কলকাতা হাইকোর্টে প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের মামলায় বড় পর্যবেক্ষণ বিচারপতিদের। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ হল, প্রথামিক শিক্ষা পর্যদের নথি থেকেই দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে।
কলকাতা হাইকোর্টে প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের মামলায় বড় পর্যবেক্ষণ বিচারপতিদের। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ হল, প্রথামিক শিক্ষা পর্যদের নথি থেকেই দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি হয় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী আর বিচারপতি ঋণব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে। আদালত বলেছে, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ রয়েছে। পর্ষদের নথি থেকেই বোঝা যাচ্ছে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। যদিও এই মামলার শুনানি মঙ্গলবারও শেষ হয়নি।
চাকরিহারা শিক্ষকদের আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, 'যদি একজন বিচারপতি দেখেন টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়েছে, নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে, দুর্নীতি হয়েছে, তখন তিনি কী করবেন? চোখ বন্ধ করে থাকবেন?' বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর মন্তব্য, 'আদালত যদি দেখে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, প্রশাসনিক কর্তারা যুক্ত রয়েছে, রাজ্যের মন্ত্রীও যুক্ত রয়েছেন, তখন বিচারপতিরা কী করবেন? কিছুই করার নেই?'
চাকরিহারা শিক্ষকদের হয়ে আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র বলেন,যদি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দুর্নীতি করে থাকে, তবে আবার তাদেরই কেন নতুন প্যানেল তৈরি করতে বলা হল? আবার দুর্নীতি হতে পারে। তাঁর উদ্দেশ্যে পাল্টা বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর প্রশ্ন, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে কোথায় পাঠানো উচিৎ? উত্তরে আইনজীবী বলেন, অন্য কোনও সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হলে ঠিক হয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার।
২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন প্রায় এক লক্ষ ২৫ হাজার প্রার্থী। পর্ষদ ২০১৬ সাল থেকে তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে। চাকরি দেওয়া হয় ৪২ হাজার ৯৪৯ জনকে। কিন্তু ওই নিয়োগে একাধিক ত্রুটির অভিযোগ করে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। তারই ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ১৬ মে কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং চাকরিহারা শিক্ষকেরা। এর পরে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। তার পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছিল। যদিও শীর্ষ আদালত হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেই এই মামলা ফেরত পাঠায়।
