সংক্ষিপ্ত

হাঁসখালি কাণ্ডে উত্তেজনার পারদ ইতিমধ্যেই চরমে উঠেছে।  এরই মাঝে নির্যাতিতার বাড়িতে দেখা করতে যান তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এদিন ঘটনা শুনে তাঁর প্রতিক্রিয়া দল এই ধরণের কাজ সমর্থন করে না।  তিনি আরও বলে যে নাবালিকার সম্মতি-সহ যৌন সঙ্গম হলেও তা আইন বিরুদ্ধ।' কেন এমন বললেন তিনি?
 

নদিয়ার হাঁসখালিতে ১৪ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের কাণ্ড ঘিরে রীতিমত উত্তাল রাজ্য। বিরোধী নেতৃত্ব থেকে সমাজের বিশিষ্ট পরিজনেরা সকলেই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তবে এক্ষেত্রে খানিক বিরূপ প্রতিক্রিয়া মিলেছে শাসক দলের তরফে। কিশোরী ধর্ষণ কাণ্ডে সমালোচনা এত দূর বরং এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে শুরু হয় নিন্দার ঝড়। এরই মাঝে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে হাঁসখালিতে পৌঁছন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। 

হাঁসখালিতে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর মহুয়া মৈত্র জানান, 'তাঁর দল এই ধরণের কোনও ঘটনা একেবারেই সমর্থন করে না। নাবালিকার মৃত্যু খুবই দুর্ভাগ্যজনক।' তিনি আরও বলেন, 'এটি অত্যন্ত ধিক্কারজনক একটি ঘটনা। সেই কারণেই ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনা রাজনীতির উর্দ্ধে। পুলিশ তদন্ত করছে, এক্ষেত্রে একেবারে   জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে বলে ও জানান মহুয়া মৈত্র।  পাশাপাশি তিনি এও বলেন যে, 'কোনও নাবালিকার সম্মতিতে ও যদি যৌন সঙ্গম ঘটে আইনের চোখে তা অপরাধ।'

এই ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের ঘটনার স্মৃতিচারণা করেছেন অনেকেই। সোমবার হাঁসখালির গণধর্ষণ কাণ্ডের বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ঊত্তরপ্রদেশের প্রসঙ্গ টেনে বলেন 'এটা কি উত্তরপ্রদেশ না কি? যে আমরা লাভ জেহাদ নিয়ে আলোচনায় বসব? এটা বাংলা। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কোনওরকম রাজনৈতিক রং না দেখেই গ্রেফতার করা হয়েছে।' পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'একটা ছোট ঘটনা ঘটেছে। আপনি রেপ বলবেন, না কি প্রেগনেন্ট বলবেন, নাকি লাভ অ্যাফেয়ার বলবেন? না কি শরীরটা খারাপ ছিল, না কি কেউ চড় মেরেছে? শুনেছি মেয়েটির না কি লাভ অ্যাফেয়ার্স ছিল। বাড়ির লোকেরা সেটা জানত। এখন যদি কোনও ছেলেমেয়ে প্রেম করে,, সেটা আমার পক্ষে আটকানো সম্ভব নয়।'

উল্লেখ্য, হাঁসখালিতে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে। প্রমাণ লোপাটের জন্য তার মৃত্যুর পর দেহ ময়নাতদন্ত না করেই পুড়িয়ে ফেলা হয় বলে ওঠে অভিযোগ। জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে মাদক খাইয়ে ১৪ বছরের ওই কিশোরীকে নেশাগ্রস্ত করে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নদিয়ার হাঁসখালি থানায় ওই তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে নির্যাতিতার পরিবার। বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে অভিযুক্তরা। এদিকে তৃণমূল নেতার ছেলের গ্রেফতারি ঘিরে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। যদিও এই ঘটনার যুক্ত কাউকেই ক্ষমা করা হবে না বলেই জানিয়েছেন মহুয়া মৈত্র।