- পক্ষীকূল বাঁচাতে অভিনব উদ্যোগ
- অপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকে তৈরি কৃত্রিম পাখির বাসা
- পাখিদের জীবনধারণের উপায় বের করলেন এই ব্যক্তি
- ছয় বছরের সমীক্ষার পর খুঁজে পেলেন এক অনন্য উপায়
উত্তম দত্ত, হুগলি- মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যে তিনটি মৌলিক চাহিদা একান্তভাবে প্রয়োজন তা হল খাদ্য-বস্ত্র ও বাসস্থান। তবে মানুষ নিজের জন্য এইসবকিছুর সংস্থান করতে পারলেও বনের পশুপাখিরা এই নুন্যতম সংস্থান করতেও অনেক সময়ে ব্যর্থ হয়। তবে পশু-পাখিদের ক্ষেত্রে বস্ত্র না লাগলেও খাদ্য ও বাসস্থানের তো একান্ত প্রয়োজন। আর এই জোগানই এখন অনিশচয়তার মুখে। কারণ চারিদিকে ইট-পাথরের কংক্রিটের পাহাড় গড়ে ওঠার জন্য শহরাঞ্চলে বলি হচ্ছে বহু গাছপালা। যার ফলে ঘরছাড়া হচ্ছে বহু পাখি।
আর এইসব গৃহহীনদের মাথার ছাদ গড়ে দিয়েছেন হুগলির চণ্ডীতলার হিন্দোল আহমেদ। ৩১ বছরের হিন্দোলের ধ্যান-জ্ঞান এখন এই পাখীরাই। চণ্ডীতলা থানা এলাকাতেই ছবির মতো সুন্দর একটি গ্রাম আকুনি। সেই আকুনি গ্রামের বাসিন্দা হিন্দোল পাখি বড় ভালবাসেন। আর এই বিষয়েই তাঁর মাথায় প্রথম যে বিষয়টি নাড়া দিয়েছিল, তা হল চারিদিকে বৃক্ষছেদন যে হারে বাড়ছে তাতে করে ঘুলঘুলি বা গাছের কোটর-সবেরই অভাব। সেইসঙ্গে আকাশ-ছোঁয়া ফ্ল্যাটবাড়ির ভিড়ে পাখিদের নিশ্চিন্ত বাসস্থানের আজ বড়ই অভাব। আর এই অভাবের তাড়না থেকেই বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়েছে। আর সেই কারণেই পাখিদের আশ্রয়স্থল নিয়ে নানা ভাবনা চেপে বসেছিল তাঁর মাথায়।
আর সেই কারণেই বেশ কয়েক বছর ধরে পাখির বাসার ওপর সমীক্ষা চালান তিনি। কোন পাখি কোথায় থাকতে পছন্দ করে, কোন পাখির বাসা কত উঁচুতে থাকে, তার বাসায় ঢোকার জন্য কতটা ফুটো থাকে- সব কিছু সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতেই তাঁর লেগে গিয়েছিল প্রায় ৬ বছর। ইন্টারনেটে এই বিষয়ে বিস্তারিত পড়াশোনা করে সে। আর তার পর থেকেই শুরু হয় তাঁর হাতে-কলমে পাখির বাসা গড়ার প্রচেষ্টা। ফেলে দেওয়া হেলমেট, ভাঙ্গা প্লাস্টিকের বালতি, ফলের বাক্স, কাটা টিন- ইত্যাদি জিনিস দিয়েই পাখির বাসা তৈরি করেছে সে। ইউক্যালিপটাস, কৃষ্ণচূড়া, আম, ছাতিম, শিশু, শিরিষ-এর মতো গাছে কৃত্রিম বাসা তৈরি করে পাখিদের ডিম পাড়ার জন্যও সুবন্দোবস্ত করেছে সে। এখন সেখানে গেলে টিয়া, লক্ষীপেঁচা, কুঠুরে পেঁচা, কাল পেঁচা, কাঠঠোকরা, শালিক, বালিহাঁস-এইসব পাখিই দেখতে পাওয়া যায় ।
হিন্দোল বাবুর কথায়, তিনি পাখিদের ওপর বেশ কিছু প্রজেক্টের কাজও করেন আর তাতে করেই যেটুকু উপার্জন হয় সেই দিয়েই এই সব খরচ বহন করেন তিনি। শুধু তাই নয়, গ্রামের বন্য প্রাণীদের সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করে এমন এনজিও-র সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন তিনি। পাখিদের সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করতে সারা দেশেই তাঁর আনাগোনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
অর্থনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তিহার জেল থেকেই টুইট করে জানালেন পি চিদম্বরম
হিন্দোলেরবাবু আরও জানান যে, তিনি জানেন কোন পাখি কোথায় থাকতে পছন্দ করে, যেমন কুঠুরে পেঁচা ২০ ফুটের ওপরে থাকতে পছন্দ করে এবং তাদের বাসার প্রবেশ পথটা তিন ইঞ্চি বড় হতেই হবে । আবার লক্ষীপেঁচা দোতলা বাড়ীর ছাদ সমান উঁচু ঘুলঘুলিতে থাকে । বালিহাঁস থাকে পুকুরের কাছাকাছি কোনো উঁচু গাছে। আর হিন্দোলবাবু ঠিক সেরকমই ব্যবস্থা করে থাকে । আর খাদ্যের সংস্থান তারাই করে নেয়। আগামী দিনে আরও কিছু পাখি নিয়ে তিনি পড়াশোনা করছেন বলেও জানান যাতে তাদের জন্যও বাসা তৈরি করে দিতে পারেন তিনি।তিনি আরও চান যে, আগামী প্রজন্মও এগিয়ে আসুক এই ধরনের কাজে যাতে করে অসংখ্য় প্রজাতির পাখি রক্ষা পাবে এবং সেইসঙ্গে পরিবেশের বাস্তুতন্ত্রেও একটা ভারসাম্য বজায় থাকবে।
Read Exclusive COVID-19 Coronavirus News updates, from West Bengal, India and World at Asianet News Bangla.
খেলুন দ্য ভার্চুয়াল বোট রোসিং গেম এবং চ্যালেঞ্জ করুন নিজেকে। கிளிக் செய்து விளையாடுங்கள்
Last Updated Sep 12, 2019, 11:53 AM IST