সংক্ষিপ্ত

বাঁকুড়ার শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ও বিয়ের খবরে নিন্দার ঝড়। গোটা বিষয় অস্বীকার বিধায়কের। 

বিজেপি বিধায়ক বিয়ে করেছেন এই খবর ঘিরে শোরগোল। সামাজিক মাধ্যমে দ্রুতহারে ছড়িয়ে পড়েছে এই সংবাদ। বাঁকুড়ার শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA) চন্দনা বাউরীর (Chandana Bauri) বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক (extramarital affairs) ও বিয়ের (marriage) খবর চাউর হতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে স্থানীয় থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। চন্দনা বাউরী শালতোড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের শালতোড়া বিধানসভা কেন্দ্রের  চন্দনা বাউরীকে প্রার্থী করে চমক এনেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব।  

একেবারেই হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা প্রত্যন্ত গ্রামের এই মহিলা কে প্রার্থী করেই নজির গড়েছিল বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন চন্দনা বাউরী। চন্দনার দিন মজুরের জীবন থেকে বিধায়ক হয়ে ওঠার কাহিনী রীতিমতো হিট করে সংবাদ মাধ্যমে। ভাঙ্গা ঘর থেকে এক মহিলা রাতারাতি হয়ে ওঠেন বিজেপির আইডল। লাইম লাইটের সেই চন্দনা বাউরী জড়িয়ে পড়লেন বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কে। তার জেরে বিয়ে করার কাণ্ডেও নাম জড়িয়ে গেল তাঁর। 

অভিযোগ নিজের স্বামী ও তিন সন্তানকে ছেড়ে চন্দনা বাউরী বিয়ে করে ফেলেন দলের কর্মী ও তাঁর গাড়ির চালক কৃষ্ণ কুন্ডুকে। সুত্রের খবর বৃহস্পতিবার রাত্রি দুটো নাগাদ মাথা ভর্তি সিঁদুর পরে গাড়ির চালক কৃষ্ণ কুন্ডুকে নিয়ে সটান হাজির হয়ে যান গঙ্গাজলঘাটি থানায়। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, সেখানে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বিধায়ক জানান স্থানীয় কালী মন্দিরে তারা দুজনে বিয়ে করেছেন, তাঁদের নিরাপত্তা দিতে হবে। 

তারপর রাতভর থানাতেই চন্দনা বাউরী হবু স্বামী কৃষ্ণ কুন্ডুর সঙ্গে ছিলেন। সকাল থেকে এই খবর চাউর হতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। সোশ্যাল মিডিয়াতে কৃষ্ণ কুন্ডুর সাথে বিধায়কের ছবিও ভাইরাল হয়ে যায়। বিধায়কের কান্ডে নিন্দার ঝড় উঠে চারিদিকে। যে মহিলা বিধায়ককে নিয়ে মানুষের গর্ব ছিল তারাও বিধায়কের এই কান্ডে রীতিমতো হতবাক। সকাল বেলায় সন্তানদের নিয়ে থানায় পৌছন চন্দনার স্বামী শ্রাবণ বাউরী। এরপরেই নিজের নিরাপত্তা রক্ষীর ঘেরাটোপের মধ্যে মাথা ঢাকা দিয়ে স্বামী শ্রাবণের সাথে বাড়ি ফিরে যান চন্দনা।

থানা থেকে বেরিয়ে যাবার সময় কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি বিধায়ক চন্দনা বাউরী। বাড়ি পৌছে স্বামী শ্রাবনকে পাশে বসিয়ে ফেসবুকে বক্তব্য রাখেন তিনি। তাঁর দাবি, কুৎসা ও অপপ্রচারের জন্য এইসব করা হচ্ছে। স্বামীর সাথে একটা পারিবারিক ঝামেলা হয়েছিল, তার জন্য রাতে থানায় যান তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে তা মিটিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। 

তাই বিধায়কের কথায় বিয়ে বা বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক নিয়ে যা শোনা যাচ্ছে তা শুধু মাত্র অপপ্রচার। যে ছবি ভাইরাল হয়েছে তা ফেক বলেও দাবি করেন বিধায়ক। তবে প্রশ্ন উঠছে যে, তার যদি এই প্রতিক্রিয়া হয় তাহলে সকালে থানা থেকে বেরিয়ে যাবার সময় সংবাদ মাধ্যমকে এড়িয়ে গেলেন কেন বিধায়ক। যে কথা বাড়ির সামনে স্বামীকে পাশে বসিয়ে বলতে পারলেন, সেই কথা থানার সামনে বলতে কি সমস্যা ছিল, তা নিয়ে রীতিমতো রহস্য তৈরি হয়েছে। 

প্রশ্ন উঠছে তাহলে রাতে কি সত্যিই বিয়ে করেছিলেন বিধায়ক? বাড়ি গিয়ে মগজ ধলাইয়ে তা অস্বীকার করে বসলেন তিনি। এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকায়। 

অন্যদিকে কৃষ্ণ কুন্ডুর স্ত্রী রূম্পা কুন্ডু গঙ্গাজলঘাটি থানায় তাঁর স্বামী ও বিধায়ক চন্দনা বাউরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি জানান ওই দুজন বেআইনী ভাবে বিয়ে করেছেন। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে গঙ্গাজলঘাটি থানার পুলিশ।