নতুন নয়। মামলায় আইনে লড়ছি। আপনার অমিত শাহ জেলে যাননি? নারদা, সারদার অভিযুক্তরা গ্রেফতার এড়াতে বিজেপিতে বসে আছে। আগে দিলীপ ঘোষকে সামলা পরে ভাববি বাংলা। ছন্দ মেলাতে তুই লিখলাম। রাগ করবেন না।"

আরও পড়ুন- ভাইফোঁটায় অগ্নিমূল্য বাজারদর, নাভিশ্বাস উঠছে দিদি-বোনদের

 

 

আর সর্বশেষ টুইটে তিনি লেখেন, "এই ভাঁড়সম্রাট তথাগত। গেঞ্জি, জাঙ্গিয়া, টুইট ছাড়া সঙ্গে এক পিস লোক নেই। বিজেপিতেও ওকে কেউ মানে না। দিলীপদা ওকে ঘাড় ধরে তাড়াচ্ছে। ভেসে থাকতে টুইটের বন্যা বইয়ে দেয়। নিজে কোনোদিন জেতেনি। দলকে জেতানোর মুরোদ নেই। অতৃপ্ত আত্মা। এই কাক, হুশ্"।

 

 

বরাবরই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে তথাগতকে। বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবির জন্য রাজ্য নেতৃত্বের একাংশকে দায়ি করেছিলেন তিনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দিলীপ ঘোষকে নিয়ে কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কখনও বিধানসভা নির্বাচনে নবাগতদের টিকিট দেওয়া আবার কখনও কন্যাশ্রী প্রকল্পের বানান বিভ্রাট নিয়ে টুইট করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। তবে এতদিন তাঁর মন্তব্যকে কোনও গুরুত্ব দেননি দিলীপ। অবশেষে ভেঙেছে তাঁর ধৈর্যের বাঁধ। তথাগত রায়ের প্রসঙ্গ উঠতেই দিলীপ ঘোষ বলেন, "কত দিন আর লজ্জা পাবেন? দল ছেড়ে দিন। যাঁরা দলের জন্য কিছুই করেননি। দল যাঁদের সব থেকে বেশি দিয়েছে। তাঁরাই দলের সবথেকে বেশি ক্ষতি করেন। আমাদের দুর্ভাগ্য এটা।" আর এবার দিলীপ ঘোষের মন্তব্য টেনেই তথাগতকে আক্রমণ করলেন কুণাল। 

YouTube video player