সংক্ষিপ্ত

আতঙ্কে বিদ্যালয়ে আসতে চাইছে না পড়ুয়ারা। কারণ ভবনের ছাদে ধরেছে ফাটল। বৃষ্টির সময় ঘরের মধ্যে পড়ছে জল।

বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ। দুর্নীতির অভিযোগ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এক বছর আগে তৈরি হওয়া ভবনে ধরে গেছে ফাটল। আতঙ্কে বিদ্যালয়ে আসছে না পড়ুয়ারা। নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী। দেখানো হচ্ছে না সিডিউল। প্রতিবাদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর। যদিও বিষয়টি ইঞ্জিনিয়ার এবং ঠিকাদারের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। বিক্ষোভের ফলে চাঞ্চল্য এলাকায়। কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বার্তা জেলা শাসকের।

মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক এলাকার সাহাপুর গ্রামের সাহাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ। যেখানে পড়ুয়াদের বিদ্যালয় মুখী করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। সেখানে আতঙ্কে বিদ্যালয়ে আসতে চাইছে না পড়ুয়ারা। কারণ ভবনের ছাদে ধরেছে ফাটল। বৃষ্টির সময় ঘরের মধ্যে পড়ছে জল। এক বছর আগেই নির্মাণ করা হয়েছে ঐ ভবন। নির্মাণকার্য এখনো সম্পূর্ণ হয় নি। নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন ঠিকাদার বাদরুজ্জামান। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছিল অভিভাবকদের মধ্যে। এই নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার জন্য অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে এসেই চক্ষু চরকগাছ তাদের। আরেকটি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চলছে ওই বিদ্যালয়ে।

রাজ্য সরকার অধীনস্থ সংস্থা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেডের ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দে হচ্ছে ওই কাজ। কিন্তু অভিভাবকদের অভিযোগ অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। বালি সিমেন্ট থেকে শুরু করে লোহার রড প্রত্যেকটাই খুব খারাপ মানের ব্যবহার করা হচ্ছে। সাথে সঠিক ভাবে নিয়ম মানা হচ্ছে। নির্মাণ কার্যের দায়িত্বে রয়েছেন ঠিকাদার অরুণ শর্মা। আর এই ঘটনা নজরে আসতেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে অভিভাবক এবং সাথে এলাকাবাসী। বন্ধ করে দেওয়া হয় কাজ। তাদের দাবি সিডিউল দেখাতে হবে। সঠিক সামগ্রী দিয়ে নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। যদিও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহেদ দাবি করেছেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ শুরু করা হয়েছিল। ছাত্রদের আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো ব্যাপার নেই। জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন ঘটনা নিয়ে তদন্ত করা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা বাবর আলী বলেন, পুরনো একটি ঘর আছে যার নির্মাণকার্য এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। সেখানে ফাটল ধরে গেছে। নতুন যে ঘরটি হচ্ছে সেখানেও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ হচ্ছে। স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক কম আসছে।

বিক্ষোভকারী অভিভাবক ইরফান আলী বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ফোন করছি কিন্তু তিনি উত্তর দিচ্ছেন না। নতুন যে ঘর তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ নিয়ম না মেনে। অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। সঠিক ভাবে কাজ না হলে আমরা কাজ হতে দেব না। আরেক বিক্ষোভকারী অভিভাবক রবিউল আলম বলেন, কাজে দুর্নীতি হচ্ছে। তাই আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। প্রধান শিক্ষক আমাদের ফোন ধরছেন না।

সাহাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াজেদ বলেন, কাজ শুরুর সময় আমরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। তাদের দাবিমত নির্মাণ সামগ্রী আনা হয়েছিল। একই সাথে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে সেখানেও ফাটল ধরেছে। ইঞ্জিনিয়ার কে আসতে বলেছি এখনো আসেনি। ঠিকাদারকে আমি বলেছি সিডিউল টাঙিয়ে দিতে। ছাত্রদের আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো ব্যাপার নেই।

মালদা জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, সমগ্র ব্যাপারটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজন মতো অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সরকারি কাজে বারবার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দেখা যায় বরাদ্দকৃত টাকা সঠিক ভাবে ব্যবহার হচ্ছে না কাজে। এমনিতেই লকডাউনের ফলে স্কুল ছুটের সংখ্যা বেড়েছে। সেই জায়গা থেকে বাচ্চাদের বিদ্যালয়মুখী করতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। কিন্তু তার মাঝেই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে এই ধরনের দুর্নীতি। যা নিয়ে সরব হয়েছে এলাকাবাসী।

নদিয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের কাজে ফেরাচ্ছে পর্যদ, সুপ্রিম কোর্টে চাকরি বাতিল মামলার শুনানি ১৮ নভেম্বর

বাংলার ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, গোপন করা হচ্ছে তথ্য- মোদী সরকারকে চিঠি শুভেন্দু অধিকারীর