সংক্ষিপ্ত

করোনা আবহে ফের খুঁচিয়ে উঠল নারদকাণ্ড

গ্রেফতার ২ মন্ত্রী, ১ বিধায়ক-সহ ৪ হেভিওয়েট নেতা

এই গ্রেফতারি বেআইনি বলে দাবি বিধানসভার স্পিকারের

এই বিষয়ে রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিমান মুখোপাধ্যায়

 

করোনা আবহে ফের খুঁচিয়ে উঠল নারদকাণ্ড। সোমবার সকালে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়ের মতো রাজ্যের অন্যতম দুই মন্ত্রী, কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র, এবং শোভন চট্টোপাধ্য়ায়কে গ্রেফতার করল সিবিআই। রীতিমতো বাড়ি থেকে তাদের তুলে আনা হয় নিদাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে, তারপর গ্রেফতার। কিন্তু, ৩ বিধায়কের গ্রেফতারি সম্পূর্ণ বেআইনি বলে দাবি করলেন বঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুললেন তিনি।

সিবিআই সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁদের নারদ কাণ্ডের তদন্ত শেষ হয়েছে। এই বিষয়ে তারা রাজ্যপালের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়। তারপরই একদিনে ৪ অভিযুক্ত নেতাকে গ্রেফতার করার পরিকল্পনা করা হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সহায়তা নিয়ে অভিযান চালানো হয় সোমবার সকালে। গ্রেফতার করা চারজনকেই আজ ব্যাঙ্কশাল কোর্টে এক বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হবে, চার্জশিট পেশ করবে সিবিআই।

তবে, এদিন এই গ্রেফতারি প্রক্রিয়াটাই বেআইনি বলে দাবি করেছেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, যে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারমধ্যে যে ৩ সদ্যজয়ী বিধায়ক। কোনও সাংসদকে গ্রেফতার করতে গেলে, যেমন লোকসভার স্পিকারের অনুমতি লাগে, তেমনই কোনও বিধায়ককে গ্রেফতার করতে হলে, বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি নিতে হয়। কিনতু, এদিনের গ্রেফতারির বিষয়ে তাঁর কাছে অনুমতি নেওয়া তো দূর, জানানো পর্যন্ত হয়নি বলে দাবি করেছেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিধানসভার স্পিকার আরও জানিয়েছেন, এর আগে, নারদ মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট সুষ্পষ্টভাবে সিবিআই-এর কাছে জানতে চেয়েছিল, চার্জশিট পেশের বিষয়ে স্পিকারের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কি না। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, কোনও অনুমোদনই নেওয়া হয়নি। স্পিকারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগও করা হয়নি।

রাজ্যপালের অনুমোদন নেওয়াটাও সিবিআই-এর পক্ষ থেকে বেআইনি পদক্ষেপ বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, আদালত এই বিষয়ে শেষ সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু, অধ্যক্ষের পদ খালি থাকলে একমাত্র রাজ্যপালের অনুমোদন নেওয়ার প্রশ্ন আসে। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে তিনি অধ্যক্ষের পদে ছিলেন। তাই, এই ক্ষেত্রে রাজ্যপালের অনুমোদন দেওয়ার এক্তিয়ার নেই।

বিধানসভার অধ্যক্ষ এই দাবি করলেও, আইনজীবীরা বলছেন, রাজ্যপালের অনুমোদন নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা নেই। রাজ্যপাল এই বিষয়ে সিবিআই-কে অনুমোদন দিয়েছিলেন মমতা মন্ত্রীসভা শপথ নেওয়ার ঠিক আগের দিনই। সেইসময় কিন্তু, বিধানসভার স্পিকারের পদটি খালিই ছিল। তাই এর পিছনে রাজনীতির মোচর থাকলেও, আইনত কোনও বাধা নেই।