সংক্ষিপ্ত

২০০৫ সালে মাটি পরীক্ষা পর্ব শেষে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় রেল। ২০১০ সালকে লক্ষ্যমাত্রা রেখে ২০০৬ সালে নসিপুরে ভাগীরথী নদীর উপরে রেলসেতু তৈরির কাজ শুরু হয়।

উত্তর ভারতের (North India) সঙ্গে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) যোগাযোগ স্থাপনের 'গেটওয়ে' আজিমগঞ্জ রেল ব্রিজ (Azimganj railway bridge) চালুর দাবিতে সরব 'নাগরিক কল্যাণ সমিতি'।  সমর্থনে 'ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স'। আর প্রতিশ্রুতি নয়! এবার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে সদর্থক ভূমিকা নিক রাজনৈতিক দলের নেতারা। এই দাবি তুলে আজিমগঞ্জ রেল ব্রিজে দ্রুত চালুর দাবিতে ফের আন্দোলনের পথে নামল মুর্শিদাবাদ বাজার নাগরিক কল্যান সমিতি। এই উপলক্ষ্যে অবস্থান বিক্ষোভ থেকে শুরু করে ডেপুটেশান কর্মসূচি জারি থাকবে বলেই জানায় নাগরিক কল্যাণ সমিতি।

এই বিক্ষোভকে সমর্থন করে এগিয়ে এসেছেন 'ডিসট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের' সভাপতি শেখর মারুঠি, স্বপন ভট্টাচার্য, সাবা মির্জা , অসিত ভট্টাচার্য প্রমুখ।এই ব্যাপারে সংগঠনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ ধর বলেন,“সামান্য কয়েক মিটার কাজ বাকি। জমি জটিলতাও নেই, তার পরেও  পরিকল্পনাটি রূপায়নে গড়িমসি করা হচ্ছে। এর ফলে জেলার সার্বিক উন্নয়ন গতি হারাচ্ছে, ব্যাহত হচ্ছে জেলার পর্যটন শিল্প। এর পরেও রেলের টনক না নড়লে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।” 

পূর্ব রেলের ডিভিশনাল ম্যানেজারের পক্ষে ওই ডেপুটেশান গ্রহন করেন মুর্শিদাবাদ স্টেশান সুপারিন্টেনডেন্ট নন্দ কিশোর সরকার। তবে এই ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে চাননি। দিল্লির সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলার সরাসরি রেলপথে যোগাযোগ স্থাপন এবং জেলার মানুষের সঙ্গে উত্তর   বঙ্গের রেলপথের মাধ্যমে আরও দ্রুত যোগাযোগ গড়ে তুলতে ভাগীরথী নদির উপর নশিপুর – আজিমগঞ্জ রেল ব্রিজ নির্মাণের শিলান্যাস করা হয় ২০০৫ সালে। এর আগে ২০০১ সালের ২১শে জুলাই নসিপুর রেলসেতু নির্মাণের অনুমোদন দেয় ভারতীয় রেলদপ্তর। 

২০০৫ সালে মাটি পরীক্ষা পর্ব শেষে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় রেল। ২০১০ সালকে লক্ষ্যমাত্রা রেখে ২০০৬ সালে নসিপুরে ভাগীরথী নদীর উপরে রেলসেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রেলসেতু নির্মাণের কাজ শেষ করে রেলসেতুর উপরে রেললাইন পাতার কাজও শেষ হয়। রেলসুত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ রেলষ্টেশন থেকে আজিমগঞ্জ জংশন সাড়ে ৬ কিলোমিটার। 

এর মধ্যে মুর্শিদাবাদ ষ্টেশন থেকে নসিপুর পাঁচ কিলোমিটার। এই পাঁচ কিলোমিটারে মাটি ফেলার কাজ শেষ। এখন ডাস্টিং করে স্লিপার বিছিয়ে রেললাইন পাতার কাজ বাকি। ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর তারিখ থেকে শুরু হয় মাহিনগর থেকে মাহিনগর দিয়ারচর পর্যন্ত ১ কিলোমিটারে মাটি ফেলার কাজ এবং আরওবি (রেলওয়ে ওভার ব্রিজ) নির্মাণের কাজ। ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাটি ফেলার কাজ চলে। কিন্তু কয়েকজন জমিদাতা আবার আন্দোলনে নামার কারণে ৭ ফেব্রুয়ারি কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারপরে একাধিকবার কাজ শুরু হওয়ার কথা শোনা গেলেও কাজ এগোয়নি। ফলে হাওড়া বা শিয়ালদহে না গিয়ে সরাসরি উত্তর ভারতে যাওয়ার মুর্শিদাবাদবাসীর স্বপ্ন অপূর্ণ রয়ে গিয়েছে।  

Howrah Tower- ক্রমশ হেলে পড়ছে টাওয়ার, হাওড়ায় বিপদ আটকাতে ছুটল পুরসভা

Murshidabad Transgender-লক্ষ্মীর ভান্ডারে এবার রূপান্তরকামীরাও, উদ্যোগ মমতার

সম্প্রতি এক 'আর টি আইয়ের' উত্তর দিয়ে পূর্ব রেলের পিআরডি বিভাগ লিখিত ভাবে জানিয়ে দেয় ওই ব্রিজ নির্মাণ করতে যে জমির দরকার ছিল, রাজ্য সরকার তা অধিগ্রহন করে ২০১৭ সালে রেলকে হস্তান্তর করে দেয়। তার পরেও কেন ভাগীরথীর উপর রেল ব্রিজকে কাজে লাগিয়ে শিয়ালদহ – লালগোলা শাখার সঙ্গে হাওড়া – আজিমগঞ্জ শাখাকে জুড়ে দেওয়া গেল না সেই প্রশ্ন ফের উসকে দিল এদিনের অবস্থান বিক্ষোভ। 

স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন দাস বলেন, নসিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতু চালু হলে মুর্শিদাবাদ জেলাবাসীর আর্থিক উন্নতি হবে। পূর্ব রেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হিসেবে মর্যাদা লাভ করবে মুর্শিদাবাদ। মুর্শিদাবাদ নগর উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক বলেন, মুর্শিদাবাদ শহরে ভাগীরথীর দুই পাড়কে সেতু দিয়ে জুড়ে দেওয়া হলে পর্যটনের উন্নতি হবে"। এখন দেখার আদৌ উত্তর ভারতের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের যোগাযোগ স্থাপনের গেটওয়ে হিসেবে আটকে থাকা আজিমগঞ্জ সেতুর জট কতদিনে খুলে।

আগামী দিনে উত্তর ভারতের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে গেটওয়ে হিসেবে আজিমগঞ্জ রেল ব্রিজ চালু না করা হলে,  নাগরিক কল্যাণ সমিতির প্রয়োজনীয় রিলে অনশনের নামার হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিয়ে রেখেছে।