সংক্ষিপ্ত
স্থানীয়দের অভিযোগ, টানা বৃষ্টির ফলে এলাকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। নেতা-মন্ত্রীরা এলাকা পরিদর্শন করছেন। কিন্তু, গঙ্গার ভাঙন বন্ধ করার জন্য তাঁরা কিছুই করছেন না।
টানা বৃষ্টির জেরে ভাঙন দেখা দিয়েছে মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী নিমতিতা সহ একাধিক এলাকায়। গঙ্গার জল বেড়ে যাওয়ার ফলে একাধিক গ্রামে প্রবেশ করছে জল। চোখের সামনেই বিঘার পর বিঘা জমি, বাগান-সহ কাঁচা ঘরবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে গঙ্গার জলে। সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়েছে নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা। বিপদের আশঙ্কায় ঘর থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন অনেকেই। এই পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাচ্ছেন নেতা-মন্ত্রীরা। কিন্তু, তাতে কোনও লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, টানা বৃষ্টির ফলে এলাকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। নেতা-মন্ত্রীরা এলাকা পরিদর্শন করছেন। কিন্তু, গঙ্গার ভাঙন বন্ধ করার জন্য তাঁরা কিছুই করছেন না। ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁরা বলেন, "দ্রুত ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করুক সরকার। না হলে কয়েক দিনের মধ্যে সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।"
এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক কৃষ্ণচন্দ্র মুণ্ডা জানিয়েছেন, যে সব জায়গায় ভাঙন দেখা দিতে পারে বলে মনে হচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- ভবানীপুরের গুরুদ্বারে জনসংযোগে ‘ঘরের মেয়ে’, কৃষকদের আন্দোলনে পাশে থাকার আশ্বাস মমতার
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধানঘরা এলাকায় সকাল থেকে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। জল বাড়ার ফলে গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় দেখা যায় ফাটল। সকাল থেকে প্রায় ৬০ মিটার এলাকাজুড়ে ধস নামে। খাদের কিনারায় থাকা বাড়িগুলি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে আতঙ্কিত বাসিন্দারা সকাল থেকেই প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে নিরাপদ স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
আরও পড়ুন- মুর্শিদাবাদে ফুচকা খেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭০ জন, আটক বিক্রেতা
পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের হিরানন্দপুর ও ধুসরীপাড়ায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাকা বাড়ি সহ প্রায় শতাধিক বাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদ মালদহ সংযোগ রক্ষাকারী কুলিদিয়ার ও পাড়সুজাপুর চরে নতুন করে ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। পাড় সুজাপুরে ভাঙনে ২৫ মিটার চাষের জমি তলিয়ে গিয়েছে।
এছাড়া হাবি কলোনিপাড়া থেকে খাসপট্টি পর্যন্ত বেশ কয়েক মিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু জায়গা জলের তলায় চলে গিয়েছে। স্থানীয় কৃষক মমিন শেখ বলেন, "গতবছর বাড়ি-ঘর, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বিঘার পর বিঘা জমি তলিয়ে গিয়েছিল। তাই ভাঙন দেখা দিলেই আমরা আতঙ্কে থাকি।"
এদিন ফরাক্কায় ঝাড়খণ্ড থেকে আসা পাহাড়ি জলের তোড়ে নিশিন্দ্রা কাটান বাঁধ ফের তলিয়ে গিয়েছে। ফলে প্রায় ফের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন কয়েকশো ট্রাকচালক। বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, "আমি পাড়সুজাপুর পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়া, নিশিন্দ্রা কাটানে জলের স্রোত বেশি রয়েছে। ওখানে স্থায়ী সেতুর প্রয়োজন রয়েছে। সেই নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার জন্য আমি রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাব।"