সংক্ষিপ্ত
- নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল চেহারা নিয়েছে রাজ্য়
- দিনে দুপুরে ভাঙা হচ্ছে স্টেশন থেকে বাস
- এই পরিস্থিতিতে জনগণের সম্পত্তি রক্ষা করে চলেছেন এক প্রবীণ
- ৮২ বছরের এই প্রবীণের নাম রাজ কুমার পাল
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল চেহারা নিয়েছে রাজ্য়। দিনে দুপুরে ভাঙা হচ্ছে স্টেশন থেকে বাস। হিসেব বলছে, সারা রাজ্য়ে হিংসায় কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। বাংলায় এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জনগণের সম্পত্তি রক্ষা করে চলেছেন এক প্রবীণ। ৮২ বছরের এই প্রবীণের নাম রাজ কুমার পাল।
সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় তিনিই আদর্শ শিক্ষক। প্রতিদিন নিজে হাতে পরিষ্কার করেন, ব্রিজ থেকে ফলক সবই। রাস্তার লোক দেখলে অনেকেই পাগল বলে বৃদ্ধকে। কিন্তু তাতে ততটা কান দেন না এই আশি উর্ধ্ব স্কুল শিক্ষক। কেউ কিছু বললে বলেন, এ সবই তাঁর সন্তানের মতো। তাই অপরিষ্কার দেখলে বসে থাকতে পারেন না।
চারিদিকে যখন বাস,রেল স্টেশন-এর মতো জনগণের সম্পত্তি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে,তখন একদম অন্য চিত্র নদিয়ার ধানতলায়। দীর্ঘ ২৪বছর ধরে নিয়মিত একটি নদী ব্রিজকে পরিচর্যা করে চলেছেন রাজ কুমার পাল। নদীয়ার ধানতলা থানার আড়ংঘাটার বাসিন্দা পালবাবু। ৯০-এর দশকে আড়ংঘাটার যুগোল কিশোর এলাকায় চূর্ণী নদীর ওপর একটি ব্রিজের দাবিতে লড়াই করেছিলেন এই প্রবীণ। কার্যত একাই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর কাছে দরবার করেছিলেন ব্রিজের জন্য।
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সাফল্যও এসেছে। তৈরি হয়েছে যুগল কিশোর সেতু। আর সেই সেতুই গত ২৪ বছর ধরে পরিচর্যা করছেন এই বৃদ্ধ। প্রত্যেকদিন নিয়ম করে সকাল-বিকেলব্রিজ পরিষ্কার করেন। পাশাপাশি ব্রিজের কোনও মেরামোতির দরকার পড়লে পূর্ত দফতরকে নিজেই খবর দিয়ে সারাইয়ের ব্যবস্থা করেন ব্রিজের। ছোটদের কাছে সেতু দাদু বলেই পরিচিত এই বৃদ্ধ। বড়রা অবশ্য তাঁকে ব্রিজের চৌকিদার বলে ডাকেন। কিন্তু সেসব নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না রাজ কুমার পাল।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগের মতো আর শরীর দেয় না। আপাতত নিজের যোগ্য উত্তরসূরী খুঁজছেন রাজ কুমার। পরবর্তী প্রজন্ম যাতে জনগণের সম্পত্তি রক্ষায় সজাগ হয়, সেই দিকেই এখন নজর রয়েছে তাঁর। প্রবীণদের সঙ্গে নবীনদের সেতু বন্ধনে আপাতত তিনিই পথ প্রদর্শক।