সংক্ষিপ্ত
জলপাইগুড়ির ঘটনার পর কোনও মতেই আর ঝুঁকি নিতে চায়নি তাঁরা। আজই দুর্গাপুর পানাগড় শিল্পাঞ্চল লাগোয়া কসবার জঙ্গলে ঢুকে পড়া দাঁতাল হাতিকে ফেরাল বন দফতর।
মাধ্যমিকের পরীক্ষার প্রথম দিনের স্মৃতি এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে অর্জুনের গ্রামকে। হাতির হানায় মৃত্যু হয়ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। সেই যন্ত্রণা এখনও ভুলতে পারছে না জলপাইগুড়ি। ঘটনার যাতে পূণরাবৃত্তি না ঘটে সেই উদ্দেশ্যেই সতর্কতা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরীক্ষার্থীদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে বন দফতরেরও। জলপাইগুড়ির ঘটনার পর কোনও মতেই আর ঝুঁকি নিতে চায়নি তাঁরা। আজই দুর্গাপুর পানাগড় শিল্পাঞ্চল লাগোয়া কসবার জঙ্গলে ঢুকে পড়া দাঁতাল হাতিকে ফেরাল বন দফতর।
জানা যাচ্ছে দামোদর নদ পেরিয়ে বর্ধমানের কসবার জঙ্গলে ঢুকে পড়ে একটি পূর্ণবয়স্ক দাঁতাল হাতি। খবর পেতেই তড়িঘড়ি হাতিটিকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে দেয় বন দফতর। অবশেষে আজ ভোরেই ঘুমপাড়ানি গুলি করে কাবু করা হয় হাতিটিকে। বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে ঝাড়গ্রামের গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে তাঁকে।
প্রসঙ্গত, গতকালই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে হাতির হামলায় মৃত্যু হল পরীক্ষার্থীর। গজলডোবা সংলগ্ন মহারাজ ঘাট এলাকার ঘটনা। মৃত ছাত্রের নাম অর্জুন কুমার। পাচিরাম নাহাটা স্কুলের ছাত্র সে। সকালে বাবার সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রের দিকে যেতে গিয়েই বিপত্তি। জানা যাচ্ছে বাবার সঙ্গে বাইকে করে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল অর্জুন। বেলাকোবার কেবলপাড়া হাইস্কুলে ছিল তার পরীক্ষাকেন্দ্র। হঠাৎ গজলডোবা সংলগ্ন এলাকায় একটি হাতি তারা করে অর্জুনদের বাইকটিকে। পালাতে চেষ্টা করলেও বিশেষ লাভ হয়নি। হাতির পায়ে পিষ্ট হয় মারা যায় অর্জুন।
ঘটনাটি ঘটে সকাল ন'টা নাগাদ। মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর পেয়ে মৃত অর্জুনের বাবা মা ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে তাঁদের বাড়ি যান বনকর্মীরা ও এনজেপি থানার মিলনপল্লী ফাঁড়ির পুলিশ। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের উদাসীনতাই এই ঘটনার জন্য দায়ী। তাঁদের দাবি এর আগেও হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে গ্রামের অনেকের। মাঝেমধ্যেই গ্রামে হানা দেয় হাতি। তান্ডব চালায়। অনেকের বাড়ি ঘরও ভেঙেছে বলে দাবি করেন তাঁরা। এত ঘটনার পরও হেলদোল নেই বনদফতরের। হাতি তাড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমঙ্কী তাঁরা এও অভিযোগ করেন যে বন দফতরের আদিকারিকরা ঠিকমতো নজর রাখলে এমন ঘটনা ঘটত না। গোটা ঘটনা ঘিরে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে গ্রামে। এদিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা।
ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এদিন সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন এর থেকে মর্মান্তিক আর কিছু হতে পারে না। তবে ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে বিশেষ পদক্ষেপও নিলেন তিনি। জঙ্গলের রাস্তায় পড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে আসা পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন -
পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে মর্মান্তিক ঘটনা, হাতির পায়ে পিষ্ট হয় মৃত্যু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর