সংক্ষিপ্ত
প্রশাসনিক বৈঠকের মাঝেই হাওড়া জেলা থেকে সদ্য নির্বাচিত বিধায়কদের দেখতে চান মমতা। আর সেখানেই হল ছন্দ পতন। সবাই নিজেদের পরিচয় দেন। তারপরই আসে হাওড়া উত্তরের বিধায়ক গৌতম চৌধুরীর পালা। আর নিজের পরিচয় দিতে উঠেই ধমক খান বিধায়ক।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার (Administrative Meeting) আগে জেলা নেতৃত্ব থেকে শুরু প্রশাসনিক কর্তারা সকলেই একটু চিন্তায় থাকেন। কার কপালে বকুনি জুটবে তা নিয়ে চিন্তায় থাকতে হয় সবাইকেই। হাওড়ায় (Howrah) আজকের প্রশাসনিক বৈঠকে সব কিছুই ঠিকঠাকই চলছিল। বেশ খোশ মেজাজেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এরপর বৈঠকের মাঝেই হাওড়া জেলা থেকে সদ্য নির্বাচিত বিধায়কদের (MLA) দেখতে চান তিনি। আর সেখানেই হল ছন্দ পতন। সবাই নিজেদের পরিচয় দেন। তারপরই আসে হাওড়া উত্তরের (North Howrah) বিধায়ক গৌতম চৌধুরীর (Goutam Chowdhury) পালা। আর নিজের পরিচয় দিতে উঠেই ধমক খান বিধায়ক।
গৌতম চৌধুরীকে সরাসরি মমতা বলেন, "রাস্তায় বসে গেছ খালি গায়ে, এ আবার কী! মনে রাখবে এসব করে একদিন টিভিতে দেখা যায় কিন্তু মানুষ ৩৬৫ দিন মনে রাখে। এটা তৃণমূলের সংস্কৃতি নয়"। পৌরনিগমের (Municipal Corporation) বিরুদ্ধে ধরনা দিতে গিয়ে মমতার কোপে পড়লেন বিধায়ক।
আরও পড়ুন- 'পশ্চিমবঙ্গে দলের বিলুপ্তি অবশ্যম্ভাবী', বিজেপির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুইট তথাগতর
এই ঘটনার সূত্রপাত বর্ষা (Monsoon) বিদায় নেওয়ার প্রায় তিন মাস আগে। উত্তর হাওড়া এলাকায় কয়েক মাস ধরে জমে ছিল জল। পুরসভার প্রশাসকদের বলেও কাজ হচ্ছিল না। এদিকে নাজেহাল হতে হচ্ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই অভিযোগ তুলে তাই নিজের বিধানসভা এলাকাতেই অক্টোবর মাসে চেয়ার নিয়ে ধরনায় বসে ছিলেন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক। কালো নোংরা জলে বসে পৌর প্রশাসক মণ্ডলীর বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এই পদক্ষেপের জন্যই আজ তাঁকে মমতার কোপের মুখে পড়তে হল।
আরও পড়ুন- নতুন বছরের শুরুতেই ফের 'দুয়ারে সরকার' রাজ্যে, ঘোষণা মমতার
প্রশাসনিক বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমোর সরাসরি প্রশ্ন তাঁকে, “তুমি গৌতম চৌধুরী? তুমি রাস্তায় বসে ছিলে কেন একদিন?” উত্তরে গৌতম চৌধুরীকে কাঁচুমাচু হয়ে বলতে শোনা যায়, “দিদি ওই জায়গাটা জল জমে গিয়েছিল।” তৎক্ষণাৎ মমতা বলে ওঠেন, “তাতে কী হয়েছে, জল জমে গিয়েছিল, প্রকৃতি কি আমাদের হাতে? তুমি জানো যে, ৮০ বছরে এত বৃষ্টি হয়নি?" এরপরে তিনি আরও বলেন, “তুমি কাজ করবে, কোঅপারেশন করবে। তা নয়, তুমি রাস্তায় বসে গেছ খালি গায়ে, এ আবার কী! তৃণমূল কংগ্রেসের একটা সংস্কৃতি আছে। খবরদার এটা করো না।”বরং মমতার পরামর্শ, "তোমাদের এখানে, হাওড়ায় জল জমা একটা বড় সমস্যা। পুরনো ড্রেনেজ। তার জন্য তিনটে ফেজের টাকা দিয়ে করা হচ্ছে। কাজ হয়েছে। গত ৭০ বছরে এত কাজ কেউ করেনি।"
আরও পড়ুন- টাকা না পেয়ে সদ্যোজাতকে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ, মৃত্যু
প্রসঙ্গত, ঠিক একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল এর আগের প্রশাসনিক বৈঠকেও। তখনও হাওড়া পৌর নিগমের ১ হাজার ৪০০ অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ধমক খেয়েছিলেন পৌর নিগমের তৎকালীন মেয়র ও বর্তমানে বিজেপি নেতা রথীন চক্রবর্তী।