সংক্ষিপ্ত

প্রতিদিনের মতো রেললাইনের পাশেই সে খেলছিল। সেই সময় হঠাৎই তার চোখ পড়ে যায় ফাটা লাইনের দিকে। বাবা-মায়ের মুখে সে শুনেছিল যে লাইনে ফাটল থাকলে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

রেললাইনের ধারেই সাধারণত খেলা করে সে। সোমবারও তার অন্যথা হয়নি। আর খেলতে খেলতেই হঠাৎ তার চোখ চলে গিয়েছিল রেললাইনে। দেখতে পায় লাইনের মধ্যে ফাটল ধরেছে। তারপর আর একমুহূর্তও দেরি করেনি সে। বাড়িতে গিয়ে মাকে ডেকে নিয়ে এসে লাইনে লাল কাপড় হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। এভাবেই সাত বছরের এক নাবালকের উপস্থিত বুদ্ধির জেরে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচে। রেলের আধিকারিক থেকে শুরু করে যাত্রীরা সবাই ওই নাবালকের প্রশংসা করেছেন। এছাড়াও তার প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার। 

শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বিদ্যাধরপুর ও কালিকাপুর স্টেশনের মাঝে মুকুন্দপুরের কাছে সোমবার দুপুরের ঘটনা। মুকুন্দপুর এলাকার বাসিন্দা দীপ নস্কর। স্থানীয় স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সে। প্রতিদিনের মতো রেললাইনের পাশেই সে খেলছিল। সেই সময় হঠাৎই তার চোখ পড়ে যায় ফাটা লাইনের দিকে। বাবা-মায়ের মুখে সে শুনেছিল যে লাইনে ফাটল থাকলে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে লাইন দিয়ে তখন যাত্রী নিয়ে এগিয়ে আসছি আপ স্টাফ স্পেশাল ক্যানিং লোকাল। যে কোনও ভাবেই ট্রেন থামাতে হবে, মনে মনে এই সংকল্পই করেছিল সে। 

আরও পড়ুন- শুভেন্দুর গড়ে ভাঙন, নন্দীগ্রামে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ শতাধিক কর্মীর

"

তাই এক মুহূর্তও দেরি করেনি দীপ। সোজা ছুটে যায় বাড়ির দিকে। লাইনে ফাটল ধরার কথা মাকে জানায় সে। এরপর ছেলের মুখে বিষয়টি শুনেই প্রতিবেশীদের খবর দেন তার মা। সঙ্গে লাল কাপড় নিয়ে ছুটে আসেন সবাই। এরপর লাইন বরাবর হাতে লাল কাপড় নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন তাঁরা। সবাই মিলে লাল কাপড় ও গামছা মেলে দিয়ে বিপদ সঙ্কেত দেখানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, তাতেও এগিয়ে আসছিল ট্রেন। এরপর সামনে কোনও বিপদ হয়েছে বুঝতে পেরে ব্রেক কষেন চালক। ফাটলের আগেই দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রেন। 

আরও পড়ুন, ওড়নার আড়ালেই চলত মাদক পাচার, বারুইপুরে ১ কোটি টাকার হেরোইন সহ গ্রেফতার মহিলা

 আরও পড়ুন, Sinthi: চরম অমানবিক, প্রবল বৃ্ষ্টিতে প্লাস্টিকে মুড়িয়ে মাকে ফেলে যায় মেয়ে, মৃত্যু বৃদ্ধার

তারপর রেল কর্মীরা এসে দেখেন সত্যিই রেললাইনের উপর ফাটল তৈরি হয়েছে। খবর দেওয়া হয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান রেলের ইঞ্জিনিয়ার। শুরু হয় রেল লাইন মেরামতের কাজ। প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট ধরে চলে মেরামতির কাজ। সেই সময় ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। তারপর ফের শুরু হয় ট্রেন চলাচল। দীপের বুদ্ধির প্রশংসা করেছেন অনেকেই। তার জন্যই যে একটা বিশাল রেল দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে সে কথা স্বীকার করেছেন রেলের আধিকারিকরা। 

 

 

তবে শুধু ট্রেন যাত্রী বা রেলের আধিকারিকরাই নন, আজ টুইট করে দীপের প্রশংসা করেছেন সুভাষ সরকারও। তিনি লেখেন, "সাত বছরের নাবালক দীপ নস্কর দায়িত্ববোধ ও উপস্থিত বুদ্ধির জোরে ক্যানিং লোকালকে দাঁড় করিয়ে কয়েকশো মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে। আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ। তার ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা করছি।"

YouTube video player