সংক্ষিপ্ত
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর চাচির আসল নাম আশা মাহাতো । বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে। বাড়িতে স্বামী ছাড়াও দুই মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে।
ডোমজুড় সোনার দোকান ডাকাতির ঘটনায় নয়া মোড়। উঠে আসছে 'চাচি' নামে এক মহিলার কথা। বিহার পুলিশের এসটিএফ এবং হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা এখনও পর্যন্ত এক মহিলা সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর এই ডাকাতির কিংপিন রবীন্দ্র সাহানি। তাকে সব রকম সাহায্য করে এক গৃহবধূ আশা দেবী ওরফে চাচী। এছাড়াও রয়েছে বিকাশ কুমার ঝা, অলক কুমার পাঠক এবং মনীশ কুমার মাহাতো। এদের মধ্যে অলকের বাড়ি বেগুসারাই। বাকিদের বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে। তবে সবথেকে আলোচিত নাম চাচী।
কে এই চাচী ? কিভাবে তিনি ডোমজুড়ের সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় জড়িয়ে পড়লেন ?
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর চাচির আসল নাম আশা মাহাতো (৪৯)। বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে। বাড়িতে স্বামী ছাড়াও দুই মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে। জানা গেছে ডোমজুড়ের ডাকাতির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রবীন্দ্র সাহানির সঙ্গে অনেকদিন ধরে সে কাজ করছিল। আগে বিহারের গ্যাংস্টার সুবোধ সিংয়ের দলের হয়েও কাজ করত। হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী জানিয়েছেন চাচির পরিচয় চাচি ৪২০। ডোমজুড়ের সোনার দোকানে ডাকাতিতে সব ধরনের লজিস্টিক সাপোর্টের ব্যবস্থা করেছিল ওই মহিলা। ডাকাতদের জন্য সে থাকার বন্দোবস্ত করে দেয়। এছাড়াও পুরনো বাইক কেনার বন্দোবস্ত করে। যে বাইকগুলো ডাকাতির কাজে রেইকি এবং অপারেশনের সময় ব্যবহার করা হয়। এমনকি কিভাবে লুটের পর গয়না নিয়ে পালাতে হবে সেই পরিকল্পনা সঙ্গেও যুক্ত ছিল। সবটাই তিনি করেন বিহারে বসে। এর জন্য তিনি মোটা টাকা পান। সে অপারেশনে যুক্ত মনীশ মাহাতোর আত্মীয়।
পুলিশ সূত্রে খবর ডাকাতির ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত মনীশ মাহাতো চাচির আত্মীয়। সে ডোমজুড়ের আলমপুরে রবীন্দ্র সাহানির সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকত। গত ১১ জুন দুপুর বেলায় ডাকাতির সময় মোট ছয জন ডাকাত অপারেশন করে। সেই দিন ডাকাতরা প্রায় চার কোটি টাকার সোনা এবং হীরের গয়না লুট করে চম্পট দেয়। দোকানে রিভালবার হাতে ঢুকেছিল মনিশ মাহাতো এবং বিকাশ ঝা। বাইরে আরো দুজন অপেক্ষা করছিল। ডাকাতির পর জাতীয় সড়ক ধরে তারা ডানকুনির দিকে চম্পট দেয়। রাস্তায় জামা কাপড় বদলে ফেলে। জনাই স্টেশনে কাছে বাইক ফেলে তাদের কয়েকজন ট্রেন ধরে বিহারে পালায়। হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা সিসিটিভি ফুটেজের পরীক্ষা এবং হিন্দি ভাষায় কথার সূত্র ধরে ডাকাতিতে বিহারের যোগ খুঁজে পান। সিট গঠন করা হয়। সেই সিটের অফিসাররা বিহার পুলিশের এসটিএফ-এর সঙ্গে কাজ করে এই ঘটনার কিনারা করেন। ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে হাওড়ায় নিয়ে আসা হবে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে ডাকাতরা লুটের গয়না বিক্রি করে দিয়েছে এবং তা গলিয়ে ফেলার সম্ভাবনা আছে।
এদিকে ডোমজুড়ের ওই সোনার দোকানের মালিক শংকর দাস জানিয়েছেন গ্রেফতার সম্পর্কে এখনও পুলিশ তাদের কিছু জানায়নি। সোনার গয়না উদ্ধার হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে কিছুই তারা জানেন না। তারা চাইছেন পুলিশ খোয়া যাওয়া গয়না ফেরত এর ব্যবস্থা করুক। ডোমজুড় ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ঘটনার পর ডোমজুড় থানার পক্ষ থেকে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে তারা এখনো আতঙ্কে রয়েছেন। তারা চাইছেন ধৃত ডাকাতদের তাদের দেখানো হোক।