সংক্ষিপ্ত

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক রদবদল হবেই। অভিষেক বলেন, যাঁরা দলের জন্য কাজ করেছে, তাঁদের চিন্তা করতে হবে না।

 

তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)-এর সাংগঠনিক রদবদল হবেই। আবারও ঘোষণা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abjishek Banerjee)। বৃহস্পতিবার নিজের লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় কর্মসূচীতে এমনটাই ঘোষণা করলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ডায়মন্ড হারবারে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি সেবাশ্রম-এর উদ্বোধন করেন অভিষেক। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় দলের সাংগঠনিক পরিবর্তন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। পাশাপাশি তিনি আরজি কর , কেন্দ্রীয় বঞ্চনা আর বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়েও নিজের মতামত জানিয়েছেন। নতুন বছরের দ্বিতীয় দিন থেকেই জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছেন অভিষেক। চলতি বছর কোনও ভোট না থাকলেও ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। আর সেই কারণে নতুন বছরের প্রথম থেকেই সক্রিয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।

তৃণমূলের সাংগঠনির রদবদলঃ

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক রদবদল হবেই। অভিষেক বলেন, 'যাঁরা দলের জন্য কাজ করেছে, তাঁদের চিন্তা করতে হবে না। গাছের পরিচয় তার ফলে। আমি কত দক্ষ, কত অভিজ্ঞ, তা তো ফলাফল দেখলেই বোঝা যাবে।' আগেই অভিষেক জানিয়েছিলেন, দলের সাংগঠনিক রদবদলের একটি খসড়া তিনি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছেন। সেখান থেকেই চূড়ান্ত করা হবে। কিন্তু মমতার কালীঘাটের বাড়িতে তৃণমূল কংগ্রেসের শেষ বৈঠকেও দলের রদবদল নিয়ে কোনও ইঙ্গিত দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই রদবদলের প্রসঙ্গে অনেকেই গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু এদিন ২ জানুয়ারি নিজের লোকসভা কেন্দ্রের অভিষেক আবারও জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রদবদল হচ্ছেই। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসে রদবলের কথা বলেছিলেন অভিষেক। তবে গত বছর তৃণমূলের রদবদল হয়নি। তাই অভিষেকের মন্তব্যের পর আবারও জল্পনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের রদবদল চলতি বছরই হতে পারে।

যদিও এদিনের মঞ্চ থেকে অভিষের দলের ঐক্য নিয়ে সরব হন। তিনি বলেন, 'আমার কাজ দলে দলে ঢুকে জোড়াফুল ফোটানো। রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী আমার কাছে এলে খবর হয়!' তিনি আরও বলেন, 'আমি পার্টির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আমার সঙ্গে রাজ্য সভাপতি বৈঠক করতে পারেন কি পারেন না? আমরা তো সহকর্মী, সহযোদ্ধা।' এদিন অভিষেক বলার চেষ্টা করেন, তৃণমূল কংগ্রেসে কোনও বিভাজন নেই। সকলেই সকলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে।

আরজি কর প্রসঙ্গ

অভিষেক এদিন আরজি কর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, 'বিরোধীরা বলেছিলেন আরজি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চক্রান্ত করেছেন। আর আজ দেখুন। এই প্রসঙ্গ তারা তুলছে না'। তবে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হত্যাকাণ্ডে ইস্যুতে অভিষেক এদিন সরাসরি কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা নিশানা করেন। পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, 'অভিযুক্তকে ধরেছিল কলকাতা পুলিশই।' এদিন অভিষেক আরজি কর ইস্যুতে হাসপাতালের রেফার সিস্টেমের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি জানিয়েছেন ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের ৩০০টি স্বাস্থ্য শিবিরে যাওয়া রোগীদের মধ্যে যাদের প্রয়োজন তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠান হবে। অভিষেক আরও জানিয়েছেন রেফারেল সিস্টেম-এর মাধ্যমে মোট ১২টি হাসপাতালে রোগীদের পাঠান হবে। ১২টি হাসপাতালের মধ্যে এসএসকেএম, ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজের মত হাসপাতালও রয়েছে।

বিজেপিকে নিশানা

ডায়মন্ড হারবারের সভা থেকে অভিষেক বিজেপিকেও নিশানা করেন। তিনি মণিপুর, বাংলাদেশ, আবাস যোজনা-সহ একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেন। তিনি বলেব, 'রাজ্যকে অশান্ত করতে জঙ্গি ঢোকাচ্ছে বাংলাদেশ। তাদের ধরছে রাজ্য পুলিশ।'আবাস যোজনায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, 'শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে পারেনি। কারণ প্রকল্পের টাকা আমাদের দেয়নি। প্রমাণ করতে পারলে আমি ক্ষমা চাইব।'অভিষেক জানান, আগামী ৭৫ দিন ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অন্তর্গত প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় সেবাশ্রয় কর্মসূচি চলবে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।