সংক্ষিপ্ত

মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে আবার কর্মবিরতির পথে ডিএ আন্দোলনকারীরা। আগামী বৃহস্পতিবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তাঁরা।

 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রতিবাদে আবারও সুর চড়ালেন সরকারি কর্মীরা। আবারও এক দিনের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে তারা। আগামী ৬ এপ্রিল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাড্য জু়ড়ে যাবতীয় প্রশাসনক কাজ বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডিএ বা মহার্ঘ্য ভাতার দাবিতে আন্দোলনকারীরা। যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ ও সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ - এই দুটি সংগঠনই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের বাকি কর্মচারি সংগঠনগুলিকেও আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান হয়েছে।

বুধবার রেড রোডের কেন্দ্রী বিরোধী আন্দোলন মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশানা করেছিলেন ডিএ আন্দোলনকারীদের। বলেছিলেন, 'ডিএ ধর্নামঞ্চে যে চোর ডাকাতরা চিরকুটে চাকরি পেয়েছিল তারাই বসে রয়েছে। ' তারপরই তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে আমাকে জ্ঞান শুনতে হবে না। তিনি নিজের দলকে সমর্থন জানাতেই ধর্নায় বসেছেন। তারপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি কোনও বিচারকের নাম বলতে পারি না। কিন্তু যে কোনও রায় নিয়ে বলার অধিকার আমার রয়েছে।'

এখানেই শেষ করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন, তাঁর সরকার আইন মেনে সিদ্ধান্ত নেবে। তারপরই মমতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'সেদিন বলবেন না অন্যায় হয়েছে! জান রাখুন কন্ট্রোল আমারই হাতে।' মমতা কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরেই বলেন আন্দোলন করে যেটা করছে তাতে ক্ষতি হবে নিজেদেরই। এদিন পেনশনের কথাও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কেউ পেনশন দেন না। কিন্তু তিনি পেনশন বন্ধ করেননি। তিনি বলেন যারা চিরকুট দিয়ে ৩০০ টাকার চাকরিতে যোগ দিয়েছিল তারা ৫৫ হাজার টাকাও পেনশন পায়। তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ চাইছে পেনশন বন্ধ করে দিতে। কিন্তু তাঁর সরকার সেই পদক্ষেপ নেয়নি। বলেও জানিয়ে দেন তিনি। তবে যারা আন্দোলন করছে তাদের পেনশন বন্ধ করা যেতে পারে বলেও হুমকি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা অভিযোগ করে বলেন, 'যারা গণশক্তিতে কার করে তাদের প্রত্যেকের স্ত্রী শিক্ষিকা। সব চিরকূটে চারকি।' তারপরই মমতা বলেন, 'চিরকূটে চাকরি! পেনশন-বেতন নিয়ে আরও চাই?' এদিন মমতা বলেন রাজ্যের আর্থিক সমস্যা রয়েছে। এই দূরাবস্থা নিয়ে তিনি ১০৬ শতাংশ হারে ডিএ দিয়েছেন।তারপরেও কি আন্দোলনকারীদের চাওয়া থামছে না বলেও মমতা কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন কর্মীরা কথায় কথায় কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে। জনগণের টাকা নিয়ে কাজ বন্ধ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, বাম আমলে মাসের এক তারিখে মাইনে দেওয়া হত না এখন মাসের এক তারিখেই তিনি বেতন ও পেনশন দেন বলেও জানিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রতিবাদেই আগামী ৬ এপ্রিল রাজ্য সরকারি কর্মীদের পক্ষ থেকে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে আগেই সরব হয়েছিলেন রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশ। যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের পক্ষ থেকে তাপস চক্রবর্তী বলেন, তাঁরা দাবি আদায়ের জন্য লড়াই করেছেন। কিন্তু তাঁদের চোর ডাকাত বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে। এটা দুর্ভ্যাগ্যজনক বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। আন্দোলনকারী কর্মীদের পক্ষ থেকে মিছিলও বার করা হয়েছিল। এবার আবার তারা কর্মবিতরিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বকেয়া ডিএ-র দাবিতে এর আগে ২০ ও ২১ ফেব্রিয়ারি কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। গত ১০ মার্চ প্রশাসনিক ধর্মঘটেরও ডাক দেওয়া হয়েছিল। তবে যারা কাজে উপস্থিত ছিলেন না তাদের শোকজ করা হয়েছিল। কারণ জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল কারণ যাথাযথ না হলে প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এবার রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ করে তাই এখন দেখার।