সংক্ষিপ্ত

  • নদিয়ার শান্তিপুরের হরিপুরের ঘটনা
  • ক্রেতা না পেয়ে ফসল পুড়িয়ে দিলেন আখ চাষি
  • পলাশির চিনি কল বন্ধ হওয়ায় সমস্যায় অনেকেই
  • বিক্রি না হওয়ায় মাঠেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আখ


প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা ব্যয় করে চার মাসের পরিশ্রমে ষোল কাঠা জমিতে আখ ফলিয়েছিলেন। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও নিজের ফসল বেচকে পারছিলেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত চরম হতাশা আর ক্ষোভে ক্ষেতের ফসল ক্ষেতেই পুড়িয়ে ফেললেন নদিয়ার এক চাষি। সূত্রের খবর, আখ চাষ করে নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের অনেক আখ চাষিই ফসল ফলিয়ে বিক্রি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। 

যে আখ চাষি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁর নাম নিরঞ্জন বিশ্বাস। নদিয়ার শান্তিপুর থানার হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মেথিরডাঙ্গার জামতলা গ্রামের বাসিন্দা নিরঞ্জনবাবু  এ বছর ষোল কাঠা জমিতে আখ চাষ করেছিলেন। প্রায় পাঁচ বছর ধরে আখ চাষ করছেন তিনি। কিন্তু এবছর কোনওভাবেই নিজের ফসল বেচতে পারেননি ওই কৃষক। আর সেই রাগ থেকেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন- চরম হতাশা, ১৬ কাঠা জমির ফসল পুড়িয়ে দিলেন নদিয়ার কৃষক, দেখুন ভিডিও

হতাশ নিরঞ্জনবাবু বলেন, 'কোনও ক্রেতাই আসছেন না। এর আগেও আখ চাষ করেছি, কিন্তু এরকম কখনও হয়নি। বিক্রিও হচ্ছে না, আখও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেউ আখ কিনতেই চাইছিলেন না। প্রায় চল্লিশ হাজার টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। এখন কীভাবে কী করব, কিছুই বুঝতে পারছি না।'

প্রতি বছরই নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের বহু কৃষক আখ চাষ করেন। গত বছর পর্যন্ত ফসল বিক্রি করতে তাঁদের সেভাবে সমস্যা হয়নি। কারণ রাজ্যের পলাশির বেসরকারি চিনি কলই চাষিদের থেকে অধিকাংশ আখ কিনে নিত। কিন্তু গত বছর মালিকপক্ষের সমস্যায় সেই চিনি কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এ বছর প্রচুর পরিমাণ আখ উৎপাদিত হলেও দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। ছোটখাটো কয়েকটি গুড় কারখানায় আখ বিক্রি করলেও প্রচুর আখ ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। কুইন্টাল প্রতি যেখানে একশো চল্লিশ থেকে একশো আশি টাকা পর্যন্ত আখের দাম উঠত, অনেক জায়গাতেই তার এক তৃতীয়াংশ দামও পাচ্ছেন না কৃষকরা। 

চাষিদের দাবি, আখ চাষ করলে এমনিতেই জমির উর্বরতা অনেকটা কমে যায়। ফলে একবার যে জমিতে আখ চাষ হয়, সেই জমিতে বিকল্প কোনও চাষ করতে যাওয়াটাও সমস্যার। ফলে, নিরঞ্জনবাবুর মতো আখ চাষিরা এখন উভয় সংকটে পড়েছেন।