সংক্ষিপ্ত
- মুর্শিদাবাদের বহু বাসিন্দাই পাটচাষে নির্ভরশীল
- ঘূর্ণিঝড় আসার আগেই পাট চাষীদের হাহাকার
- তার উপর ভোট শেষ হতেই কপালে গভীর চিন্তা
- অভিযোগ, সরকার চাষিদের কথা চিন্তা করে না
ঘূর্ণিঝড় আসার আগেই পাট চাষীদের হাহাকার। একেই রাজ্য জুড়ে চলছে কার্যত লকডাউন। তার উপর ভোট শেষ হতেই কপালে গভীর চিন্তার ভাঁজ নেমে এসেছে মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার পাট চাষীদের। চাষিদের অভিযোগ, সরকার চাষিদের কথা চিন্তা করে না।
আরও পড়ুন, ঘূর্ণীঝড় আছড়ে পড়ার আগেই প্রস্তুত জাতীয় মোকাবিলা বাহিনী, জানুন কোন পথে আসছে 'যশ'
মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি, ভরতপুর, খরগ্রাম, হরিহরপাড়া ও সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই পাটচাষের উপরে নির্ভরশীল। এছাড়া জেলার অন্যান্য এলাকাগুলিতেও পাটচাষ হয়। চাষিদের কাছে থেকে পাট কেনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সংস্থা রয়েছে। তারাই দাম নির্ধারণ করে। কিন্তু চাষিদের অভিযোগ, সরকার চাষিদের কথা চিন্তা করে না। তাদের মাধ্যমে মহাজনরা উপকৃত হয়। কারণ পাট ওঠার সময় চাষিরা দাম পান না। তাঁরা মহাজনদের কাছ থেকে লোন নিয়ে চাষ করেন। তাই জমি থেকে পাট তুলে কম দামে তা মহাজনদের বিক্রি করে দিতে হয়। পরে দাম ওঠে। তখন চাষিদের কাছে আর পাট থাকে না। মহাজনরা তা আড়ত থেকে বেশি দামে বিক্রি করে। বিধানসভা নির্বাচন শেষ হতেই এই বিষয়টি তুলে ধরে তৃণমূল, বিজেপিকে তোপ দাগছেন এলাকার কৃষকেরা । চাষিদের ক্ষোভ রয়েছে।
আরও পড়ুন, আজ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে প্রবল বর্ষণ, এগিয়ে আসছে ঘূর্ণীঝড় 'যশ'
হরিহর পাড়ার পাটচাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, "বিজেপি বা তৃণমূল আদতে কেউই পাট চাষিদের কথা চিন্তা করেনি। এই জেলায় পাটজাত দ্রব্য নিয়ে শিল্প গড়ে উঠতে পারত। তাহলে চাষিদের চিন্তা করতে হতো না। অনেক বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান হতো। বহু বছর ধরে আমরা এই দাবি জানিয়ে এসেছি। কিন্তু লাভ হয়নি"।আর এক চাষি আলমগীর হোসেন বলেন, জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া পাট ওঠার সময়ে দাম বাড়লে চাষিরা উপকৃত হতো। কিন্তু তারা তা করে না। এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে প্রায় ১৮-২২হাজার টাকা খরচ হয়। অনেক সময় খরচও ওঠে না।চাষিরা বলেন, প্রতি বছরই ভোটের আগে পাটের দাম বৃদ্ধির বিষয়টিকে রাজনৈতিক দলের নেতারা হাতিয়ার করেন। কিন্তু ভোট মেটার পর আর কেউ তাঁদের কথা মনে রাখে না। তাঁরা সেই তিমিরেই থেকে যান"।
আরও পড়ুন, কোভিড মোকাবিলায় বাজিমাত, মুর্শিদাবাদে তাক লাগালো 'কন্যাশ্রী' যোদ্ধারা
এদিকে এখন পাটের বীজ ছড়ানোর মরশুম চলছে। চাষিরা মাঠের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। মাঝমাঠে গিয়েই নেতারা চাষিদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে আসছেন। কংগ্রেস নেতা মহফুজ আলম ডালিম বলেন, কয়েক মাস আগে বহরমপুরে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির বৈঠক হয়েছিল। সেখানে পাটের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয়। দিল্লি থেকে আসা কেন্দ্রের নেতারা চাষিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পাট চাষিদের স্বার্থে আমরা লড়াই করি"। তৃণমূল নেতা অশোক দাস বলেন, আমাদের জেলায় কান্দি মহকুমা বাদ দিয়ে সব জায়গাতেই কমবেশি পাট চাষ হয়। রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাট এখানে উৎপন্ন হয়। কিন্তু পাটচাষিদের নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হেলদোল নেই। আমাদের সরকার তাঁদের পাশে থাকে। প্রায়ই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েন। সরকার তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেয়"। মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির বিধায়ক তথা জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, এবছর পাট চাষিরা ভালো দাম পেয়েছেন। আমাদের সরকার সবসময় চাষিদের পাশে থাকে। রাজ্য সরকার কৃষকদের জন্য চালু করা প্রকল্প এরাজ্যে চালু করতে দেয়নি। সেটা হলে চাষিরা আরও বেশি উপকৃত হবেন"।