সংক্ষিপ্ত

কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর পঞ্চম ব্যাটালিয়নে কাজ করতেন মৃত পুলিশকর্মী। আচমকাই শুক্রবার রাইফেল থেকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে করেয়া থানা এলাকায় হাঁটতে থাকেন তিনি। তার গুলিতে প্রাণ চলে যায় দুই নিরপরাধ পথচারীর। তারপরই আত্মহত্যা করেন তিনি। তার এই আচরণের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না।

না কোনো জঙ্গি নয়। কোনো থ্রিলার মুভির প্লটও নয়। শহরের রাস্তায় এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে দুই নিরপরাধের প্রাণ নিয়েছেন একজন পুলিশকর্মী। নাম চোডুপ লেপচা। তিনি কালিম্পং এর বাসিন্দা ছিলেন। কিছু সপ্তাহ আগেও তিনি বেকবাগানের কাছে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের আউটপোস্টের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে বহাল ছিলেন। ঘটনাটির সময় তিনি কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর পঞ্চম ব্যাটালিয়নে কর্মরত ছিলেন। শোনা গিয়েছে শুক্রবারই ওই নিরাপত্তাকর্মী বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের আউট পোস্টে কাজে এসেছিলেন।  


শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় আচমকাই কাঁধে রাইফেল নিয়ে আউট পোস্ট থেকে বেরিয়ে আসেন চোডুপ। কাঁধের রাইফেল নেমে আসে তার হাতে। ধ্বংস লীলায় মেতে ওঠেন তিনি। ক্রমাগত রাইফেল থেকে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে কড়েয়া থানা এলাকার লোয়ার রেঞ্জ রোড দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এগোতে থাকেন তিনি। অন্যান্য দিনের মতোই অ্যাপ ক্যাব বাইকে চড়ে লোয়ার রেঞ্জ রোড ধরে এপিসি রোডের দিকে আসছিলেন এক মহিলা আরোহী। চোডুপের গুলি মহিলার মাথা ভেদ করে বেরিয়ে যায়। গুলি ছাড় দেয়না বাইকের চালককেও। তার গায়েও গুলি এসে লাগে। বাইকের আরোহী ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এরপরই চোডুপ নিজের গলার কাছে রাইফেল চালিয়ে দেন। তৎক্ষণাৎ মৃত্যু হয় তারও। আরও অনেকেরই গুলি লেগেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি প্রায় ১০ থেকে ১৫ রাউন্ড গুলি চালিয়েছিলেন চোডুপ। শুক্রবার পার্ক সার্কাসের কাছেই ঘটে যাওয়া এই ভয়ঙ্কর ঘটনায় স্বভাবতই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শোনা গিয়েছে ঘটনায় আহত বাইক চালক আপাতত বিপদমুক্ত। গুলি যদিও এখনও বিধে রয়েছে তার পিঠে। মৃত হওয়ার দাসনগরের বাসিন্দা রিমা সিংহকে নিয়ে তিনিই সেদিন বাইক চালাচ্ছিলেন। তার পিঠে গুলি এসে লাগবার পর তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই টের পান পিছনের আরোহী বাইক থেকে পড়ে গিয়েছেন। কিন্তু নিজের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে বাইক তিনি থামাননি। পার্ক সার্কাস মোড়ে পুলিশের গাড়ি দেখতে পেয়ে তিনি বাইক থামান। তারাই তাকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এলোপাথাড়ি গুলি চালনার ঘটনায় বশিরের পাশাপাশি আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের বাসিন্দা মহম্মদ সরফরাজও আহত হয়েছেন। যদিও তার অবস্থা বশিরের মত গুরুতর নয়।

আরও পড়ুনঃ 

পার্ক সার্কাসে গুলি- আত্মঘাতী পুলিশ কর্মী, মরার আগে গুলিতে মাথা ফুঁটো করে দিলেন মহিলার

ভিগনেশ কে ২০ কোটি টাকার বাংলো উপহার নয়নতারার!

রিকসা চালিয়ে এবার দার্জিলিং-এর পথে সত্যেন, সিয়াচেন জয়ের পর এবার লক্ষ্য টাইগার হিল
কেনো তিনি এই কাজ করলেন? কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার প্রবীন ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘চোডুপ লেপচা সম্ভবত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সেই কারণেই তিনি এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে নিজেও আত্মঘাতী হলেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।’’শহরের রাস্তায় ঝকঝকে দিনের আলোয় ভর দুপুরবেলা এরম ভয়ানক বিভীষিকা আগে কখনো দেখেনি শহরবাসী। রক্ষকই যদি হত্যালীলায় মেতে ওঠে তবে রক্ষা করবে কে?