সংক্ষিপ্ত
- দিনের প্রথমার্ধ্বে দলনেত্রীর সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন শাসকদলের বিধায়ক
- দিনের দ্বিতীয়ার্ধ্বে সেই সমালোচনাকেই কার্যত লুফে নিল বিরোধী শিবির
- শাসকনেতার অভিযোগ ছিল, মুখ্য়মন্ত্রী আমলাদের কথা শুনেই মনে করছেন উন্নয়ন হচ্ছে
- কিন্তু দলের নেতা-বিধায়কদের মতামত নিচ্ছেন না
দিনের প্রথমার্ধ্বে যে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন জেলার শাসকনেতা তথা তৃণমূল বিধায়ক, দ্বিতীয়ার্ধ্বেই তাকেই কার্যত লুফে নিল বিরোধী শিবির। আমলারা মুখ্য়মন্ত্রীকে বলছেন জেলায় উন্নয়ন হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা ঠিক আছে আর মমতা বন্দ্য়োরপাধ্য়ায়ও তাঁদের কথা শুনেই চলছেন। জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের কথা শুনতে চাইছেন না। এমনটাই অভিযোগ ছিল ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর। শাসকনেতার এই বিস্ফোরক অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিকেলে জেলা বিজেপির সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, "আমরা তো আগেই বলেছিলাম জেলায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। এলাকার বিধায়ক আমাদের কথাকেই সঠিক প্রমাণ করলেন। "
কী বলেছিলেন ইসলামপুরের বিধায়ক?
ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের সামনে কার্যত অভিযোগ করেছিলেন, জেলায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে দিন-কে-দিন। পাশাপাশি জেলায় উন্নয়নের কাজও হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী বিধায়কদের বলার সুযোগ না দেওয়ার পরেও তিনি ওই মিটিংয়ে (কালিয়াগঞ্জে এক প্রশাসনিক বৈঠকে) উঠে দাঁড়িয়ে কয়েকটি অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি করেন বিধায়ক। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নাকি তাঁকে সময় দেননি। তাঁকে আসল পরিস্থিতি জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিমান ধরার তাড়া আছে বলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে থামিয়ে দেন বলে তাঁর ক্ষোভ। এদিন সাংবাদিকদের সামনে কোনও রাখঢাক না-করেই তিনি বলেন, "আমি মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দিচ্ছি, এরপর থেকে জেলার বিধায়ক ও নেতৃত্বের সাথে কথা না বলে আর তাঁদের থেকে বাস্তব পরিস্থিতি না জেনে প্রশাসনিক আধিকারিকদের প্রশংসা করে দরাজ সার্টিফিকেট দেবেন না।"
শুধু তাই নয়। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে তিনি রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন আব্দুল করিম চৌধুরী। যার প্রেক্ষিতে জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, "উনি কীসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন তা স্পষ্ট হল না। জেলাশাসক বা পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে তা যথাযথ জায়গায় জানানো যেতেই পারে। কিন্তু রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার প্রশ্ন ওঠে কেমন করে।"
এদিন বিকেলে আব্দুল করিম চৌধুরীর বক্তব্য়ের প্রেক্ষিতে জেলা বিজেপি সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, "মাননীয়া মুখ্য়মন্ত্রী জেলায় এসে জেলাশাসক আর পুলিশ সুপারের প্রশংসা করে গেলেন। ওঁদের মাধ্য়মেই নাকি জেলাতে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। অথচ তাঁরই দলের বিধায়ক যখন কিছু বলতে গেলেন, তখন তা শোনা হল না। আমরা এতদিন বলে আসছিলাম আমাদের জেলায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। আমাদের জেলা বঞ্চিত। এখানে উন্নয়ন হল ফাঁকা আওয়াজ। এদিন তাঁরই দলের বিধায়ক এই কথাকেই প্রমাণ করলেন।"