সংক্ষিপ্ত
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ ব্যাঙ্কশাল আদালতে। দুই দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একই রেখায় তিনটি নাম এনে দিল ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। শুক্রবার রাতে হুগলি থেকে ধৃত যুব তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে চেয়ে ব্যাঙ্কশাল আদালতে শনিবার আবেদন করেছিল ইডি। সেই সময়ই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে কুন্তল, তাপস আর শান্তনু প্রত্যেকেই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত। সংস্থা জানিয়েছে, শান্তনুর কথাতেই কুন্তলকে টাকা দিয়েছিল তাপস। অর্থাৎ প্রত্যেকের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। যাদের মধ্যে দুই জন ইতিমধ্যেই জেলবন্দি। এদিন ইডির আবেদনে সাড়া দিয়ে শান্তনুকে ১৩ মার্চ অর্থাৎ দুই দিনের জন্য ইডির হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এদিন আদালতে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতির নেপথ্যে যদি কোনও বড় মাথা থেকে থাকে তাহলে কুন্তল আর শান্তনুর মাধ্যমেই তাদের সন্ধান পাওয়া যাবে। প্রমাণ হিসেবে ইডি আদালতে তাপসের বয়ানও তুলে ধরে। তাদের তরফে বলা হয়, ২০১৬ সালে একটি আবাসনে শান্তনুর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাপসের। শান্তনুর ওপর ভরসা করেই তাপস কুন্তলকে ১৯ কোটি টাকা দিয়েছিল। প্রভাবশালীদের সঙ্গে শান্তনু আর কুন্তলের যোগাযোগ রয়েছে বলেও মনে করছে ইডি।
ইডি দাবি করে তদন্তে জানা গিয়েয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে সরাসরি টাকা তুলত কুন্তল। আর তা দিয়ে দিয়ে শান্তনুর হাতে। ইডির সূত্রের খবর শান্তনুর বাড়ি থেকে ৭টি নাম উদ্ধার হয়েছে যারা স্কুলে চাকরি পেয়েছে। শনিবার ইডি আদালতে উপস্থিত হয়ে শান্তনুকে ১৪ দিনের হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। আদালত দুই দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে ইডি সূত্রের খবর শান্তনুর বাড়ি থেকে চাকরি প্রার্থীদের একটি নামের তালিকা ও অ্যাডমিট কার্ডও উদ্ধার হয়েছে। তবে শান্তনু প্রভাবশালী কিনা তা নিয়ে এদিন আদালতে সওয়াল করেননি ইডি। তবে আদালতে ইডি দাবি করেছে শান্তনুর প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। যারমধ্যে স্ত্রীর নামেও একটি সংস্থা তৈরি করা হয়েছিল। তাই তাকে জেরার প্রয়োজন রয়েছে। যদিও শান্তনুর আইনজীবী জানিয়েছিলেন, শান্তনু পালিয়ে যাবে না, তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করবে। তিনি জামিনেরও আবেদন জানান। কিন্তু তা নাকচ করে দেয় আদালত।
হুগলি জেলা পরিষদে স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু। তৃণমূল কংগ্রেস নেতাও। তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যায় রাজ্য তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা রয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই তদন্তকারীরা শান্তনুর সম্পত্তির একটা লম্বা তালিকা হাতে পেয়েছে। সবই খতিয়ে দেখছে। তবে এদিন শান্তনুর শাশুড়িকে কুন্তলের কথাও জানতে চাওয়া হয়। কুন্তলের সঙ্গে শান্তনুর যোগাযোগ ছিল কিনা তাও জানতে চাওয়া হয়। তিনি অবশ্য কুন্তলের কথা মনেই করতে পারেননি। তিনি বলেন কুন্তলকে তিনি দেখেননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের সঙ্গে যখন বিয়ে হয়েছিল তখন শান্তনুর একটা মোবাইলের দোকান ছিল। ওদের একটি বনেদি বাড়ি রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।