সংক্ষিপ্ত
ক্রমাগত সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নতুন করে বেশ কিছু এলাকাকে চিহ্নিত করে কন্টেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে ব্লক প্রশাসনের তরফে। পাশাপাশি গোসাবা, ছোট মোল্লাখালি, সাতজেলিয়া এলাকায় আজ থেকে টানা তিনদিন বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
করোনার সংক্রমণ বাড়ছে সুন্দরবনের গোসাবায়। একসময় দ্বীপাঞ্চল হওয়ার কারণে গোসাবায় করোনা থাবা বসাতে পারেনি। অন্যতম সুরক্ষিত এলাকা ছিল এটি। কিন্তু, বর্তমানে প্রতিদিনই গোসাবায় বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, অগাস্টের শুরুতে যেখানে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ছিল শূন্য, সেখানে গত রবিবার পর্যন্ত অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২। ক্রমাগত সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নতুন করে বেশ কিছু এলাকাকে চিহ্নিত করে কন্টেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে ব্লক প্রশাসনের তরফে। পাশাপাশি গোসাবা, ছোট মোল্লাখালি, সাতজেলিয়া এলাকায় আজ থেকে টানা তিনদিন বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
গোসাবা ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে ক্রমাগত সংক্রমণ বেড়ে চলায় চারটি জায়গায় নতুন করে কন্টেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে। গোসাবা বাজার থেকে গোসাবা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল পর্যন্ত, রাঙাবেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রানিপুর পূর্ব পাড়া, রাজাপুর পশ্চিম পাড়া এবং ছোট মোল্লাখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের হেঁতালবাড়ি দক্ষিণ পাড়া এই চারটি এলাকাকে কন্টেইনমেন্ট জোনের আওতায় আনা হয়েছে। সোমবার থেকেই গোসাবা ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে এলাকায় মাইকিং শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন- টাকা দিলে করোনা টিকার কুপন দিচ্ছেন পুলিশ অফিসার, রায়গঞ্জে বিক্ষোভ স্থানীয়দের
আরও পড়ুন- নির্দিষ্ট স্লট বুকিং ছাড়াই মিলবে টিকা, নয়া নিয়ম কলকাতা পুরসভার
প্রশাসনের দাবি, বাইরে থেকে বহু মানুষ গোসাবায় আসা-যাওয়া করছেন। আর সেই কারণেই বাড়ছে সংক্রমণ। বিশেষ করে গোসাবার বহু মানুষ রাজপুর সোনারপুর পুরসভা এলাকাতেও বসবাস করেন। পুরসভা এলাকায় সংক্রমণ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। সেখান থেকে বহু মানুষ প্রায়দিনই গোসাবায় আসা-যাওয়া করছে। সেই কারণে গোসাবাতেও বাড়ছে সংক্রমণ। অন্যদিকে, সরকারিভাবে সুন্দরবনের পর্যটন বন্ধ থাকলেও বহু পর্যটক সুন্দরবনের গোসাবা, পাখিরালয়, দয়াপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় দু-একদিনের জন্য ছুটি কাটাতে আসছেন। এর ফলেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া পরিযায়ী শ্রমিকরা ক্রমাগত আসা যাওয়া করছেন গোসাবায়, সে কারণেও বাড়তে পারে সংক্রমণ।
আরও পড়ুন- চোখ রাঙাচ্ছে করোনার তৃতীয় ঢেউ, শিশুদের জন্য PICU তৈরি হচ্ছে রায়গঞ্জ মেডিকেলে
আরও পড়ুন- "রং দেখে ত্রাণ বিলি, তালিবানি মানসিকতা রাজ্য সরকারের", আক্রমণ অগ্নিমিত্রার
এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য গোসাবায় সেফ হোমগুলিকে নতুন করে তৈরি রাখা হচ্ছে। আগের তুলনায় টেস্টের পরিমাণও বাড়ানো হচ্ছে। যে সব মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন তাঁদের সঙ্গে প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর্মীরা যোগাযোগ করছেন। সংক্রমিত ব্যক্তি কারও সংস্পর্শে এসেছিলেন কিনা সে বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি গোসাবার দ্বীপাঞ্চলে প্রবেশের খেয়াঘাটগুলিতে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। খেয়ায় চড়তে গেলে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনও মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে পথে নেমেছে। প্রয়োজনে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। সংক্রমণ বাড়ায় এলাকার মানুষও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। যেভাবে, সংক্রমণ বাড়ছে তাতে দুয়ারে সরকারের যে ক্যাম্প চলছে সেখান থেকে এই সংক্রমণ আরও ছড়াতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকেই।