সংক্ষিপ্ত

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ৯ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জেরা করা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে রেজাল্ট জিরো বলেও জানিয়েছেন তিনি।

 

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে টানা ৯ ঘণ্টা ১৫ ধরে জেরা করে সিবিআই। সকাল ১১টা নাগাদ নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেন অভিষেক। তারপর থেকে তাঁকে তিন দফায় জেরা করা হয়। সিবিআই সূত্রের খবর ১১টা ১৫ মিনিট থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। তাঁকে তিন দফায় জেরা করা হয়। নিজাম প্যালেস থেকে ৮টা ৪০ মিনিটে বেরিয়ে এসে অভিষেক বলেন প্রায় ১০ ঘণ্টা সিবিআইএর মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। তবে দীর্ঘ জেরায় পরেও অভিষেকের চেহারায় কোনও বিধ্বস্ততার ছাপ ছিল না।

অভিষেক বলেন, দীর্ঘ জেরায় নির্যাস হল শূন্য। তিনি আগের মতই বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে তা জনসমক্ষে আনা হোক। অভিষেক বলেন, এদের লক্ষ্য হল ইডি সিবিআই দিয়ে অভিষেককে কী করে দমিয়ে রাখা যায়? তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি স্তব্ধ করে দেওয়া। তিনি আরও বলেন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতা করবেন না। তবে এদিনও অভিষেক ২৪ ঘণ্টা সময় না দেওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন শুক্রবার দুপুর আড়াইটে তিনি সিবিআই-এর হাজিরার চিঠি পান। তিনি বলেন তিনি আশা করেছিলেন তাঁকে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে নোটিশ দিলে ভাল হয়। কারণ তাঁর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। তা ফেলে রেখেই চলে আসেন। অভিষেক প্রশ্ন তোলেন যারা তদন্ত করছেন তারা কী তদন্ত করেছে। এখনও পর্যন্ত সারদা, নোবেল -এর তদন্তের কোনও রেজাল্ট দিতে পারেনি। অভিষেক আরও বলেন, তাঁকে যা জিজ্ঞাসা করা হয়েছে তার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি।

অভিষেক আরও বলেন তাঁকে কিছু লোকের নাম বলে জানতে চাওয়া হয়েছে তাদের সকলেই বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরে। তিনি নাম না করেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করেন। তিনি আরও বলেন, 'তাঁর গাড়ি চাপা দিয়ে লোক মেরে দেবে তাকে কেউ জিজ্ঞাসাবাদ করবে না। ' অভিষেক আরও বলেন, তিনি বিজেপি করেন না, তৃণমূল করেন- সেই কারণেই তাঁরে বারবার ডাকা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা থাকলে তাঁকে গ্রেফতার করা হোক। তাঁকে বারবার এভাবে ডাকতেও নিষেধ করেন অভিষেক। অভিষেক আরও বলেন, 'মরে গেলেও দিল্লির বশ্যতা স্বীকার করব না। পরশু দিন বাঁকুড়ায় যাব। আরও নতুন উদ্য়োগ নিয়ে জনসংযোগ যাত্রাকে বাধা দেওয়া যায় তারই পরিকল্পনা। কোনও রাজনৈতিক দলের নির্দেশেই এই কাজ হচ্ছে।'

অভিষেক এদিন বলেন, বিজেপি দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু তৃণমূল ব্যবস্থা নেয়। তিনি আরও বলেন, তৃণমূল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মত নেতাকে সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বিজেপি এজাতীয় কোনও কাজ করতে পারে। পাশাপাশি সিপিএমকেও নিশানা করেন। অভিষেক বলেন তাঁকে কুন্তল ঘোষের চিঠির জন্য তাঁকে সিবিআই তলব করেছে। কিন্তু সুদীপ্ত সেনের চিঠির ভিত্তিকে শুভেন্দু অধিকারী, হেমন্ত বিশ্বশর্মা-সহ একাধিক নেতার নাম নিয়েছে। কিন্তু সারদাকাণ্ডে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তিনি আরও বলেন তিনি তৃণমূল করেন বলেই তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে।

এদিন অনুব্রত ও তাঁর মেয়ের কথাও বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন আজ অনুব্রত কন্যা সুকন্যার ১৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি বেড়েছে বলে তাঁকে তিহার জেলে আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু অমিত শাহের পুত্র জয় শাহরে সম্পত্তি বেড়েছে পাঁচশো গুণ। তিনি বিশ্ব ভ্রমণ করছেন। তাঁকে ডাকা হচ্ছে না। অভিষেক আরও বলেন, তাঁরা তৃণমূল করেন বলেই তাঁদের জন্য নিয়ম আলাদ। জয় শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে তাই তার জন্য নিয়ম আলাদা বলেও অভিযোগ করেন অভিষেক।