সংক্ষিপ্ত
- সোনারপুরে এইচআইভিকাণ্ডে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি
- এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে এই শাস্তির দাবি
- কীভাবে একজন আইনরক্ষক আইন ভাঙলেন, উঠেছে প্রশ্ন
- ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিত শূর
আরও পড়ুন- প্রচারের লালসা, 'এইচআইভি হোম কাণ্ডে' মিমি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তোপ দিলীপের
পয়লা বৈশাখের দিন সোনারপুরে একটি হোমে এইচআইভি পজিটিভ শিশুদের নিয়ে যে ভাবে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং থেকে লকডাউনের নিয়ম এবং শিশুদের ফেসিয়াল রেকোগনিশন-কে পাবলিকলি প্রচার করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা করেছেন এই মানবাধিকারকর্মী। কীভাবে মিডিয়া এবং বহিরাগতদের নিয়ে যাওয়া হল হোমের ভিতরে, তাতেও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এটা গর্হিত অপরাধ বলেই তাঁর মত। রঞ্জিত শূর জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় পদে পদে শিশুর অধিকারকে লঙ্ঘিত করা হয়েছে। লকডাউনের যে আইন, তাকে অমান্য করা হয়েছে। এমনকী, সুপ্রিমকোর্ট এইচআইভি পজিটিভ-দের পরিচয় নিয়ে যে নির্দেশিকা দিয়েছে তা মানা তো হয়নি উল্টে শিশুগুলিকে প্রকাশ্য প্রচারের সামনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। অথচ একজন এসপি যিনি একটি জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার শীর্ষে তিনি নিজেই এইসব আইন লঙ্ঘন করেছেন। আর এর জন্য ওনার বিরুদ্ধে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট লাগু করা উচিত। লকডাউন আইন অমান্য করায় ইতিমধ্যের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বহু মানুষ শাস্তি পেয়েছে। অনেককে পুলিশ জেলেও পুড়েছে। তাহলে বারুইপুর পুলিশ জেলার এসপি-র বিরুদ্ধেও এটা বলবৎ হওয়া উচিত। আর এক্ষেত্রে রশিদ মুনির খানের আরও বেশি শাস্তি হওয়া উচিত, কারণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার তিনি একটি স্থানের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা, সুতরাং তিনি আইন ভাঙা মানে তার শাস্তির মাত্রা আরও বেশি হওয়া উচিত। এশিয়ানেট নিউজ বাংলা-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই প্রতিক্রিয়া ঝড়ে পড়েছে রঞ্জিত শূরের মুখ থেকে।
পশ্চিমবঙ্গেও ডিজিস্টার ম্যানেজমেন্টের দোহাই দিয়ে অসংখ্য লোককে ধরা হয়েছে। জেলে ভরা হয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ মানলে যিনি আইনের রক্ষক তিনি যদি আইন ভাঙেন তাহলে তার আরও বেশি সাজা হওয়া উচিত। পুলিশ বলে রশিদ মুনির খান ছাড় পেয়ে যেতে পারেন না। সেই কারণ এক্ষেত্রে রশিদ মুনির খানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন- লকডাউন নিয়মকে তুড়ি মেরে এইচআইভি শিশুদের নিয়ে অনুষ্ঠান, বিতর্কে সাংসদ মিমি ও এসপি
এমনকী, এই ঘটনায় জড়িত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তীব্র ঊষ্মা প্রকাশ করেছেন রঞ্জিত শূর। তিনি অভিযোগ করেছেন, এই দেশে সবকিছু আইন-ই সবই সাধারণ মানুষের জন্য। অথচ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা আইন ভাঙলে কিছু নয়। তাঁরা যেন সবকিছুর ঊর্ধ্বে বলেও মন্তব্য করেন রঞ্জিত শূর। তাঁর মতে, কোনও রাজনৈতিক নেতা এই পরিস্থিতিতে বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান করতে পারেন, এতে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। কিন্তু, একজন সাধারণ মানুষ এমন কাজ করলে তখন তাঁকে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়। যেখানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রবণতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা বারবার করে বলছেন যে যাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা কম তাদের সাবধানে থাকতে। বেশি করে আইসোলেশনের নীতি অনুসরণ করতে। সেখানে কীভাবে এইচআইভি আক্রান্ত শিশুদের-কে এক দঙ্গল বহিরাগতদের সংস্পর্শে আসতে দেওয়া হল? ই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রঞ্জিত সূর। গোটা ঘটনায় হোমের মালিক কল্লোল ঘোষকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন রঞ্জিত শূর। তাঁর দাবি, অবিলম্বে এই হোমের লাইসেন্স বাতিল হওয়া দরকার। কারণ, এই মানুষটির হাতে এইচআইভি পজিটিভ শিশুরা কোনওভাবেই নিরাপদ নন। মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিত শূরের মতে, অনুষ্ঠানটি অন্যভাবে ভাবা যেত। এমনকী, শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি চিন্তা করতে হত। তা না করে যে টা হয়েছে তা কোনওভাবেই মেনে নিতে রাজি নন তিনি। এই বিষয়ে শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের হস্তক্ষেপ জরুরি বলেও তিনি মনে করছেন।