সংক্ষিপ্ত
- এনআরসি আতঙ্কে জোড়া মৃত্যু জলপাইগুড়িতে
- কোতওয়ালি এবং ধূপগুড়িতে আত্মঘাতী দুই যুবক
- এই নিয়ে রাজ্যে মৃত্যু হল আটজনের
এনআরসি আতঙ্কে রাজ্যে আরও দুই মৃত্যুর অভিযোগ। এবার জলাপাইগুড়ি জেলাতেই একই দিনে আত্মঘাতী হলেন দুই ব্যক্তি। মৃতদের নাম শ্যামল রায় (৪০) এবং সাবের আলি (৩৫)। মৃত শ্যামলবাবু ধূপগুড়ির বাসিন্দা। আর সাবের আলি জলপাইগুড়ির কোতওয়ালি থানা এলাকায় থাকতেন। মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরেই ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ডে ভুল সংশোধন নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা
মঙ্গলবার সকালে প্রথমে শ্যামল রায়ের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। পেশায় দিনমজুর ওই ব্যক্তির ধূপগুড়ি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। মৃতের স্ত্রীর দাবি, শ্যামলবাবুর ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ডে তথ্যগত ভুল ছিল। যা সংশোধন করাতে গত কয়েকদিন ধরেই সরকারি দফতরে ঘুরছিলেন তিনি। তার উপর ডিজিটাল রেশন কার্ডের বিজ্ঞ্প্তি দেখে তিনি আরও ঘাবড়ে গিয়েছিলেন বলেই দাবি মৃতের স্ত্রীর। ভোটার বা আধার কার্ডে ভুল থাকলে এনআরসি তালিকায় নাম বাদ চলে যেতে পারে, এই আশঙ্কাতেই গত কয়েকদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন শ্যামলবাবু।
আরও পড়ুন- একাত্তর সালের কাগজ লাগবে না, এনআরসি আতঙ্ক কাটাতে আশ্বাস মমতার
আরও পড়ুন- বাংলায় শুরু 'সিএবি'র সলতে পাকানো, হিন্দুদের কী হবে, সাফ জানালেন আরএসএস প্রধান
এমনিতেই তাঁর হাঁপানির সমস্যা থাকায় সবসময় কাজ করতে পারতেন না। স্ত্রী ছোটখাটো কাজ করে সংসার চালাতেন। এনআরসি আতঙ্কে আরও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। শেষ পর্যন্ত সোমবার রাতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি।
অন্যদিকে কোতওয়ালি থানা এলাকার বাহাদুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সাবের আলি নামে ওই যুবক বাড়ির কুঁয়োতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন। পরিবারের অভিযোগ, নিজের এবং দুই মেয়ের রেশন কার্ড,আধার কার্ড, ভোটার কার্ডে ত্রুটি সংশোধনের চেষ্টা করেও কিছু করতে পারেননি ওই ব্যক্তি। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন ওই যুবক। তার পরেই এ দিন আত্মহত্যা করেন তিনি।
সোমবার কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, এনআরসি আতঙ্কে এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে মোট ছ' জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই অনুযায়ী, এনআরসি নিয়ে উদ্বেগে এই দুই মৃত্যুর ঘটনা ধরলে রাজ্যে মোট আটটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।
কয়েকদিন আগেও জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে এই এনআরসি আতঙ্কেই অন্নদা রায় নামে আরও এক যুবক আত্মঘাতী হয়েছিলেন বলে খবর। এনআরসি আতঙ্ক যাঁরা মারা যাচ্ছেন, রাজ্য সরকারের তরফে তাঁদের পরিবারকে দু' লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।