সংক্ষিপ্ত
পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন। সবথেকে বেশি হিংসার অভিযোগ কোচবিহার, বীরভূম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা এবং পূর্ব বর্ধমানে।
পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বঙ্গে 'আইনের শাসন' নয়, বরং 'শাসকের আইন' চলেছে। রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন ও বিভিন্ন সূত্র থেকে তারা ভোট পরবর্তী হিংসার তথ্য সংগ্রহ করেছে। বঙ্গে ভোট পরবর্তী সময়ে হিংসার জেলা-ওয়ারি হিসাব বলছে, সবথেকে বেশি হিংসার অভিযোগ এসেছে কোচবিহার জেলা থেকে। তার প্রায় গায়ে-গায়েই রয়েছে বীরভূম। আর সবথেকে কম অভিযোগ এসেছে দার্জিলিং জেলা থেকে, মাত্র ১টি।
সমস্ত উত্স থেকে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে হিংসার অভিযোগ খুব বড় মাত্রায় এসেছে কোচবিহার (৩২২), বীরভূম (৩১৪), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২০৩), উত্তর ২৪ পরগনা (১৯৬), কলকাতা (১৭২) এবং পূর্ব বর্ধমান (১১৩) জেলায়। প্রশাসনিক জেলাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ রয়েছে বারুইপুর পুলিশ জেলা। এছাড়া বসিরহাট পুলিশ জেলা, ব্যারাকপুর পুলিশ জেলা এবং ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলাতেও ব্য়াপকহারে হিংসার ঘটনা ঘটেছে।
তবে, এই ছবিটাও সম্পূর্ণ নয়। কারণ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের গুন্ডাদের পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনকও ভয় পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। রাজ্য প্রশাসনের প্রতি তারা আস্থা হারিয়েছে। যৌন অপরাধের শিকার হয়েও অনেকে মুখ বন্ধ করে রয়েছেন, আরও ক্ষতি হওয়ার ভয়ে। যে যে জায়গায় তদন্ত কমিটির প্রতিনিধিরা অনুসন্ধানে গিয়েছেন সেই সেই জায়গা থেকেই দেখা গিয়েছে, মোট অভিযোগের অনেক কম অপরাধ নথিবদ্ধ হয়েছে পুলিশের খাতায়।
আরও পড়ুন - ভোট পরবর্তী হিংসা - গ্রেফতার ৩ শতাংশেরও কম, ডিআইজির পাঠানো রিপোর্টেই বেআব্রু বঙ্গ পুলিশ
আরও পড়ুন - 'বঙ্গে আছে শাসকের আইন' - মমতা'কে চরম অস্বস্তিতে ফেলতে পারে NHRC'র তদন্ত রিপোর্ট
আরও পড়ুন - ভোট পরবর্তী হিংসায় তছনছ চোপড়া, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এল কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সব মিলিয়ে বাংলার মোট ৩১১টি হিংসার অভিযোগ সশরীরে গিয়ে খতিয়ে দেখেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তারমধ্যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে মাত্র ১৮৮টি ক্ষেত্রে। অর্থাৎ ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুলিশ এফআইআর-ই নেয়নি। আবার যে ১৮৮টি এফআইআর করা হয়েছে, তারমধ্যে ৩৩টি, অর্থাৎ মোট অভিযোগের ২৭ শতাংশ ক্ষেত্রে অপরাধের মাত্রা কমিয়ে দেখিয়েছে পুলিশ। আর মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের দেখে অভিযোগ জানাতে এসেছেন, কিন্তু, সময়াভাবে তাদের অভিযোগ নিতে পারেননি কমিশনের সদস্যরা, এমন অভিযোগের সংখ্যাটা বিস্ময় জাগানো - ২৮৬৯! এই পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যাচ্ছে, জেলা ওয়ারি যে হিসাব রয়েছে, তা সম্পূর্ণ নয়।