সংক্ষিপ্ত

মামলা নিয়ে অধ্যক্ষ বলেন মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। তবে, শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীরা ফের জবাব দিতে চান।

বিধানসভা ভবনে (Assembly) মুকুলের (Mukul Roy) সদস্যপদ খারিজ এবং পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (Public Accounts Committee) চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ নিয়ে অভিযোগের শুনানি ছিল। শুনানি শেষে বেরিয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কড়া সমালোচনা করলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন অধ্যক্ষ বলেন ‘ওনার মতো বিরোধী দলনেতা আমি দেখিনি। আইন, বিধানসভা কারও প্রতি বিশ্বাস নেই ওনার। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে নানা মন্তব্য করা একেবারেই কাম্য নয়।’

এদিন মামলা নিয়ে অধ্যক্ষ বলেন মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। তবে, শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীরা ফের জবাব দিতে চান। মৌখিকভাবে জবাব দেওয়ার জন্য, তাঁদের সময় দিয়েছেন অধ্যক্ষ। কয়েকমাস ধরেই মুকুল রায়ের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তুলেছে বিজেপি।

আরও পড়ুন, Madan Mitra: 'মতুয়াদের সংঘবদ্ধতাকে নষ্ট করে দিয়েছে BJP', কল্যাণ ইস্যুতে কী বললেন মদন

এই নিয়েই বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে শুনানি চলে। মুকুল রায়ের আইনজীবীরা দাবি করেন,  মুকুল রায় এখনও বিজেপিতে রয়েছেন। সে সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দাখিল করা হয়েছে। এদিন পাল্টা সওয়াল করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীরা। বুধবার এই বিষয়ে মুখ খোলেন শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা আশা করছেন, অধ্যক্ষ নিষ্পত্তি করবেন। আমি সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানির জন্য অপেক্ষা করছি এবং সুপ্রিম কোর্টে সংবিধানের সম্মান রক্ষিত হবে বলে আশাবাদী, এখানকার প্রক্রিয়া নিয়ে আমার খুব একটা আশা নেই।

আরও পড়ুন, অভিষেক-কল্যাণ ইস্যুর পর কোন পথে দল, 'বিশেষ বার্তা'য় কী জানালেন সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্যায়

শুভেন্দুর এই প্রতিক্রিয়াকেই সমালোচনা করেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন বিরোধী দলনেতার কারও প্রতি বিশ্বাস নেই। না আছে আইনের উপর। না আছে বিধানসভার উপর। আমি বিচারকের মতো কাজ করছি। 

এর আগে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন মুকুল। এরপরই তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। তবে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেননি তিনি। আর তা নিয়েই শুরু হয় যাবতীয় বিতর্ক। তারপর মুকুলকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। তার মাধ্যমে বিতর্ক আরও বেড়ে যায়। এরপরই মুকুলের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। পাল্টা এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার।

পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে মুকুলের নিয়োগ সম্পূর্ণ ‘অবৈধ’। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিল বিজেপি। আসলে এনিয়ে প্রথম থেকেই আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার প্রেক্ষিতেই বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় মামলা করেছিলেন। এরপর মুকুলের দলত্যাগের বিষয়ে স্পিকারকে সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছিল হাইকোর্ট। কিন্তু, বিধানসভার বিষয়ে স্পিকারের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করা যায় না, এই যুক্তি দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুল রায়ের সদস্যপদ খারিজের আবেদন নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিচারপতি এল নাগেশ্বর ও বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ।