সংক্ষিপ্ত
- ভূত ধরতে গিয়ে মানুষের খোঁজ
- পরিবারকেই বেধড়ক মার গ্রামবাসীদের
- ওঝার নিদানে ভূতের খোঁজে ভিন গ্রামে
- ভূত খুঁজতে এসে কী পেল হামলাকারীরা
নিজের পরিবারের সুরক্ষায় অন্যের পরিবারে হামলা। পরিবারে ভূত আছে সন্দেহে গ্রামবাসীদের বেধড়ক পেটাল হামলাকারীরা। যার জেরে মাথা ফাটল একজনের। গুরুতর আহত হয়েছেন আক্রান্ত পরিবারের অন্যরা। এদের মধ্যে সাতজন শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি।
ভূত না পেলেও মানুষ পেলেন বটে। ভূতের সংসার ভেবে সেই মানুষদেরই বেধড়ক পেটালেন আরবান্দি গ্রামের লোকজন। সূত্রের খবর, সম্প্রতি আরবান্দি ১ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের ডংখিরা গ্রামের এক কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়ে। অভিযোগ,অসুস্থ কিশোরীকে ডাক্তারের কাছে না নিয়ে গিয়ে গ্রামে ওঝা ডাকা হয়। অসুস্থ কিশোরীকে দেখে তাকে ভূতে ধরেছে বলে নিদান দেন ওঝা। তিনি আরও জানান, পাশের ছোট জিয়াকুর গ্রামের রাজোয়ার পরিবারেই রয়েছে ভূতের উৎস।
অভিযোগ,এরপরই রবিবার রাতে ডংখিরা গ্রামের কিছু লোকজন লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ছোট জিয়াকুর গ্রামের রাজোয়ার পরিবারের ওপর হামলা চালায়। ব্যাপক মারধর করা হয় পরিবারের সদস্যদের। আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পায়নি মহিলা ও শিশুরাও। অভিযোগ,গ্রামবাসীরা ঠেকাতে এলে আক্রান্ত হয় তারাও। প্রায় ঘণ্টাখানেক তাণ্ডব চালানোর পর গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয় ওই পরিবারকে। অন্যথায় ফল ভালো হবে না বলে হুমকি দেন হামলাকারীরা।
ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে ৭ জনকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। আক্রান্ত পরিবার ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ,ইচ্ছাকৃতভাবে চক্রান্ত করে এই হামলা চালানো হয়েছে। ঘটনায় শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গ্রামে নতুন করে যাতে হামলার ঘটনা না ঘটে তার জন্য এলাকায় পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। হামলাকারীদের খোঁজে সন্ধান শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ। পাশাপাশি কি উদ্দেশে এই হামলা তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আক্রান্ত পরিবারের এক মহিলার অভিযোগ, তাঁদের গ্রামছাড়া করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই কাজ করা হচ্ছে। এরমধ্য়ে গ্রামেরও কারও ইন্ধন থাকতে পারে।
রাজ্য়ের অতীত ঘাঁটলে দেখা যাবে, বহুবার ডাইনি সন্দেহে মহিলাদের মারধর করা হয়েছে। এমনকী জমি হাতাতে মহিলাকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে গ্রামছাড়া করা হয়েছে। কোথাও গ্রামের মাঝেই এক ঘরে করে দেওয়া হয়েছে মহিলাদের। ডাইনি অপবাদে পুড়িয়ে মারার অভিযোগও কম নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পারিবারিক বিবাদ বা পুরোনো শত্রুতা মেটাতে এই কাজ করা হয়েছে। বিশ্ব বিজ্ঞানে ভারতের জয়জয়কারের পাশাপাশি ঘটে চলেছে এই ধরনের ঘটনা।