সংক্ষিপ্ত

প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। স্মৃতিচারণায় আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।

প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। স্মৃতিচারণায় আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।

আর কেউ বাম ব্রিগেডের মঞ্চে উঠে হাত নাড়বে না। কর্মী-সমর্থকদের জন্য তাঁর সেই উক্তি “এ লড়াই লড়তে হবে, এ লড়াই জিততে হবে।” বৃহস্পতিবার, সকাল ৮.২০ মিনিট নাগাদ পাম অ্যাভিনিউতে নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Former Chief Minister Buddhadeb Bhattacharjee)। এই প্রসঙ্গেই একান্ত সাক্ষাৎকারে এশিয়ানেট নিউজ বাংলার মুখোমুখি হলেন ত্রিপুরার (Tripura) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার (Manik Sarkar)।

প্রসঙ্গত, উত্তর কলকাতার (North Kolkata) শ্যামপুকুরে শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয় থেকে পাশ করে প্রেসিডেন্সিতে বাংলা নিয়ে স্নাতক। আর সেই ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে তাঁর যুক্ত হয়ে পড়া। তবে রাজনীতির বাইরে ক্রিকেট খুব ভালোবাসতেন। প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর জমতও দারুণ।

সিপিএম-এর (CPM) যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন বুদ্ধবাবু। সেই ১৯৭৭ সালে প্রথমবার কাশীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে জয়ী হন তিনি। এরপর ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দায়িত্বে ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আর ১৯৮৭ সালে, যাদবপুর (Jadavpur) কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।

এরপর সেই ১৯৯৯ সাল। উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে আসেন বুদ্ধবাবু। সেইসঙ্গে, সামলেছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরও। এরপর ২০০০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত রাজ্যের (West Bengal) মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। যিনি বরাবর বাংলায় শিল্পায়নের স্বপ্ন দেখেছেন। তাঁর শাসনকালে কৃষিকে ভিত্তি করে শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এক সফল রুপায়ণ দেখেছিল গোটা পশ্চিমবঙ্গ।

আর এই প্রসঙ্গেই এশিয়ানেট নিউজ বাংলার তরফ থেকে যোগাযোগ করা হয় ত্রিপুরা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সঙ্গে। একাধিকবার বিভিন্ন কর্মসূচিতে মঞ্চে তাদের দুজনকে পাশাপাশি দেখা গেছে। এই দুই মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যও চালিয়েছেন সফলভাবে।

সেই ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে বললেন, “আমি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর স্মৃতির প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তাঁর স্ত্রী, কন্যা এবং পরিবার পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। এটি একটি অধ্যায়ের অবসান। যুব আন্দোলন, কমিউনিস্ট আন্দোলন, বামপন্থী আন্দোলনে একটি শূন্যতা তৈরি হল।”

তাঁর কথায়, “বামফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী থাকাকালীন এবং মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর কীভাবে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সেই চেষ্টাই করে বরাবর করে গেছেন বুদ্ধবাবু। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশের সামনেই পথ দেখানোর প্রশ্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।”

আসলে আক্ষরিক অর্থেই তিনি যেন জননেতা ছিলেন। আট থেকে আশি সকলের কাছেই বুদ্ধবাবু ভীষণ প্রিয় একজন মানুষ ছিলেন। রাজনীতির উর্দ্ধে উঠে তিনি মানুষের চোখে ছিলেন একজন সৎ ব্যক্তিত্ব। তাঁর উপস্থিতি, জনতার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়া এবং বক্তব্য, কার্যত উদ্বেলিত করে তুলত বাম কর্মী-সমর্থকদের।

তরুণ প্রজন্মের কাছেও বুদ্ধবাবু ছিলেন বেশ জনপ্রিয়। সেই জননেতার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা রাজ্য। পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাট থেকে আর বেরোবে না সেই সাদা অ্যাম্বাসাডর। চলে গেলেন ‘কমরেড’ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।