সংক্ষিপ্ত
বিজেপিকে টেক্কা দিতে পুরভোটে তৃণমূলের ভরসা মুর্শিদাবাদে 'প্রমিলা ব্রিগেড'। 'সিমপ্যাথি' ভোট আদায়ের 'স্ট্র্যাটিজি' নামে কটাক্ষ বিরোধীদের।
বিজেপিকে (BJP) টেক্কা দিতে পুরভোটে (Municipal Elections) তৃণমূলের ভরসা মুর্শিদাবাদে 'প্রমিলা ব্রিগেড' ( TMC Pramila Brigade)। 'সিমপ্যাথি' ভোট আদায়ের 'স্ট্র্যাটিজি' নামে কটাক্ষ বিরোধীদের।মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের কাছে পাখির চোখ আসন্ন পুরো নির্বাচন। অথচ সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে (WB Assembly ELection) জিয়াগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় বিজেপির কাছে ভরাডুবি হয়েছে শাসক দলের। আর সে ক্ষেত্রে নিজেদের পুরাতন মাটি ফিরে পেতে আগাম ভোট কৌশল গ্রহণ করে জিয়াগঞ্জ পুরসভায় ১৭ টি ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রমিলা ব্রিগেড গড়ে তুলতে 'প্রমিলা বাহিনী' তৈরি করে প্রতিটি বাড়ির গৃহস্থের অন্দরে ঢুকে প্রচারের জন্য ময়দানে নামানো হল তৃণমূলের মহিলাদের।
ঘর-সংসার সামলে তৃণমূলের প্রমীলা বাহিনী দেওয়াল দখল থেকে এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকদের অভাব-অভিযোগ শুনছেন। বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা ও প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এদিকে এলাকায় তৃণমূলের মহিলা কর্মীদের দেখে স্থানীয় মহিলারা ঘরের বাইরে বেরিয়ে সমস্যার কথা তুলে ধরছেন। প্রমীলা বাহিনী ময়দানে নামায় পুরসভা এলাকার প্রতিটি পরিবারের মহিলা ভোটাররা আবার তৃণমূলমুখী হচ্ছেন বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছরে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা এলাকায় রাস্তাঘাট, আলো লাগানো হয়েছে। সিসি ক্যামেরায় মুড়ে দেওয়া সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। বাংলা আবাস যোজনায় পুরসভার সাড়ে সাত হাজার পরিবারকে বাড়ি দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে চার হাজার পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ বিভিন্ন জনমুখী সরকারি প্রকল্প মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও গত দু’টি নির্বাচনে পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডেই শাসকদলের পিছিয়ে রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই পুরভোটে হারানো জমি পুনরুদ্ধারে মহিলা কর্মীদের সক্রিয়ভাবে ময়দানে নামানো হয়েছে। পরিবারের কাজকর্ম সামলে প্রমীলা বাহিনী সকালে রং-তুলি নিয়ে দেওয়াল দখলে বেরিয়ে পড়ছে। দুপুরের খাওয়া-দাওয়া ও কাজকর্ম সেরে বাড়ি বাড়িও যাচ্ছে। গল্প-গুজব এবং বৈঠকি আড্ডার মাধ্যমে জনসংযোগে জোর দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে কেন বাসিন্দারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তা বোঝার চেষ্টা করছেন।
পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা কমিটির নেত্রী রাখি মানি বলেন, কমিটিতে ৪০জন সদস্য রয়েছেন। এখন দেওয়াল দখল চলছে। প্রার্থীর নাম ছাড়াই প্রতীক দিয়ে দেওয়াল লিখন শুরু করা হবে। ওয়ার্ডের পাড়ায় পাড়ায় মহিলাদের থেকে ভালো সাড়া মিলছে। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল সভানেত্রী তথা বিধায়ক শাওনি সিংহ বলছেন, মহিলারা খুব সহজেই হেঁসেলে ঢুকে যেতে পারেন। কাজেই জনসংযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাঁদের অ্যাডভান্টেজ রয়েছে। ১৭টি ওয়ার্ডেই ৫০-৫৫জন নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করছি পুরসভা দখলে প্রমীলা বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ । বিরোধীরা এর পাবে নারী শক্তি কাকে বলে"। এদিকে মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ জেলার বিজেপির সভাপতি তথা বিধায়ক গৌরী শংকর ঘোষ বলেন," তৃণমূল বিজেপিকে ভয় পেয়েছে। সেই জন্য আগাম ছলে বলে কৌশলে নানান পথ অবলম্বন করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে এলাকার মহিলাদের সামনে রেখে জনসংযোগের নামে মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে সিমপ্যাথি ভোট আদায়ের স্ট্র্যাটিজি করতে চাইছে শাসক দল। মানুষ এলাকায় তৃণমূলকে চেনে। এসব করে তৃণমূলের লাভ হবে না। সৎ সাহস থাকলে সকলকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার দিক রাজ্য সরকার তাহলেই এলাকায় তৃণমূলের অবস্থা শোচনীয় হয়ে যাবে"।