সংক্ষিপ্ত
- 'যশ'-র আতঙ্কে কাঁটা মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ীরা
- আম ও লিচু বাগানের মালিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ
- লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা
- উদ্যান পালন দপ্তরও পরামর্শ দেয়নি বলে অভিযোগ
'যশ' এর চরম আতঙ্কে মুর্শিদাবাদ জুড়ে জগৎ বিখ্যাত আম ও লিচু বাগানের মালিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ, ব্যাপক ক্ষতি। ভয়াবহ ঝড় 'যশ' এর আতঙ্কে মুর্শিদাবাদ জেলার জগৎ বিখ্যাত আম ও লিচু চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে চরম ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আপৎকালীন মুহূর্তে পড়ে তাঁরা কী করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। আম বা লিচু গাছ থেকে এখনই তড়িঘড়ি পেড়ে নেওয়া সম্ভব নয়। আবার তা গাছে থাকলে ঝড়ে পড়ে গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এমনকি এখনও পর্যন্ত জেলার উদ্যান পালন দপ্তরও তাদের সঠিক পরামর্শ দিতে পারেনি।
আরও পড়ুন, যশের জেরে দিঘাতে ওয়াচ টাওয়ার ছাপিয়ে জলোচ্ছ্বাস, ভাসছে গাড়ি, বন্ধ করা হল শহরের ফ্লাইওভার
কার্যত চরম দিশেহারা হয়ে দিন কাটাচ্ছেন জঙ্গীপুর মহকুমার অন্তর্গত সামশেরগঞ্জ, ফারাক্কা, রঘুনাথগঞ্জ আইরন, জোত কমল, সেকেন্দ্রা গিরিয়া ,বিস্তীর্ণ এলাকার আম ও লিচু বাগানের মালিকেরা। যদিও সরকারি আধিকরিকদের দাবি, মুর্শিদাবাদে ঝড়ের প্রভাব এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। প্রবল বেগে ঝড় হলে ব্যাপক ক্ষতি হবে। তাই এই দোদুল্যমান অবস্থায় এখনই গাছ থেকে ফল পাড়ার জন্য চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে না। উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিক প্রভাস মণ্ডল বলেন, গুটি লিচু প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। বোম্বাই লিচু পেকে গিয়েছে। এখন তা বাগান থেকে বাজারে পাঠানো হচ্ছে। ঝড় হলে এই লিচু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আম চাষেও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।জানা গিয়েছে, জঙ্গীপুর মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষজন আম ও লিচু চাষের উপর নির্ভরশীল। দু’বছর ধরে করোনার জেরে তাঁদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় আগের মতো বাইরে ফল পাঠানো যাচ্ছে না। তারপর আবার ঝড় আসছে। ফলে চাষিদের দুশ্চিন্তা বেড়ে গিয়েছে। আম চাষি জিয়াউল হক, সারজন শেখ বলেন, বৈশাখী ও গোপালভোগ আম পেকে গিয়েছে। তা বাজারে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু মল্লিকা, ল্যাংড়া বা হিমসাগর গাছে রয়েছে। এই আমগুলি কয়েকদিন পর পাকতে শুরু করবে। তার আগেই তা ঝরে পড়লে চাষিদের সর্বনাশ হয়ে যাবে। চাষের খরচটুকুও উঠে আসবে না"।
আরও পড়ুন, 'যশে ৫১ বাঁধে ভাঙন-ঢুকবে গঙ্গার জল', ডুবতে পারে কি কলকাতা, কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী
ফারাক্কার লিচু চাষি নিতাই দাস, মাতিন মন্ডল বলেন, সব গাছেই বোম্বাই লিচু পেকে গিয়েছে। তা পাড়ার কাজ চলছে। এই অবস্থায় ঝড় হলে কিছু করার থাকবে না। ঝরে যাওয়া লিচুর দাম পাওয়া যায় না। তা বাইরে পাঠানোও যায় না। জলের দরেই বিক্রি করতে হয়। অনেক লিচু বাগানে পড়েই নষ্ট হয়ে যায়। গত বছরও ঝড়ে গাছের ক্ষতি হয়েছিল। এবছর আমের ফলন ভালো হয়েছে। তাই লাভের আশায় ছিলাম। কিন্তু 'যশ' এর আতঙ্কে কী হবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। রাতের ঘুম উড়ে গেছে"।