সংক্ষিপ্ত
- রাজ্য বিধানসভায় পাস বিধান পরিষদ প্রস্তাব
- ১৯৬-৬৯ ভোটে পাশ হয়েছে প্রস্তাব
- সামনে আরও একাধিক ধাপ রয়েছে
- জোর তরজা তৃণমূল বিজেপির মধ্যে
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল বিধান পরিষদের প্রস্তাব। রাজ্য বিধানসভায় বিধান পরিষদের প্রস্তাব সহজেই পাশ হয়েছে। পক্ষে ভোট পড়েছে ১৯৬টি। আর বিপক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র ৬৯টি। তবে এই বিধান পরিষদের প্রস্তাব কার্যকর করতে এখনও অনেকগুলি ধাপ এগিয়ে যেতে হবে। সামনে রয়েছে অনেকগুলি কাঁটা। বিধান পরিষদ গঠনের জন্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ে সই অবশ্যই লাগবে। তারপর কেন্দ্রীয় আইনসভা ঘুরে লোকসভা আর রাজ্যসভায় পাশ করাতে হবে। সংসদের দুই কক্ষের অনুমতির পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর লাগবে। তাহলেই এই রাজ্যে চালু করা যাবে বিধান পরিষদ।
আগেই অবশ্য বাংলার বিধানসভায় বিধান পরিষদ ছিল। ১৯৫২ সালে ৫১ জন সদস্যকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল বিধান পরিষদ। তবে ১৯৬৯ সালে ২১ মার্চ সেটির অপলুপ্তি হয়। যদিও ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর ক্ষমতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধান পরিষদের দাবি তুলেছিল। কিন্তু সেই কাজ তেমন গতি পায়নি। তবে এবার বিধান পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকার কিছুটা হলেও এগিয়েছে বলা যেতে পারে।
বিধান পরিষদের অর্থ হল সংসদের মত রাজ্যের আইন সভায়ও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট হবে। উচ্চ কক্ষটি হবে বিধান পরিষদ। আর নিম্ম কক্ষটি বিধানসভা। উত্তর প্রদেশ, কর্নাটক, বিহার, অন্ধ্র প্রদেশসহ একাধিক রাজ্যেই আইনসভা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট। আবার অনেক রাজ্য়ে আইন সভা এক কক্ষ বিশিষ্ট। এতদিন পশ্চিমবঙ্গে যেমন ছিল।
এদিন আলোচনার সময় বিধান পরিষদের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপির বিধায়করা। শিলিগুলির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সরাসরি প্রশ্ন তোলেন বিধায়কদের ওপর কী ভরসা নেই তৃণমূল নেত্রীর। করোনাকালে বিধান পরিষেদ গঠন করে বাড়তি টাকা কেন খরচ করা হবে- তাও জানতে চান তিনি। কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী জানিয়েছেন বিধান পরিষদ গঠন করতে গেলে প্রায় ১০০ কোটি টাকা খারচ হবে। যদিও বিধানসভার মুখ্যসচেতক তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় জানিয়েছেন, বিধান পরিষদের গুরুত্ব অপরীসীম। তা অনেকেই বোঝে না। রাজ্য বিধানসভায় বাম আর কংগ্রেস শূন্য। যা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়। তবে বাম আর কংগ্রেস নেতাদের ঘুরপথে জায়গা দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে তিনি অবশ্য কিছু বলেননি। কথা প্রসঙ্গে তাপস বাবু জানিয়েছেন প্রথম দফায় আমেঠি থেকে হেরে যাওয়ার স্মৃতি ইরানিকে ঘুরপথই শিক্ষামন্ত্রী করা হয়েছিল। সংসদ বলতে যেতন দুটি কক্ষ বোঝায় তেমনই রাজ্যও বিধান পরিষদ ছাড়া অসম্পূর্ণ।
যদিও বিজেপি বিধায়কদের কথায় এই সময় বিধান পরিষদ মানে অযোথা টাকা নষ্ট করা। তৃণমূলের যাঁরা হেরে গেছেন বিধান পরিষদের মাধ্যমে তাঁদের বিধানসভায় প্রবেশ করানো। শুভেন্দু অধিকারীরের মতে বিধান পরিষদ গঠন করলে পাঁচ বছরে ৫০০-৬০০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। তাই বিধান পরিষদের আগে সরকারি কর্মীদের ডিএ, পরিযায়ী শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চত করা জরুরি। তবে পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। তিনি বলেন, রাজনীতি করব অথচ বাংলার কথা চিন্তা করব না, এটা হতে পারে না। বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশ, কর্নাটকে বিধান পরিষদ রয়েছে। সেগুলি কেন বন্ধ করা হচ্ছে না- তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি বলেনেছেন সংসদে আটকে দেওয়া হবে বলে এখন থেকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে।