সংক্ষিপ্ত
- ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু নবান্নে
- ১৬ দফা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছেন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি
- সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসকদের কাছে বার্তা পৌঁছেছে
- করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি শুরু
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় যশ। আছড়ে পড়তে পারে রাজ্যে। এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের সঙ্গে যুঝতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে নবান্ন। বৃহস্পতিবার মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর ১৬ দফা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছেন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসকদের কাছে বার্তা পৌঁছেছে।
নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে মে মাসের ২১ তারিখ থেকে প্রতিটি জেলাসদর বা মহকুমায় ও ব্লকে খোলা হবে কন্ট্রোল রুম। যাবতীয় তথ্য সেখান থেকে সাধারণ মানুষ পাবেন। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের যাবতীয় ছুটি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকারী দলের জন্য প্রয়োজনীয় পিপিই কিট, মাস্ক, গ্লাভস মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের বাড়ি থেকে নিরাপদে সরিয়ে স্থানীয় স্কুল বা কলেজে আশ্রয় নেওয়ার ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য, স্যানিটাইজার, জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখার কথা জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়। উপকূলবর্তী এলাকায় বিশেষ ভাবে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আহত হওয়া মানুষের জন্য হাসপাতালগুলিতে কিছু শয্যা খালি রাখার কথা জানানো হয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় যশ যে সুন্দরবন সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় যথেষ্ট তান্ডব চালাতে পারে, তা অনুমান করা হচ্ছে। সেই কারণে ইতিমধ্যেই নানাধরনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।
ইতিমধ্যেই ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবার সরকারি আধিকারিকরা একাধিকবার বৈঠক করেছেন নিজেদের মধ্যে। মহকুমাশাসক রবিপ্রকাশ মিনাও একাধিকবার বৈঠক করেছেন বিডিও সহ অন্যান্য আধিকারিকদের সাথে। পাশাপাশি ব্লক স্তরেও বিডিওরা পঞ্চায়েত প্রধান ও অন্যান্য আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করেছেন।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন উপকূল এলাকায় পুলিশের তরফ থেকে মাইকিং শুরু হয়েছে। বাসন্তী, ঝড়খালি, গোসাবা, সুন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশ গ্রামে গ্রামে ঘুরে, নদীর পাড়ে গিয়ে মাইকিং করছে। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি যাদের মাঠে ধান বা অন্যান্য ফসল রয়েছে তা যতটা সম্ভব তুলে নিতে বলা হয়েছে কৃষি দফতরের তরফ থেকে। অন্যদিকে নদীবাঁধের যেখানে বেহাল দশা সেগুলিকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লে মানুষজনকে নিয়ে যে ফ্লাড সেন্টার বা রেসকিউ সেন্টারে রাখা হবে সেই এলাকাগুলি স্যানিটাইজ করা হচ্ছে সরকারি উদ্যোগে।
অন্যদিকে জেলাশাসক পি উল্গানাথন ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সমস্ত মহকুমাশাসক, বিডিও ও অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। জনস্বাস্থ্য কারগরি দফতরের আধিকারিকদের প্রচুর পরিমানে জলের পাউচ মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বিদ্যুৎ দফতরকে পর্যাপ্ত বিদ্যুতের খুঁটি ও ট্রান্সফর্মার মজুত রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া মাটি কাটার যন্ত্র, গাছ কাটার যন্ত্র সহ বিভিন্ন জরুরী সামগ্রী প্রচুর পরিমানে মজুত রাখতে বলা হয়েছে। যে এলাকায় নদীবাঁধ দুর্বল রয়েছে সেই এলাকায় নদীবাঁধগুলিকে দ্রুত মেরামতির নির্দেশও সেচ দফতরকে দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি জেলার সমস্ত প্রান্তে ফ্লাড সেন্টার, স্কুল বাড়িকে তৈরি রাখা হয়েছে, যাতে ঝড় সত্যি সত্যিই আছড়ে পড়লে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। সমস্ত উপকূল এলাকার মানুষকে সেখানে সরিয়ে আনা যায় সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া, প্রচুর ত্রিপল ও শুকনো খাবার মজুত রাখা হচ্ছে। জেলাশাসক বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা সমস্ত রকমভাবে প্রস্তুত রয়েছি। বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”