সংক্ষিপ্ত
বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যর দাবি শাসক দল তৃণমূল-কংগ্রেসের লোকেরাই এই কাজ করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুরুলিয়া মফঃস্বল থানার পুলিশ।
জঙ্গলমহল(Jangal Mahal) নয় এবার খোদ পুরুলিয়া মফঃস্বল থানা এলাকায় মাও নামাঙ্কিত পোস্টার(Maoist Poster in Purulia) ঘিরে ছড়াল চাঞ্চল্য। পুরুলিয়া ২ নম্বর ব্লকের পিঁড়রা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাকির বন গ্রামের ভারতীয় জনতা পার্টি থেকে নির্বাচিত গ্রাম পঞ্চায়েতে সদস্য অশ্বিনী কুমার মাহাতোর বাড়িতে মাও নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধার করল পুরুলিয়া(Purulia) মফস্বল থানার পুলিশ। এ ছাড়াও পিঁড়রা অঞ্চলের লোহার সোল গ্রামের একজন তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকের বাড়ির দেওয়াল থেকেও উদ্ধার হয় মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার। বিজেপির পঞ্চায়েত(Panchayet) সদস্যর দাবি শাসক দল তৃণমূল-কংগ্রেসের(Trinamool-Congress) লোকেরাই এই কাজ করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুরুলিয়া মফঃস্বল থানার পুলিশ।
ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপি থেকে নির্বাচিত সদস্য অশ্বিনী কুমার মাহাতো জানান, “কাল গভীর রাতে তিনটি বোমা ফাটার আওয়াজ পাই। আওয়াজ পেয়ে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি একটা মোটরসাইকেল পুরুলিয়া টাউনের দিকে যাচ্ছে,এর মিনিট দশেক পরে লোহার সোলের কাছ থেকে দুটি আওয়াজ পাই। রাতে খোঁজাখুঁজির পর সেরকম কিছু দেখতে না পেলেও সকালে উঠে দেখি আমার বাড়ির দেওয়ালে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার লাগানো আছে।” অশ্বিনী মাহাতো আরও জানান, “ তবে পোস্টার ঘিরে অনেক প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে। মনে হচ্ছে দিন কয়েক আগে পিঁড়রা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার ডাক দেওয়া হয়েছিল। গত ২২সে নভেম্বর অনাস্থায় প্রধানের বিপক্ষে আমারা রায় দিই। চার দলের সদস্যদের নিয়ে প্রধানের বিপক্ষে তৈরি হয়েছিল একটি মোর্চা। এই দলে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ২জন সদস্য। বিজেপির ৩জন সদস্য। সিপিএমের ২ জন সদস্য। কংগ্রেস থেকে ছিলেন ১ জন সদস্য।পিঁড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১৫ জন নির্বাচিত সদস্যের মধ্যে ৮জন প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার পক্ষে রায় দেওয়ার জন্যই মাওবাদীদেরর নাম করে পোস্টার দেওয়া হয়েছে বলে মনে হয়।”
আরও পড়ুন-একাই লড়ছে কংগ্রেস, বেশির ভাগ আসনেই মুখোমুখি লড়বে বামের সাথে
এদিকে বিষয়টি নিয়ে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া জানান, “আমাদের রাজ্য সরকার যেভাবে মাওবাদীদের পুনর্বাসন প্যাকেজ দিয়েছে, তাতে এই জেলায় আর মাওবাদীদের কোনও অস্তিত্ব নেই। বিশেষ করে পুরুলিয়া শহর ঘেঁষা এই সব এলাকায় মাওবাদী পোস্টার দেওয়ার তো কোন প্রশ্নই নেই। ওই এলাকায় বেশ কিছু বিজেপি নেতাকর্মী আমাদের তৃণমূল কংগ্রেসের দলে যোগদান করার জন্য বিজেপি পরিকল্পনা করে এসব করছে। পিঁড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতে যে অনাস্থা হয়েছিল তা হাইকোর্টের নির্দেশে আটকে রয়েছে।”
আরও পড়ুন -২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় বদল, ঘোষণা নতুন প্রার্থীর নাম
এদিন দুটি পোস্টারে একটি হিন্দি শব্দ লেখা হয়েছে বাংলা ভাষায়। অন্য একটি পোস্টারের ওপরে হিন্দি এবং নীচে বাংলা এবং একটি মানুষের ছবি এঁকে তাতে ক্রস চিহ্ন দেওয়া হয়েছে। মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টারের ওপরে স্পষ্টতই লেখা রয়েছে "মাওবাদ জিন্দাবাদ। আপ হোগা মত কা তান্ডব। লোহার সোল কা মেম্বার ওর বলরামপুরকা মেম্বার জেয়সা অশ্বিনী কুমার কা সাথ জো হোগা ওইসেই তুম লোগো কা সাথ হোগা। পৃথিবী মে কই এইসা মহাপুরুষ নেহি হেঁয় আপ লোগো কা বাঁচা সাকে। ইসবার আওয়াজ দিয়া আর দুসরিবার আওয়াজ নেহি হোগা। সিধি মতকা নিন্দ সোলা দেঙ্গে।" তবে পোস্টারের বিষয়ে জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার দেওয়া হলেও পোস্টারে অসংখ্য বানান ভুল রয়েছে। হিন্দি উচ্চারণ ঘিরেও রয়েছে ভুলে ভরা। সাধারণত এভাবে মাওবাদীরা পোস্টার দেয়না। পোস্টার ঘিরে রহস্য রয়েছে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।