সংক্ষিপ্ত
- গত রবিবার মুম্বাই থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরে ফিরেছিলেন জেলার ২০জন শ্রমিক
- তাঁদের স্বাস্থ্য়কেন্দ্রে পরীক্ষার পর কোনও উপসর্গ না-পাওয়া ছেড়ে দেওয়া হয়
- তাঁদেরই একজন হলেন কৃষ্ণ কুজুর, প্রতিবেশীরা সংক্রমণের ভয়ে তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেন না
- তাই অসহায় অবস্থায় বাড়ির লাগোয়া জঙ্গলেই তিনদিন ধরে থাকতে হচ্ছে তাঁকে
তাপসী চক্রবর্তী, বালুরঘাট: ভিনরাজ্য থেকে ফিরে গাছের ওপর উঠে কোয়ারেনটাইনে থাকতে হয়েছিল পুরুলিয়ায় শ্রমিকদের। পরে প্রশাসনের সহায়তায় তাঁদের ঠাঁই হয় অন্য়ত্র। ঠিক সেরকম না-হলেও এবার অনেকটা একইরকম ঘটনা ঘটলো দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে।
গোবিন্দপুর এলাকার পরিযায়ী শ্রমিক কৃষ্ণ কুজুর ভিনরাজ্য় থেকে নিজের জেলায় ফিরেও বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না। তাঁর ঠাঁই হয়েছে বাড়ির লাগোয়া একটি জঙ্গলে। জানা গিয়েছে, গত রবিবার মম্বাই থেকে কুড়িজন শ্রমিকের একটি দল গাড়ি ভাড়া করে বালুরঘাটে এসে পৌঁছন। তাঁদের মধ্য়েই ছিলেন কৃষ্ণ কুজুর। বালুরঘাট খাসপুর গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁর স্বাস্থ্য় পরীক্ষা করা হয়। সেখানে কোনওরকম উপসর্গ না-পাওয়ায় তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর এর পরেই ঘটে বিপত্তি।
পাড়ায় ফেরার পর প্রতিবেশীর জানতে পারেন, কৃষ্ণ ফিরেছেন মুম্বাই থেকে। তাই বাড়ি ঢুকতে বাধা দেন পড়শিরা। তাঁদের ধারণা, যদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন কৃষ্ণ, তাহলে রোগ ছড়িয়ে পড়বে। তাই পাড়ায় তাঁকে থাকতে দেওয়া হবে না। এই পরিস্থিতিতে পাড়ার লোকের বিরুদ্ধে যেতে ভয় পান পরিবারের লোকেরা। তাই তাঁর ঠাঁই হয় বাড়ির লাগোয় এক জঙ্গলে।
তিনদিন ধরে ওই জঙ্গলেই পড়ে রয়েছেন কৃষ্ণ। সেখানেই কোনওরকমে মশারি টাঙিয়ে রাত কাটাচ্ছেন তিনি। বাড়ির লোকের অভিযোগ, কৃষ্ণকে খাবার দিতে গেলেও তাতে বাদ সাধছেন প্রতিবেশীরা। কার্যত অচ্ছুত করে রাখা হয়েছে তাঁকে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় আমফানের ভ্রকূটিতে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এভাবে খোলা আকাশের নিচে পড়ে রইলে একটা বিপদ ঘটে যেতে পারে যে কোনও মুহূর্তে। এই পরিস্থিতে পরিবারের দাবি, প্রশাসন হস্তক্ষেপ করুন।